শিরোনাম
◈ কর্মক্ষেত্রে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি, মূল্যবোধ ও নীতি-নৈতিকতাও কঠোর দক্ষতার মতোই গুরুত্বপূর্ণ : প্রধান উপদেষ্টার ◈ শিক্ষকদের মানোন্নয়নে বাংলাদেশকে সাড়ে ৩৮ কোটি টাকা দেবে জাপান ◈ চতুর্থ প্রজন্মের চীনা যুদ্ধবিমান কিনতে চায় বাংলাদেশ : সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন ◈ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা নতুন করে তদন্ত করা উচিত: হাইকোর্ট ◈ শেখ হাসিনা ও মঈন ইউসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল ◈ এস আলম ও তার পরিবারের ১২৫ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ ◈ সহিংসতাকারীদের ছাড় নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ অবশেষে কেরাণীগঞ্জে রূপালী ব্যাংকে ঢুকে পড়া তিন ডাকাতের আত্মসমর্পণ ◈ মিয়ানমার নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত-চীনের বৈঠক, কার কী স্বার্থ? ◈ কেরানীগঞ্জে ব্যাংকে ‘ডাকাতদল’, এবার অভিযানে সেনাবাহিনী

প্রকাশিত : ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৭:০৫ বিকাল
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

হাত দিতেই উঠে আসছে ৩ দিন আগের পিচঢালাই

শাহাজাদা এমরান,কুমিল্লা : জেলার বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা দক্ষিণ ইউনিয়নের পারুয়ারা সোন্দ্রম থেকে ভারেল্লা পূর্ব পাড়া সড়কটির দৈর্ঘ্য ১ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার। মাটির কাঁচা সড়কটি পাকাকরণের দাবি ছিলো দীর্ঘদিনের। অবশেষে গত বছরের অক্টোবরে সড়কটি পাকাকরণের কাজ শুরু হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের জানুয়ারিতে। কিন্তু সেই কাজ এখনো শেষ হয়নি। বর্তমানে সড়কটিতে পিচঢালাইয়ের কাজ চলছে। তবে কাজের মান নিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। কারণ, সড়কটির কয়েকটি অংশে তিন দিন আগে পিচঢালাই করা হয়েছে, এমন স্থানেও হাত দিতেই উঠে আসছে কার্পেটিং।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা। স্থানীয় কয়েকজন বলেন, সড়কটির নির্মাণকাজে নিম্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়া পুরো সড়কের অর্ধেকের বেশি ঢালাই হয়ে গেলেও কাজের মান ভালো হয়নি। পিচঢালাইয়ের যতটুকু পুরুত্ব থাকা দরকার, সেটাও দেওয়া হচ্ছে না। যদিও ঠিকাদার বলছেন, তাঁরা নির্মাণকাজে যথেষ্ট মান বজায় রাখছেন। ঢালাই শেষ হওয়ার অন্তত ২৪ দিন পার হলে পিচঢালাই আর এভাবে উঠে আসবে না।

বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সড়কটির ভারেল্লা পূর্ব পাড়া এলাকায় তাজ মাহমুদ বাড়ির সামনে পিচঢালাইয়ের কাজ চলছে। ওই স্থান থেকে ভারেল্লা রহিম চেয়ারম্যানের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৭০০ মিটার এলাকার কার্পেটিংয়ের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। তবে এই অংশের কাজ শেষ হলেও পিচঢালাই ভালো হয়নি। যার কারণে সড়কটি একের স্থানে একেক রকম। সড়কটি ধরে হেঁটে যাওয়ার সময় নির্মাণকাজ নিয়ে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গেছে। পূর্ব পাড়া এলাকায় তাজ মাহমুদ মসজিদ ও মাদ্রাসা–সংলগ্ন স্থানে এক যুবক হাত লাগাতেই উঠে আসে পিচঢালাই।

ওই স্থানের পাশের বাড়ির বাসিন্দা মো. মুকুল হোসেন বলেন, গত পরশু এই এলাকায় পিচঢালাই দেওয়া হয়েছে। আজ তিন দিন চলছে। এরপরও হাত দিয়ে হালকা টান দিলেই পিচঢালাইয়ের আস্তরণ উঠে আসে। পুরো সড়কের কাজটি হয়েছে চরম ধীরগতিতে। নির্মাণকাজে ব্যবহৃত হয়েছে নিম্মমানের সামগ্রী। মুকুল হোসেন বলেন, ‘সড়কটির তাজ মাহমুদ মসজিদ ও মাদ্রাসাসংলগ্ন মোড়ে গত সোমবার কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ হয়। মঙ্গলবার সকালে আমরা হাঁটতে বের হয়ে দেখি কার্পেটিং ফেটে রয়েছে। তখন আমার সঙ্গে থাকা আল-আমিন হাত দিয়ে হালকা করে টান দিতেই বড় একটি টুকরা উঠে আসে। এরপর দেখি, সড়কের বিভিন্ন স্থানে একই অবস্থা। সড়কটিতে ৪০ মিলিমিটার পুরুত্বের কার্পেটিং দেওয়ার কথা থাকলেও বেশির ভাগ স্থানে দেওয়া হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ মিলিমিটার। আমরা বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছি। যেসব স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে, সেসব স্থানে আবার ঢালাই দিয়েছেন ঠিকাদার। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, কাজের মান খুবই খারাপ।’

এলজিইডি, কুমিল্লা কার্যালয় সূত্র জানায়, পারুয়ারা সোন্দ্রম থেকে ভারেল্লা পূর্ব পাড়া ১ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি নির্মাণ হচ্ছে ১ কোটি ৫৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা ব্যয়ে। কাজটি বাস্তবায়ন করছে কুমিল্লা নগরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তাসলিমা এন্টারপ্রাইজ। ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি।কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় পরবর্তী সময়ে কয়েক দফা সময় বৃদ্ধি করা হয়। ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজটি শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে।

ভারেল্লা পূর্ব পাড়া এলাকার বাসিন্দা লোকমান হোসেন বলেন, ‘গ্রামের মাটির রাস্তা পাকা হচ্ছে, এ জন্য আমরা খুশি। তবে যেভাবে কাজ করা হচ্ছে, এই কাজ বেশি দিন টিকবে না। শুরু থেকেই কাজটি শেষ করতে অবহেলা করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যার কারণে পুরো একটি বছর আমাদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। বর্তমানে সড়কে কার্পেটিং হচ্ছে, কিন্তু একটি স্থানেও ফিনিশিং নেই।’ সড়কটির নির্মাণকাজ নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদার আবু তাহেরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনো ঢালাই বসেনি, গরম থাকার কারণে এভাবে কার্পেটিং উঠেছে। অন্তত ২৪ দিন পার হলে এই ঢালাই আর উঠবে না। আমি সর্বোচ্চ ভালো মানের সামগ্রী দিয়ে সড়কটির কাজ করছি। আর শৈত্যপ্রবাহের কারণে কয়েকটি স্থানে জমে গিয়ে ফিনিশিং এমন হয়েছে। এটা কিছুদিন গেলেই ঠিক হয়ে যাবে। আমরা কার্পেটিং করছি হাতে, এ জন্য কোথাও পুরুত্ব কম কোথাও বেশি হতে পারে। তবে সার্বিকভাবে ৪০ মিলিমিটার পুরুত্বের কার্পেটিং করা হচ্ছে। স্থানীয় ব্যক্তিরা না বুঝেই এ কথা বলছেন।’
বুড়িচং উপজেলার প্রকৌশলী আলিফ আহমেদ বলেন, ‘বুড়িচংয়ের কোনো সড়কেই কার্পেটিং বা কাজ খারাপ করার সুযোগ নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়