আইরিন হক, বেনাপোল (যশোর) : তাজা ফল আমদানিতে অতিরিক্ত সম্পুরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে বাংলাদেশ ফ্রেস ফুটস ইমপোর্টস এ্যাসোসিয়েশনের ডাকা ধর্মঘটে আজ থেকে দুই দিনের বন্ধের কবলে পড়েছে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ফল আমদানি। আমদানি বন্ধ থাকায় সরকারের রাজস্ব আয়ে বড় ধরনের ধাক্কা পড়েছে বলে মনে করছে বানিজ্য সংশিষ্টরা। শুল্ককর বৃদ্ধিতে বাজারে কেজিতে ফলের দাম বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত। আমদানি একেবারে বন্ধ থাকলে সামনের দিনে ফলের বাজার আরো উধ্বগতীর আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে রমজানের ঠিক আগ মুহূর্তে ফলের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারন ক্রেতারা।
জানা যায়, ভারত থেকে যে সকল খাদ্য দ্রব আমদানি হয় এর মধ্যে বড় একটি অংশ রয়েছে আফেল, আঙুর, কমলা, মালটা ও আঙুর সহ বিভিন্ন প্রকারের তাজা ফল। ফল আমদানির ক্ষেত্রে আগে ২০ শতাংশ সম্পুরোক শুল্ক আদায় করতো কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এতে প্রতিকেজি ফলে সরকারকে রাজস্ব দিতে হতো ১০১ টাকা। হঠাৎ করেই গত ০৯ জানুয়ারী জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআরের নতুন এক নির্দেশনায় ফল আমদানির উপর সম্পুরোক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ নির্ধারন করে। এতে বর্তমানে কেজিতে শুল্ককর ১৫ টাকা বেড়ে দাড়িয়েছে ১১৬ টাকা। ফলে আমদানি খরচ বাড়ায় দাম বাড়িয়েছে খোলা বাজারে বিক্রেতারা।
রমজানের ঠিক আগমুহূর্তে ফলের দাম বৃদ্ধিতে নিম্ন আয়ের মানুষের ফল ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। বর্ধিত সম্পুরোক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে গত ২৯ জানুয়ারী বাংলাদেশ ফ্রেস ফুটস ইমপোর্ট এ্যাসোসিয়েশন সংবাদ সম্মেলন করে আল্টিমেটাম দেয় আগামী ০৩ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে বাড়তি শুল্ককর তুলে না নেওয়া হলে ৪ ফেব্রুয়ারী থেকে দেশের সব স্থলবন্দর,নৌবন্দর দিয়ে তাজাফল আমদানি বন্ধ রাখা হবে। কিন্তু এ পর্যন্ত রাজস্ব বোর্ড বর্ধিত সম্পুরোক শুল্ক প্রত্যাহারে কোন সিদ্ধান্ত না জানানোয় আমদানি কারকরা বাধ্য হয়ে ফল আমদানি বন্ধ রাখে। আপাতত ৪ ও ৫ ফ্রেব্রুয়ারী দুই দিন বন্ধ থাকবে ফল আমদানি বন্ধ থাকবে। এর মধ্যে বর্ধিত শুল্ককর তুলে না নিলে পরবর্তীতে আবারো কর্মসুচী দিবে বাংলাদেশ ফ্রেস ফুটস ইমপোর্টস এ্যাসোসিয়েশন। এদিকে শুল্ককর বৃদ্ধির কারনে বর্তমানে খুরচা বাজারে এক কেজি আফেল প্রকার ভেদে ৩০০-৩৬০, মালটা কেজি ৩০০ -৩২০, কমলা ২৫০-৩০০ এবং আঙুর প্রকার ভেদে ৪৫০- ৫০০ টাকা,ডালিম ৪৫০-৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বেনাপোল বন্দর ওয়ারহাউজ সুপারেন্টেন্ড তানজিবুর রহমান জানান, ফল ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ফল আমদানি বন্ধ থাকায় রাজস্ব আয় কুমেছে। ধর্মঘটে দুই দিন ফল আমদানি বন্ধে বেনাপোল বন্দর থেকে সরকার প্রায় একশো কোটি টাকা টাকার রাজস্ব হারাবে।।
ফল আমদানিকারক শেখ মেহেদী হাসান জানান, এ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফল আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে কোন ফল আমদানি তারা করছেন না।
ফল বিক্রেতা করিম জানান, মোকাম থেকে বেশি দামে ফল কিনতে হওয়ায় বেশিতে বিক্রি করতে হচ্ছে।
সাধারন ফল ক্রেতা রহমত জানান, রমজানের আগে দাম বৃদ্ধি ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। এ সিদ্ধান্ত নিম্ন আয়ের মানুষের উপর চাপ বেশি পড়বে।
বন্দর শ্রমিক আলী জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে াগে দিনে শতাধিক ট্রাক ফল আমদানি হতো। এখন বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :