ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আগানগর এলাকায় সিমা বেগম নামে ৪০ বছরের এক নারী নিহতের ঘটনা নতুন মোড় নিয়েছে। নিহতের স্বামী আক্তার হোসেন বলছেন, তার স্ত্রী ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে পুলিশ দাবি করছে, পরকীয়ার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ইতোমধ্যে ঘটনায় জড়িত ইমাম হোসেনকে (২০) আটক করেছে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় সীমা নামে ওই নারীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়।
স্থানীয়রা দাবি করছেন, নিহত সিমা বেগম ও আটক ইমাম হোসেনের মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। প্রেমিক ইমাম কেরানীগঞ্জের আগানগরের আমবাগিচা বৌ বাজার এলাকায় ভাড়া থাকেন। তার প্রেমিকা সীমা আক্তার আগানগর ছোট মসজিদ এলাকায় ভাড়া থাকেন। পরকীয়া সম্পর্কের জের ধরে আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় সীমা ইমামের ভাড়া বাড়িতে দেখা করতে আসেন। এ সময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ইমাম সীমাকে কুপিয়ে জখম করে। তখন সীমা চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন ইমামকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
সীমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা স্বামী আক্তার হোসেন বলেন, ‘আমি কাজে ছিলাম। ঘটনার খবর পেয়ে ওই বাসার দিকে রওনা হয়। যে বাসায় ঘটনাটি ঘটেছে সেটি আমার বাসা থেকে ৩-৪ মিনিট দূরে। সেখানে গিয়ে আমার স্ত্রীকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে আশপাশের লোকজন আমাকে জানায়— ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। পরে ওই রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক আমার স্ত্রীকে মৃত ঘোষণা করেন।’
পরকীয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ইমাম নামে কাউকে চিনি না। আমার স্ত্রী পরকীয়া করত এমন বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি এখন পর্যন্ত জানি এটা ছিনতাইয়ের ঘটনা। ছিনতাইকারী আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছে। আমার মেয়েকে কোচিং থেকে নিয়ে ফেরার পথে এই ঘটনা ঘটেছে। আমার ১৬ বছরের একটি ছেলে, ১২ বছরের একটি ছেলে ও সাত বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। আমার স্ত্রীর মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখমের চিহ্ন রয়েছে।’
এ বিষয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সিমা আক্তার হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ছিনতাইয়ের ঘটনা নয়। নিহত সীমা আক্তারের সঙ্গে ইমাম হোসেন নামে ওই যুবকের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে।’
তিনি আরও জানান, ‘নিহত সীমা সন্ধ্যায় তার পরকীয়া প্রেমিকের বাসায় যান। সেখানে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ইমাম হোসেন তাকে কুপিয়ে জখম করে। পরে অভিযুক্তকে লোকজন ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। বর্তমানে ইমাম পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। আটক যুবকের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশনে। তদন্ত করে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’ উৎস: ঢাকা পোষ্ট।