শিরোনাম
◈ তৃতীয় ধাপে প্রাথমিকে নির্বাচিত ৬৫৩১ শিক্ষকের যোগদানের তারিখ ঘোষণা ◈ সংশোধিত এডিপি অনুমোদন, ব্যয় কমল ৪৯ হাজার কোটি টাকা ◈ বাংলাদেশে প্রতিশোধমূলক সহিংসতা তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে জাতিসংঘের প্রতিবেদন: ফলকার টুর্ক ◈ রমজানের শুভেচ্ছা বার্তায় যা বললেন ট্রাম্প ◈ সাংবাদিক জিল্লুর রহমানের অভিযোগের জবাব দিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ ◈ নুরুল হক নুরের নতুন দলে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গ, যা বলল গণ অধিকার পরিষদ ◈ কমেছে বৈদেশিক বিনিয়োগ, অভ্যন্তরীণ সমস্যাকেই দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা ◈ মজুদকৃত প্রায় ১২ হাজার লিটার সয়াবিন তেল জব্দ ◈ ট্রাম্পের ২৯ মিলিয়ন ডলার নিয়ে করা দাবি সত্য নয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ◈ কারও লাশ যেন বেওয়ারিশ হিসেবে না থাকে: প্রধান উপদেষ্টা (ভিডিও)

প্রকাশিত : ০২ মার্চ, ২০২৫, ০৯:৪০ রাত
আপডেট : ০৩ মার্চ, ২০২৫, ১১:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

৫ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় চিকিৎসক মাত্র দুজন

মোঃ জালাল উদ্দিন, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি : মৌলভীবাজার জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে কুলাউড়া উপজেলা সর্ববৃহৎ। এই উপজেলার প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট থাকায় কোনোমতে জোড়াতালি দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। এ কারণে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

এদিকে সাধারণ রোগীদের সেবা পেতে  দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। হাসপাতালের একমাত্র শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আবু বকর নাসের রাশু হাসপাতালে কর্মরত থাকলেও তিনি সপ্তাহে দুই একদিন গিয়ে শুধু হাজিরা দিয়ে চলে আসেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশু রোগী।

তবে হাসপাতালে আসা শিশু রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ জাকির হোসেন তাঁর কক্ষে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে হাসপাতালে মাত্র দুটি কক্ষে মেডিক্যাল অফিসাররা রোগী দেখছেন। যে কয়জন মেডিক্যাল অফিসার প্রতিদিন রাতে ডিউটি করেন তারা আবার পরের দিন হাসপাতালে বর্হিঃবিভাগে সাধারণ রোগীও দেখছেন। এতে মেডিক্যাল অফিসারদের দায়িত্ব পালনে নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে বেশি কর্মঘণ্টা ব্যয় করতে হচ্ছে।

পর্যাপ্ত মেডিক্যাল অফিসার না থাকায় সেকমো, ব্রাদার ও ফার্মাসিস্ট দিয়ে রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

রোগীদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে উন্নত পরামর্শের জন্য প্রয়োজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের। কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হাসপাতালে না থেকে প্রেষণে অন্যত্র থাকায় উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। মেডিক্যাল অফিসাররা রোগীদের জেলা কিংবা বিভাগীয় শহরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন। এতে রোগী ও স্বজনদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, হাসপাতাল ও ১৩টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ মঞ্জুরীকৃত ৩৯টি চিকিৎসক পদের বিপরীতে আছেন মাত্র ২ জন। বাকি ৩৭ পদ শূন্য রয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিসৎসক ১০ জনের মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ৩ জন। বাকি চিকিৎসক প্রেষণে অন্যত্র রয়েছেন।

উপজেলায় ২১টি পদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ জাকির  হোসেন, আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. সারমিন ফারহানা জেরিন ও মেডিক্যাল অফিসার ডা. মোহনা আক্তার দায়িত্বরত রয়েছেন।

কনসালটেন্ট ৬ জনের মধ্যে ৩ জন কুলাউড়ায় কর্মরত আছেন। প্রেষণে থাকা কনসালটেন্টদের মধ্যে জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারী) ডা. মোঃ সাদেকুল আলম ও জুনিয়র কনসালটেন্ট অর্থোপেডিক্স (সার্জারী) ডা. মোহাম্মদ মাসউদুর রহমান প্রায় আট মাস ধরে প্রেষণে নিজেদের স্বার্থের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে কর্মরত আছেন।

চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ইকবাল বাহার সপ্তাহে রবি ও বৃহস্পতিবার দায়িত্ব পালন করছেন কুলাউড়ায় আর বাকি ৪ দিন সিলেট শামছুদ্দিন হাসপাতালে। শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আবু বকর নাসের রাশু হাসপাতালে কর্মরত থাকলেও তিনি হাসপাতালে গিয়ে শুধু হাজিরা দিয়ে চলে আসেন।

এদিকে গাইনী চিকিৎসক না থাকায় জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেস্থিসিয়া) ডা. আমিনুল ইসলাম গত দুই বছর ধরে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছেন। জুনিয়র কনসালটেন্ট (কার্ডিওলজী) ডা. মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ সপ্তাহে দুই-তিন রোগী দেখছেন। এছাড়া হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন), গাইনী, চক্ষু, আরএমও, দুইজন মেডিক্যাল অফিসার, এমও (আয়ূর্বেদিক), ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১৬জন মেডিক্যাল অফিসারের পদ শূন্য রয়েছে। 

দ্রুত গতিতে চিকিৎসক সংকট ও সমস্যা সমাধানের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের প্রেষণ আদেশ বাতিল ও নতুন চিকিৎসক নিয়োগের দাবি জানান ভুক্তভোগীসহ কুলাউড়ার সচেতনমহল।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ জাকির হোসেন বলেন, চিকিৎসক সংকটে থাকলেও ভর্তি রোগী ও আগত রোগীদের আন্তরিকভাবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। পর্যাপ্ত চিকিৎসক পদায়ন করলে রোগীদের আরো বেশি সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।

মৌলভীবাজার জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোঃ মামুনুর রহমান বলেন, কুলাউড়াসহ ৭ উপজেলা হাসপাতালের চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। প্রয়োজনে আবারো চিঠি দেওয়া হবে। আর প্রেষণে থাকা চিকিৎসকদের বিষয়ে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকে অবগত করা হয়েছে, তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়