হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরে পদ্মা নদীতে অবৈধ বালুবাহী বলগেটের ধাক্কায় মাছ ধরার ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ওই ট্রলারে থাকা দুই জেলে গুরুত্বর আহত হয়েছেন। তাদের নদীতে ভেসে থাকতে দেখে অন্য জেলেরা উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করে। মঙ্গলবার (০৪ মার্চ) ভোররাতের (আনুমানিক চারটা) দিকে পদ্মা নদীর ফরিদপুরের কবিরপুর চর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন- মানিকগঞ্জের বারিক ফকিরের ছেলে ইউসুফ ফকির (৩০) ও মাসুদ রানার ছেলে মজিদ (২৫)। আহতদের স্বজনেরা জানান, ওই দুই জেলে পদ্মা নদীর কবিরপুর এলাকায় মাছ ধরছিলেন। এসময় বালুবাহী একটি বলগেট ট্রলারটিকে সজোরে আঘাত করে, এতে নৌকাটি দুমড়ে-মুচড়ে নদীতে তলিয়ে যায়। এসময় ওই দুই জেলে পানিতে ছিটকে পড়ে সোলার কার্টুন ধরে ভাসতে থাকেন। পরে অন্য জেলেরা তাদের দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্যে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
কোতয়ালী নৌ পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ নাসিম আহমেদ জানান, খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে, আঘাতকারী বলগেটটি চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, পদ্মায় দীর্ঘদিন ধরে একাধিক ড্রেজারের মাধ্যমে কবিরপুরসহ আশেপাশের এলাকায় অবৈধভাবে বালু তুলে তা বলগেটের মাধ্যমে নেয়া হচ্ছে। ওই চক্র প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ ভয়ে মুখ খুলতে পারেন না। রাত নামলেই পদ্মা নদীর দূর্গম এলাকাগুলোতে বাড়ে অবৈধ বালু উত্তোলন ও সেই বালু বহনকারী বলগেটের দৌরাত্ম। বেপরোয়া বলগেটের আঘাতে প্রায়শ ঘটছে দূর্ঘটনা।
আরেকটি সূত্র জানান, সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর বালুবাহী বলগেটও এই রুট দিয়ে রাতে চলাচল করে। দূরের রুট হওয়ায় রাতে ওই বলগেটগুলো অনিয়মতান্ত্রিকভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়াই বেপরোয়াভাবে নদীতে চলাচল করছে। এসব অবৈধ বলগেট চলাচল বন্ধের দাবী স্থানীয় মৎস্য আরোহনকারী ও নৌযান মালিকসহ স্থানীয়দের।
এ বিষয়ে ফরিদপুর নৌ পুলিশের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, অপরাধীদের দমনে নৌ পুলিশ সর্বদাই তৎপর রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ জলসীমার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে একটি স্পিডবোট ব্যবহার করতে হয়, এতে ফাঁক ফোকর দিয়ে কখনো কখনো এমন ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কিছুটা ব্যাত্যয় ঘটে। তিনি নদীতে টহল বৃদ্ধি করে সব ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে দাবী করেন।