শিরোনাম
◈ বেরোবির ১১ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শোকজ অফিস ফাঁকির অভিযোগে ◈ বিমানবন্দরে গ্রেফতার ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ◈ হাহাকার বেড়েই চলছে কলকাতার ‘মিনি বাংলাদেশ’-এ, বন্ধের পথে অনেক হোটেল-রেঁস্তোরা ◈ আওয়ামী লীগ নামে বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না: সালাহউদ্দিন আহমেদ ◈ পরিবর্তন হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা, বাদ যাচ্ছে শেখ মুজিবের নাম ◈ সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান  হান্নান অস্ত্রসহ গ্রেফতার  ◈ শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামিসহ সবাই খালাস ◈ নতুন রাজনৈতিক দল আসছে ছাত্র-তরুণদের নেতৃত্বে (ভিডিও) ◈ জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা ◈ ‘দায়মুক্তি’ শিরোনামে আওয়ামী লীগের লাইভ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা

প্রকাশিত : ১৭ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৪৪ দুপুর
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাজশাহীতে চিকিৎসক অপহরণ : ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি

ইফতেখার আলম বিশাল : রাজশাহী শহরে এক চিকিৎসককে অপহরণের পর ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির ঘটনা ঘটেছে। চন্দ্রিমা থানা এবং র‍্যাব-৫ এর যৌথ অভিযানে মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারি বিকেল ৪টার দিকে রাজপাড়া থানাধীন বিলশিমলা এলাকার রায়সা কমপ্লেক্সের একটি ভবন থেকে দুই অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় অপহৃত চিকিৎসক জাকির হোসেন অমিকেও উদ্ধার করা হয়।

অপহৃত চিকিৎসক জাকির হোসেন অমি রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ভবানিগঞ্জ গ্রামে। বর্তমানে তিনি নগরীর চন্দ্রিমা থানার ছোট বনগ্রাম ব্যাংক টাউন আবাসিক এলাকায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছিলেন।

জাকির হোসেন অমি জানিয়েছেন, ১৫ জানুয়ারি দিবাগত রাত ২টার দিকে তিনি সিএনজি চালিত অটোরিকশা নিয়ে তার গ্রামের বাড়ি থেকে রাজশাহী শহরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পৌনে ৩টার দিকে তিনি তার বাসার প্রবেশ গেটের সামনে পৌঁছালে ৬-৭ জন ব্যক্তি তাকে জোর করে মোরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। এরপর তারা তাকে বিলশিমলা এলাকায় অবস্থিত রায়সা কমপ্লেক্সের একটি ভবনে নিয়ে গিয়ে ব্যাপক মারধর করে। অপহরণকারীরা এরপর একটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে তার স্বাক্ষর নেয় এবং ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

চন্দ্রিমা থানা ও র‍্যাব-৫ এর যৌথ অভিযানিক দলের সদস্যরা দ্রুত তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে অপহরণকারীদের অবস্থান চিহ্নিত করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ জানুয়ারি বিকেলে রায়সা কমপ্লেক্স থেকে দুই অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয় এবং অপহৃত চিকিৎসক জাকির হোসেন অমিকেও উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার হওয়া দুই অপহরণকারীর নাম মো; আব্দুর রশিদ (৫০) ও তার ড্রাইভার মীম (৩০)। আব্দুর রশিদ একজন ডেবেলপার। তার রায়সা কমপ্লেক্স নামে বিলশিলা এলাকায় দুটি ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। বোয়ালিয়া থানাধীন উপশহর এলাকার মহসিনের ছেলে,তার গ্রামের বাড়ি গোদাগাড়ী। মীম আব্দুর রশিদের ব্যক্তিগত ড্রাইভার। সে রাজপাড়া থানার ডিঙ্গাডোবা এলাকার মো. মোশারফের ছেলে।

তবে অপহরণকারী আব্দুর রশিদের দাবি জাকির হোসেন অমি বিগত সরকারের আমলে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে মেডিকেল কলেজে ব্যাপক আধিপাত্য বিস্তার করে ,চাঁদাবাজিসহ মাদকের সম্রজ্য গড়ে তুলেছিলেন। এছাড়াও তার একটি মুল্যবান জমি ১৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনানের দখলে ছিল। সমাধান করে দিবে বলে ছাত্রলীগ নেতা জাকির হোসেন অমি ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা নিয়েছে তার কাছ থেকে। এবং এ টাকা সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে এক কোটি টাকা তার মেয়ে অর্ণাজামানকে ৫০ লাখ, কাউন্সিলর আনারকে ৫০ লাখ এবং তারা ৫০ লাখ টাকা নিয়েছে বলে জানায়। পরবর্তীতে সে কোন সমাধান করে দেয়নি। ফলে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

এদিকে খোজ নিয়ে জানা গেছে, আব্দুর রশিদ পেশায় একজন রাজ মিস্ত্রি ছিলেন। রাজশাহী-১ আসনে সাবেক এমপি ফারুক চৌধুরীর সাথে আতাৎ করে মাদকের গডফাদার বনেযান। পরে সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেন। এরপর থেকে তাকে আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। রাজশাহী, গোদাগাড়ীসহ ঢাকায় গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। 

চন্দ্রিমা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মহিউদ্দিন জানিয়েছেন, গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার করা হয়েছে, যা অপহরণের মূল পরিকল্পনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

চন্দ্রিমা থানার পুলিশ ইতোমধ্যে অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি এবং মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ ও র‍্যাব আরও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন এবং অন্য জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

এ ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, তবে পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানায় যে, তারা শিগগিরই পুরো চক্রটির বাকি সদস্যদের ধরতে সক্ষম হবে।

রাজশাহী প্রতিনিধি:

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়