ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে প্রবাসীর গাড়ি ব্যারিকেড দিয়ে সর্বস্ব লুটে নিয়েছে সংঘবদ্ধ ডাকাত দল। বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ছয়টায় মহাসড়কের ফালগুনকরা দীঘি এলাকায় চট্টগ্রামমুখী লেনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থানার উত্তর সোনাপাহাড় গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে কুয়েত প্রবাসী নাইমুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৮-১০ জন অস্ত্রধারী ডাকাতের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। দুপুরে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন থানার পরিদর্শক তদন্ত গুলজার আহমেদ।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, “কুয়েত থেকে এসে প্রবাসী নাইমুল ইসলাম বুধবার রাত ১১টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। সেখানে প্রয়োজনীয় কাজ শেষে ভাড়া করা নোহা মাইক্রোবাসযোগে (চট্টমেট্রো-চ-১১-২৭৮৬) তিনটি কার্টুন, একটি হ্যান্ড লাগেজ ও একটি হ্যান্ডব্যাগ নিয়ে চট্টগ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা করেন। গাড়িতে তার কয়েকজন আত্মীয়স্বজন ছিলেন। পথিমধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ছয়টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফালগুনকরা দীঘি এলাকায় ৮-১০ জন সংঘবদ্ধ ডাকাত পিকআপ গাড়িযোগে আসা কুয়েত প্রবাসীর গাড়িকে গতিরোধ করে। একপর্যায়ে ডাকাত দলের হাতে থাকা ধারালো রামদা, চাপাতি, কিরিচ ও ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে প্রবাসীর গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর করে।
ডাকাতরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে গাড়ির দরজা খুলে সবাইকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তিনটি কার্টন, একটি হ্যান্ডলাগেজ, একটি হ্যান্ডব্যাগ, নগদ ২১ হাজার ২৫০ টাকা জোরপূর্বক নিয়ে ছিনিয়ে নিয়ে পিকআপ গাড়ি ভর্তি করে দ্রুত দক্ষিণ দিকে চলে যায়। ডাকাত দল আনুমানিক ৭ লাখ ৭৬ হাজার ২৫০ টাকার মালামাল লুটে নিয়েছে। পরবর্তীতে কুয়েত প্রবাসীর গাড়িতে থাকা নুরুল ইসলাম তাৎক্ষণিক জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিলে মিয়াবাজার হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।”
কুয়েত প্রবাসী নাইমুল ইসলাম বলেন, রাত সাড়ে ১২টায় এয়ারপোর্ট থেকে বাবা, ভাই ও ভগ্নিপতিসহ গাড়ি নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা করি। ভোররাত সাড়ে তিনটায় মেঘনা এলাকায় তাজ হোটেলে সবাই খাবার শেষে যাত্রা শুরুর কিছুক্ষণ পর সংঘবদ্ধ ডাকাতরা কয়েকবার আমাদের গাড়িটি থামানোর সংকেত দেয়। কিন্তু আমাদের গাড়িটি না থামানোয় ফালগুনকরা এলাকায় গতিরোধ করে। পরে হামলা চালিয়ে ডাকাতরা সর্বস্ব লুটে নিয়ে যায়।
প্রবাসীদের জীবন ও মালামাল রক্ষার্থে দেশের সব মহাসড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদারের দাবি জানান তিনি।
আবদুল হান্নান, কামরুল ইসলাম ও ইউসুফ মিয়াসহ বেশ কয়েকজন চালক বলেন, প্রবাসীদের বহনকারী গাড়িগুলো মেঘনা এলাকার হোটেলে খেতে দাঁড়ায়। এ সময় সংঘবদ্ধ ডাকাতরা টার্গেট করেই ডাকাতি করে। এতে অনেকের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়।
চৌদ্দগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গুলজার আহমেদ বলেন, ‘ভুক্তভোগী প্রবাসী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।’ উৎস: আমার দেশ।