শিরোনাম
◈ হান্ড্রেড বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশের ২৯ ক্রিকেটারের কেউই দল পেলেন না ◈ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব ◈ গালি দেওয়া সেই সংবাদ উপস্থাপিকার চাকরি ফিরিয়ে দিতে বললেন হাসনাত ◈ বাংলাদেশে থাকতে চাই না, আমাদের বার্মা ফেরত পাঠাও, খাদ্য সহায়তা কমানোয় দেশে ফিরতে চান রোহিঙ্গারা ◈ সৌদি আরবের হঠাৎ সিদ্ধান্তে হাজারো ওমরাহযাত্রী  বিপাকে ◈ গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া তরুণদের নিয়ে আরেকটি দল গঠনের ইঙ্গিত ◈ কী ঘটেছিল সেই রাতে, কেঁদে কেঁদে জানালেন আছিয়ার মা ◈ কালবৈশা‌খীর সঙ্গে ‌সিলেটে শিলাবৃষ্টি (ভিডিও) ◈ ৩৭টির মধ্যে ৭টি রাজনৈতিক দল সংস্কার বিষয়ে মতামত দিয়েছে ◈ আবু সাঈদের রক্তমাখা জামাসহ আলামত জব্দের অনুমতি পেল ট্রাইব্যুনাল

প্রকাশিত : ১৬ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৯:৫০ সকাল
আপডেট : ০৭ মার্চ, ২০২৫, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শেখ পরিবারের তিন ফাউন্ডেশনে আড়াই হাজার কোটি টাকার উপঢৌকন

শেখ পরিবারের তিন ফাউন্ডেশনেই আড়াই হাজার কোটি টাকার ওপরে উপঢৌকন দেয়া হয়েছিল। আর এসব ফাউন্ডেশনের অর্থের যোগানদাতা ছিল এস আলম, নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ কিছু ব্যাংক ডাকাত ব্যবসায়ী গ্রুপ ও ব্যাংকগুলো। এর মধ্যে এস আলম ইসলামী ব্যাংকসহ তার নিয়ন্ত্রণে থাকা ৮টি ইসলামী ব্যাংক থেকে সিএসআরের অর্থ এসব তহবিলে জমা দিতেন। টানা দেড় দশকের ওপরে ব্যাংক পরিচালকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) চেয়ারম্যানের পদ ধরে রেখে ব্যাংকগুলোকে পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোটি কোটি টাকা জমা দিতে বাধ্য করতেন নাসা গ্রুপের মালিক ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। এর বাইরে বেক্সিমকো, সামিট, বসুন্ধরা, ওরিয়নসহ বড় কিছু ব্যবসায়ী গ্রুপ এসব ফাউন্ডেশনে নিয়মিত অর্থের জোগান দিতেন। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, সিআরআই ফাউন্ডেশন ও সূচনা ফাউন্ডেশন। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান ছিলেন, স্বয়ং শেখ হাসিনা, রেহেনা, শেখ হাসিনার ছেলে জয়, মেয়ে পুতুল, রেহেনা পুত্র ববিসহ শেখ পরিবারের আস্থাভাজন কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি ও মন্ত্রীরা। বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বিএফআইইউ, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডিসহ একাধিক সংস্থা থেকে তদন্ত করা হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কারা অর্থের জোগান দিত, এসব অর্থ কিভাবে ব্যয় করা হতো, ফাউন্ডেশনের অর্থ পাচার করা হয়েছে কি না এসব বিষয় নিয়ে সংস্থাগুলো কাজ শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সবচেয়ে বেশি অর্থ জমা দেয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনে, অঙ্ক হাজার কোটি টাকার ওপরে। এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে সরাসরি ছিলেন পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহেনা। এ প্রতিষ্ঠানে সবচেয়ে বেশি অর্থের জোগান দিয়েছে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। আর এ ফাউন্ডেশনে অর্থ উত্তোলনের সরাসরি দায়িত্বে ছিলেন, ব্যাংক খাতের মাফিয়া বলে খ্যাত নজরুল ইসলাম মজুমদার। তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কথা বলে বিভিন্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিচালকদেরকে বাধ্য করতেন এ প্রতিষ্ঠানে অর্থ জমা দেয়ার জন্য। বিভিন্ন ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী ও চেয়ারম্যানরা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতেন কোটি কোটি টাকার পে-অর্ডার নিয়ে। আর এ সময় পতিত প্রধানমন্ত্রীর পাশে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতেন নজরুল ইসলাম মজুমদার। এক একজন এমডি ও চেয়ারম্যান পে-অর্ডার নিয়ে পতিত প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিতেন। এসব ছবি তুলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেয়া হতো। এভাবেই নজরুল ইসলাম মজুমদার পতিত প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন হয়ে উঠেন।

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনে চাঁদা জোগানের দায়িত্বে থাকা নজরুল ইসলাম মজুমদারও আখের গুছিয়েছেন। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণের নামে অর্থ বের করে বিদেশে পাচার করেছেন। তার নামে-বেনামে প্রতিষ্ঠানে ঋণের পরিমাণ ২৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর বেশির ভাগ অর্থ পরিশোধ তো দূরের কথা, মুনাফাও পরিশোধ করতেন না। একমাত্র জনতা ব্যাংক থেকেই বিধিবহির্ভূতভাবে ২৬১ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করে নিয়েছিলেন ব্যাংক খাতের এ মাফিয়া ডন। বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনে ব্যাংকগুলোর বাইরেও বড় বড় ব্যবসায়ী গ্রুপ অর্থের জোগান দিতেন। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে এসব তথ্য বের হয়ে আসছে।


আরেকটি চাঁদা কলেকশনের ক্ষেত্র ছিল সিআরআই ফাউন্ডেশন নামক একটি গবেষণা সংস্থা। এ ফাউন্ডেশনে বিভিন্ন ব্যবসায়ী গ্রুপ প্রায় ৫০০ কোটি টাকা জোগান দিয়েছিল। সিআরআই ফাউন্ডেশনে সরাসরি যুক্ত ছিলেন শেখ রেহানা, তার ছেলে ববি, হাসিনার ছেলে জয় ও মেয়ে পুতুল।

সূচনা ফাউন্ডেশন নামের আরেক প্রতিষ্ঠানেও হাজার কোটি টাকার ওপরে জমা দিয়েছিল ব্যবসায়ী গ্রুপ ও ব্যাংকগুলো। এ প্রতিষ্ঠানের সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলেন হাসিনা কন্যা পুতুল, সাবেক তথ্যমন্ত্রী আরাফতসহ শেখ পরিবারের কয়েকজন ঘনিষ্ঠজন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এসব ফাউন্ডেশনে কী পরিমাণ অর্থ লেনদেন হয়েছে, ওইসব অর্থ কারা জোগান দিয়েছিল, এসব অর্থের কী পরিমাণ পাচার করা হয়েছে তার তথ্য বের করা হচ্ছে। একই সাথে এসব প্রতিষ্ঠানে যারা কাজ করতেন তাদের বিষয়েও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। শিগগিরই এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে ওই সূত্র জানিয়েছে।নয়া দিগন্ত

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়