শিরোনাম
◈ আজ থেকে সারা দেশে শুরু ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ ◈ শক্তিশালী পাসপোর্ট সূচকে চার ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ ◈ প্রতিবাদ সমাবেশে উত্তাল গাজীপুর, আ. লীগকে দ্রুত নিষিদ্ধের দাবি (ভিডিও) ◈ গাজীপুরে হামলায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে বিপুল অর্থের বিনিময়ে বড় ষড়যন্ত্র হচ্ছে, জড়িত ভারতের মিডিয়া: প্রেস সচিব ◈ ফার্মগেটে ফুটপাতের একটি দোকানের কালো ব্যাগে বোমা সদৃশ বস্তু, ঘিরে রেখেছে পুলিশ ◈ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে গতিসীমা না মানলে ভিডিও দেখে মামলা ◈ অযত্ন-অবহেলা ও খাদ্যসংকটে স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ছে সাফারি পার্কের প্রাণীগুলো, ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ◈ আল ফায়হার বিরুদ্ধে রোনালদোর আল নাসরের দাপুটে জয় ◈ কলকাতায় আশ্রয় নেয়া আওয়ামী লীগ কর্মীদের সময় যাচ্ছে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায়

প্রকাশিত : ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০২:৩০ দুপুর
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৩:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

হরিরামপুরের ৬০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই খেলার মাঠ, খেলাধুলা বঞ্চিত শিশুরা

শুভংকর পোদ্দার, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি : মঙ্গলবার। দুপুর সাড়ে ১২টা। পদ্মা নদীর পাড়ে খেলাধুলা করছে ২৫-৩০ জন শিশু। গায়ে তাদের সবার রয়েছে স্কুলড্রেস। দেখে বোঝা গেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এরা। পাশে দাঁড়িয়ে আছে দুইজন পুরুষ, একজন নারী। জানতে চাইলে তারা জানান, শিশুরা সবাই ১৭নং কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। আমরা তিনজন শিক্ষক। বিদ্যালয়ের নিজস্ব কোনো খেলার মাঠ নেই। সামনে আন্ত:ইউনিয়ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। অনুশীলন করাতে শিক্ষার্থীদের নদীরপাড়ে এনেছি আমরা।

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের পদ্মাপাড়ে অবস্থিত বিদ্যালয়টি। নদীপাড় থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব মাত্র ৩০০ মিটার। বিদ্যালয়ে একটি একতলা পাকা ভবন এবং একটি টিনশেড ভবন রয়েছে। এর বাইরে একটুও জায়গা নেই।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন মোল্লা বলেন, তিনদিন পরে আন্ত:ইউনিয়ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। বিদ্যালয়ে জায়গা না থাকায় অনুশীলন করাতে শিশুদের পদ্মা পাড়ে নিয়ে আসতে হয়েছে। বিদ্যালয়ে মোট ১০৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। জায়গার অভাবে প্রাত্যহিক সমাবেশও করতে হয় বারান্দায়। বিদ্যালয়ের আশেপাশে মাঠ করার মতো জায়গা রয়েছে। যদি কেউ বিদ্যালয়ে জমি দান করে বা মাঠ করে দেয় তাহলেই শিশুদের এই সমস্যা দূর হতে পারে।

তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রবিউল বলেন, ‘আমাদের স্কুলে খেলার জায়গা নেই। তাই পদ্মা পাড়ে খেলতে এসেছি।’ চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সোয়েবা জামান বলেন, ‘স্কুলে এসে খেলতে পারি না। আমাদের এলাকায় খেলার জন্যও কোনো মাঠ নেই। স্কুল সময়ের বাইরে আমরা একটি কাঠ বাগানে খেলাধুলা করি। একটা মাঠ হলে আমরা ভালো মতো খেলাধুলা করতে পারবো।’

এই বিদ্যালয়ের মতো হরিরামপুর উপজেলার ৬০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই খেলার মাঠ। সেইসব বিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য যেমন খেলাধুলা করতে পারছে না, তেমনি বিদ্যালয়ের প্রাত্যহিক সমাবেশ ও সহশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাও সমস্যা হচ্ছে। কিছু বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাও করতে হয় অন্য বিদ্যালয়ের মাঠে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় মোট ৯০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে খেলার মাঠ রয়েছে ৩০টিতে। চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ২২টি বিদ্যালয়ে খেলাধুলার জায়গা করতে মাটি ভরাটের বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেয়া হলেও এখনো কোনো বরাদ্দ মেলেনি।

উপজেলার ডাকরখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও খেলার মাঠ নেই। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সাঈদ হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য অন্য বিদ্যালয়ের মাঠে যেতে হয়। সরকারিভাবে যদি একটি মাঠের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে শিশুদের খেলাধুলার সমস্যা দূর হবে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী সাইফুল ইসলাম বলেন, উপজেলার ৯০টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩০টি বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ রয়েছে। বাকিগুলোর মধ্যে ২২টি বিদ্যালয়ে খেলাধুলার ব্যবস্থা করতে মাটি ভরাটের জন্য বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে, এখনো কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনুর আক্তার বলেন, আমি হরিরামপুরে নতুন এসেছি। বিষয়টি জানা নেই। তবে, কোনোভাবে যদি বিদ্যালয়ের মাঠ করার সুযোগ থাকে তাহলে অবশ্যই করবো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়