শিরোনাম
◈ রেলের স্টাফদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার, মধ্যরাতে জানালেন হাসনাত আব্দুল্লাহ ◈ সব ধরনের ফেডারেল অনুদান ও ঋণ স্থগিত করার নির্দেশ ট্রাম্পের ◈ যেসব উপকার পাবেন ডালিমের রস ও চিয়া সিড খেলে, যেবাবে তৈরি করবেন ◈ ‌‘সৌদি আরবে দক্ষ কর্মীর চাহিদা পূরণে কাজ করছে সরকার’ ◈ গুম ও হত্যার জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের অপরাধের জন্য জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত ◈ গাছ কাটতে নিতে হবে অনুমতি: হাইকোর্টের রায় ◈ ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে নতুন ডন! ◈ ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের রশি টানাটানি কেন ◈ ফেব্রুয়ারিতে অবরোধ ও ‘কঠোর’ হরতাল ডেকেছে আওয়ামী লীগ ◈ তারেক রহমান ও ঢাবি প্রো-ভিসি ড. মামুন আহমেদের পুরোনো কথোপকথন ফাঁস (অডিও)

প্রকাশিত : ২৭ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৫:৪৫ বিকাল
আপডেট : ২৯ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৫:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আদমদীঘিতে প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের চার মাসেই উঠে যাচ্ছে প্লাস্টার

এএফএম মমতাজুর রহমান, আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা পরিষদ প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের চার মাসের মধ্যে দেয়ালে শ্যাঁওলা (নোনা) সহ প্লাস্টার উঠে যাচ্ছে। সেইসঙ্গে ফাটল ধরেছে হলরুমের দেয়ালে। অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করার কারনে এমন সমস্যা গুলো হতে শুরু করেছে। বিষয়টি দেখার পর কাজের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কার্যালয়ের দায়িত্বরতরা। তবে ঠিকাদারের দাবী এই নির্মাণকাজে তাদের প্রচুর লোকসান গুনতে হয়েছে। একই সুরে প্রকৌশলীর মতামত অর্ধশত বর্ষেও ভবনটি টেকসই থাকবে। তাদের স্বজনপ্রীতি মন্তব্যে গ্যাঁড়াকলে সেবাগ্রহীতা। 

জানা যায়, ২০২১ সালের ২৪ মে উপজেলা পরিষদ প্রশাসনিক ভবন ও হলরুম নির্মাণ কাজের বরাদ্দ হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বাস্তবায়নে ৬ কোটি ১১লাখ টাকা ব্যয়ে একটি টেন্ডার হয়। টেন্ডারে অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন ঠিকাদার। এসময় ২৪ শতাংশ ছাড় দিয়ে কাজটি পান মোঃ সোহেল নামের এক ঠিকাদার। এরপর নির্মাণের কাজ শুরু করেন তিনি। কাজের শুরুতে নিয়মনীতি মানা হলেও পরবর্তীতে নানা অনিয়ম শুরু হয়। অভিযোগ এসেছে নি¤œমানের পাথর, ইট, রড ও মাটিযুক্ত বালু ব্যবহার করে প্রশাসনের নাকের ডগায় ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছেন ঠিকাদার। অথচ জনসাধারণের সেবা প্রধানে এই ভবন নির্মাণে বিপুল অর্থ বরাদ্দ করেন সরকার।

কিন্তু প্রকৌশলী দপ্তরের উদাসীনতায় বরাদ্দকৃত সমুদয় অর্থ যাচ্ছে পানিতে। যার ফলস্বরূপ চার মাস পর নোনা, ফাটল, প্লাস্টার উঠে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হলেও কর্তৃপক্ষের কোন পদক্ষেপ নেই বলে জানান সচেতন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা প্রশাসনিক ভবনে চারপাশে দেয়ালে শ্যাঁওলা জমেছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে দায় এড়াতে দেওয়ালে রং করে দেন ঠিকাদার। হলরুমের দেয়ালে ফাটল দেখা দেয়ায় সিমেন্ট দিয়ে প্রলেপ দেয়া হয়েছে। ভবনের  ভিতরের রুমগুলোর জানালা ও দরজার চারপাশে প্লাস্টার উঠে গেছে। বৈদ্যুতিক সুইচগুলো নড়বড়ে অবস্থা। পানি সরবরাহে নেই পর্যাপ্ত ট্যাপের ব্যবস্থা। ওয়াশরুমেও দেখা যায় নানা সমস্যা। শুধু তাই নয়- ভালমানের কাঠের দরজা ব্যবহার করা হয়নি। দরজাগুলো বাঁকা হয়ে গেছে এবং নেই ফিনিশিং। দুটি ছিটকি থাকলেও কোনটা ঠিকমতো কাজ করেও না। জানালায় নি¤œমানের থায়গøাস থাকলেও লক কাজ করে না। ছাদের উপরে ব্যান্ড বিহীন পানির পাইপ ও ট্যাংক। এযেনো নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের সমাহার। অথচ এমন কর্মকান্ড করেও পার পেয়ে গেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যারফলে প্রশাসনের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। ইতিপূর্বে ঠিকাদার সোহেলের বিরুদ্ধে ছাতিয়ানগ্রাম অন্তাহার স্কুল ভবন নির্মাণে অনিয়মের সত্যতা মিলেছে। 

সেবা নিতে আসা শেফালী বেগম জানান, কয়েকদিন আগে একটা বিষয় নিয়ে ইউএনও স্যারের কাছে যাই। অফিসে একটি মিটিং চলাকালীন সময়ে বাহিরে সিটে বসে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করছিলাম। এরমধ্যে টয়লেটে যেতে গিয়ে দেখলাম দরজা ঠিকমতো লাগছেনা। তখন একজন মেয়েকে দাঁড় করিয়ে কাজ সাড়তে হয়েছে। এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয় যেখানে প্রতিদিন শতাধিক লোকজন সেবা নিতে আসে। সেখানে এমন হাল মোটেও কামনা করিনি। বিল্ডিংটি যারা দেখভাল করেন সমস্যাগুলো নিয়ে দেখার প্রয়োজন বলে মনে করি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী জানান, ইউএনও অফিসে সারাদিন কাজ শেষ করে রাতে পাহারা দেওয়া হয়। অফিসের সমস্ত জানালা বন্ধ করতে গেলে দেখা যায় লক নষ্ট। দরজা ঠিকমতো কাজ করেনা। দরজা,জালানা সমূহের চারপাশে প্লাস্টার উঠে যাচ্ছে। এমনকি ওয়াশরুম পর্যাপ্ত পানির ট্যাপ নেই। বৈদ্যুতিক সুইচ নড়বড়ে এবং কোনটা কাজও করেনা। এখানে লোক পাহারায় না থাকলে জানালা দিয়ে চোর ঢুকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।  

ঠিকাদার মোঃ সোহেল জানান, এই কাজ করতে আমার প্রচুর লোকসান হয়েছে। তাছাড়া কোথাও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি। নতুন মাটি কাটার কারনে প্লাস্টার ফাটল ধরতে পারে তা ঠিক করে দেওয়া হবে। বগুড়া জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইউনুছ হোসেন জানান, খোঁজ খবর নিয়ে  যেগুলো সমস্যা রয়েছে সেটা মেরামত করা হবে। বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা জানান, কাজে অনিয়ম বা নি¤œমানের হয়ে থাকলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়