হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরের ভাঙ্গায় মহাসড়কে পৃথক দু'টি ডাকাতির ঘটনায় ডাকাত দলের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া ডাকাতি হওয়া চারটি পিকআপ ভ্যান ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। ডাকাত সদস্যরা গভীর রাতে মহাসড়কে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গরু, পিকআপ ভ্যান ও ট্রাক ভর্তি মাছ সহ নগদ টাকা লুট করে নেয় বলে পুলিশ জানায়।
এমন দুটি ঘটনায় ভাঙ্গা থানায় মামলা হলে পৃথক অভিযানে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে রোববার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোকছেদুর রহমান।
এর আগে একটি ডাকাতির ঘটনায় ভাঙ্গা উপজেলার চান্দ্রা মুখডোবা গ্রামের পারভেজ মুন্সি (২৭) ও শরিয়তপুরের গোসাইহাট থানার ঢালীরহাট গ্রামের আরাফাত হোসেনকে (২৬) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁদের দেয়া স্বীকারোক্তি মোতাবেক গতকাল শনিবার দুপুরে ভাঙ্গা দক্ষিণপাড় বাসস্ট্যান্ড হতে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার শিবগাতি জুনাশুর গ্রামের সোহেল কাজী (২৩) ও জুয়েল কাজী (২২), কোটালীপাড়া থানার কান্দি গ্রামের মিন্টু শেখ (৫৫) ও ধোরার গ্রামের সাগর (২৫) নামে চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত পহেলা নভেম্বর রাত প্রায় ১২ টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদি ইউনিয়নের ফরিদপুর-ঢাকা মহাসড়ক থেকে নজরুল ইসলাম (৪৪) নামে গরু ব্যবসায়ীকে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে ১৩ থেকে ১৪ জন ডাকাত সদস্য। ডাকাতদল একটি সাদা রংয়ের মাহিন্দ্র পিকআপ যোগে ওই ব্যবসায়ীর ব্যবহৃত পিকআপ ওভারটেক করে সামনে দাড় করে গতিরোধ করে ওই ব্যবসায়ী ও পিকআপ চালককে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে। এ সময় তাঁদের হাত-পা, চোখ ও মুখ বেঁধে কুঁপিয়ে জখম করে। পরে তাঁদের জিম্মি করে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা থানাধীন গনির মোড় নামক একটি জায়গায় নিয়ে ফেলে দেয়। এতে তাদের ৯ লক্ষ টাকা মূল্যের তিনটি গরু, পিকআপ ভ্যান ও নগত টাকা নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর গত ৫ ডিসেম্বর অজ্ঞাতদের নামে থানায় মামলা করেন গরু ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম। সে উপজেলার নুরুল্ল্যাগঞ্জ ইউনিয়নের ধর্মদি গ্রামের বাসিন্দা।
এছাড়া গত ৪ নভেম্বর রাত ৪ টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা উপজেলাধীন চুমুরদি এলাকা থেকে ১০ মণ পাঙ্গাস মাছ ভর্তি একটি পিকআপের গতিরোধ করে ৮ থেকে ১০ জনের একটি ডাকাত দল। তাঁরা পিকআপ চালককে অপর একটি পিকআপের মাধ্যমে চাপ দিয়ে গতিরোধ করে। এ সময় ডাকাত দল চালক ও মাছের মালিকের হাত-পা, চোখ ও মুখ বেধে ফেলে। সে সময় তাদের গাড়ির ভেতর ত্রিপল জাতীয় কিছু দিয়ে ঢেকে মারধর করে। পরে তাঁদের গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানাধীন গাড়াখোলা মাদ্রাসার পাশে ফেলে দিয়ে মাছ ও পিকআপ ভ্যানসহ নগত টাকা নিয়ে চলে যায় ডাকাতদল।
এ ঘটনায় ভাঙ্গা থানায় অজ্ঞাতদের নামে মামলা করেন মাছের মালিক ও ভাঙ্গা বাজারের মৎস্য আড়তদার হৃদয় শীল (২৫)। এ ঘটনায় আজ রোববার ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে কেরাণীগঞ্জের নজরগঞ্জ জিনজিরা এলাকার থেকে জড়িত মেহেদী হাসান মৃধা (২৮) নামে ডাকাত দলের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। সে মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার শংকরদী গ্রামের ইমদাদুল হকের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোকছেদুর রহমান বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের দুইজনকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করণের জন্য এবং তিনজনকে ৭দিনের রিমান্ডের আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :