জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাট প্রতিনিধি : ৬ বছর আগে স্নাতক পাশ করেছেন জাহিদ হোসেন বসুনিয়া। এরপরেই চাকুরি নামে সোনার হরিণের পিছনে ছোটা। দির্ঘদিন চাকরির চেষ্টা করে যখন কোন কুল কিনারা পাচ্ছিলেন না ঠিক তখনি নিজে কিছু করার সংকল্প করেন জাহিদ। শুরু করেন স্ট্রবেরি চাষ। আর এতেই অল্পদিনের মধ্যেই ব্যাপক সারা ফেলেন লালমনিরহাটের স্নাতক পাশ করা বেকার জাহিদ বসুনিয়া।
লালমনিরহাট জেলার মহেন্দ্র নগর ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ডের মনোরম গ্রামের বাসিন্দা জাহিদ বসুনিয়া। সাধারণ ইতিহাসে স্নাতক পাস করে, চাকরির সন্ধানে না গিয়ে নিজেই ২০১৯ সালে পুরোপুরিভাবে বিভিন্ন ধরনের ফলনে কৃষি কাজ শুরু করেন।
২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রথম বছরই প্রথমবারের মতো স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন। ওই বছরই ১৮ হাজার চারা করে প্রায় তিনবিঘা জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করেন। এটি এখন (২০২৫) এ দের বিঘায় চাষ করছেন।
প্রতিদিন মনকামন স্ট্রবেরি বিক্রি করেছেন জাহিদ। তিনি আশা করছেন আগামীতে আরো অনেক অর্থ আসবে এই জমি থেকে।
জাহিদ বসুনিয়া জানান, ২৩ সালে বগুড়া জেলা সদর থেকে টিস্যু কালচারের স্ট্রবেরি চারা নিয়ে এসে ডিসেম্বরে জমিতে চারাগুলি রোপণ করেন। সব মিলিয়ে প্রায় এখন ১০হাজার গাছ রয়েছে। প্রতিবছর মার্চ মাসের প্রথম দিকে এর ফল সংগ্রহ শুরু হয়েছে।
ইতোমধ্যে এই গাছগুলি থেকে প্রায় দুইদিনে ৭০ কেজির মত স্ট্রবেরি বিক্রি করেছেন। প্রতি কেজি ফল পাইকারি ৪৫০ থেকে ৫৫০ দামে বিক্রি করছি। রংপুর, কুড়িগ্রাম ও জেলা সদরের এলাকার লোকজন কিনে নিচ্ছেন। সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে এগুলি চাষ করেছেন তাই লোকজন অনেক বেশি আগ্রহ নিয়ে ফল কিনছে বলে জানা যায়।আগামী ১মাস পর্যন্ত গাছগুলি থেকে নিয়মিত ভাবে ফল পাওয়া যাবে। এরপর যদি গাছে বাড়তি যত্ন এবং ওপরে ছায়া দেওয়ার জন্য শেড তৈরি করে দেওয়া হয় তবে আরও ২মাস ফল পাওয়া যাবে। এ জন্য ফলগুলো বিক্রির জন্য তিনি কিছু পন্থা অবলম্বন করেন। তিনি তাঁর স্ট্রবেরি বাগানের রক্তের মতো লাল রঙের ফলের ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয আপলোড করে দেন। পরবর্তিতে ক্রেতারা এই ছবিগুলো দেখেই কৃষক জাহিদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। তখন থেকেই তাঁর ব্যবসা অগ্রসর হতে শুরু করেন।
তিনি আরও জানান লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতা পেলে ফলন বৃদ্ধিসহ চাহিদা আরো বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবো ইন শাহ আল্লাহ।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারন অফিসের জেলা প্রশিক্ষন অফিসার কৃষিবিদ শাহ আলম মিয়া জানান, জাহিদ বসুনিয়া একজন সফল কৃষক। চাকুরি না পেয়ে নিজে স্বাবলম্বী হতে তার সামান্য জমিতে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন। এতেই সাফল্য পেয়ে যান তিনি। হয়ে ওঠেন স্বাবলম্বী। কার এই সাফল্য দেখে অনেক বেকার যুবক এই স্ট্রবেরি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।