পাবনার সুজানগরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের রুমে তার সামনেই বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মীর হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমিরসহ উপজেলা জামায়াতের ৪ নেতা।
গতকাল সোমবার এ ঘটনা ঘটলেও আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি।
আহত ৪ নেতা হলেন উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ফারুক ই আজম, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী টুটুল বিশ্বাস, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি ওয়ালিউল্লাহ বিশ্বাস, সাবেক কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কোনো একটি কাজে জামায়াতের ওই ৪ নেতা ইউএনও’র অফিসে যান । কিন্ত ইউএনও অন্য একটি কাজে ব্যস্ত থাকায় জামায়াত নেতারা অফিসে বসে অপেক্ষা করতে থাকেন। এ সময় উপজেলা বিএনপির সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মজিবর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মীও ইউএনও’র কাছে কোনো একটি কাজে গেলে জামায়াত নেতাদের দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, এরা কেন এখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকে। এ কথা বলেই বিএনপি নেতারা ইউএনও’র রুম থেকে বের হয়ে আরও কয়েকজনকে ডেকে আনেন। এরপরই মজিবুর রহমান, বাবু ও মানিকসহ ৩০/৪০ জন ইউএনও’র কক্ষে ঢুকে ওই জামায়াত নেতাদের সঙ্গে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে তাদের কিল, ঘুষি, লাথিসহ বেদম মারধর করেন। এতে জামায়াত নেতারা গুরুতর আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।
এদিকে জামায়াত নেতাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনায় উপজেলা জুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ঘটনার পর জামায়াতের উপজেলা আমির কেএম হেসাব উদ্দিনসহ কয়েক শ’ নেতাকর্মী ইউএনও অফিসে ছুটে আসেন এবং ঘটনার প্রতিবাদ জানান। এ সময় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয় সেখানে। খবর পেয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।
এরপরই উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম বিশ্বাস, সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফ, যুবদলের আহবায়ক সিদ্দিকুর রহমান পিন্টুসহ শীর্ষ নেতারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বিষয়টি নিয়ে ইউএনও’র সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বৈঠক চলে। পরে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হলে পরিস্তিতি শান্ত হয়।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ইউএনও মীর রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি দু;খজনক। যেহেতু আমার কক্ষেই ঘটনাটি ঘটেছে। কাজেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম বিশ্বাস, সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফ ও যুবদলের আহবায়ক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘কোনো সন্ত্রাসী আমাদের দলের হতে পারে না। আমরা বলেছি, যারা অপরাধী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।’
এদিকে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা আব্দুল গাফ্ফার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আমরা সাংগঠনিকভাবে কর্মসূচি দেব।’
সুজানগর থানার ওসি মজিবুর ররহমান জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আহতরা এখনো মামলা করতে আসেননি।
তারা থানায় এসে মামলা করতে চাইলেই মামলা নেওয়া হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।