যশোর প্রতিনিধি: যশোর জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার একটি ভিডিও নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, মুখ ঢাকা একজন আরবি ভাষায় বক্তব্য দিচ্ছেন। তার পাশে দুই জন কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে ‘সশস্ত্র গার্ডের’ মতো দাঁড়িয়ে আছেন। মঞ্চের আশপাশে বেশ কয়েকজনকে বক্তব্য শুনতে দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন
যশোর জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ও শিক্ষা সচিব জানিয়েছেন, মাদ্রাসার বার্ষিক আঞ্জুমানের (প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী মানুষের লড়াই-সংগ্রামের বিষয়টি অভিনয় করিয়ে দেখিয়েছেন। এটি অভিনয় ছাড়াই কিছুই নয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর শহরতলীর রাজারহাট বিহারি কলোনি এলাকায় ২০১২ সালে যশোর জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। কওমি এই মাদ্রাসায় প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। এখান থেকে মূলত হাফেজ, মাওলানা ও মুফতি ডিগ্রি দেওয়া হয়।
মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব মাকফুর রহমান বলেন, ‘এই মাদ্রাসায় প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের নিয়ে বার্ষিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সেখানে যারা উপস্থিত বক্তৃতা, হামদ-নাত, গজল ও অভিনয়ে ভালো করে তাদের পুরস্কৃত করা হয়। গত ১৭ ডিসেম্বর এই মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ছাত্ররা ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী মানুষের পক্ষে অভিনয় করে দেখান।’
মুখ ঢেকে ‘সশস্ত্র গার্ডের’ মতো দাঁড়িয়ে থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের হাতে থাকা অস্ত্রগুলো কাঠ ও শোলা দিয়ে তেরি। আসলে এটি অভিনয় ছাড়া অন্য কিছু নয়।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি লুৎফুর রহমান ফারুকী বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর এই মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে আজীবন সদস্যদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই মঞ্চেই বার্ষিক আঞ্জুমানের আয়োজন করা হয়। আঞ্জুমানে শিক্ষার্থীদের প্রতিভা বিকাশ হয়। এতে যারা ভালো করে তাদের পুরস্কৃত করা হয়। বিষয়টি কোনও খারাপ উদ্দেশে নিয়ে করা হয়নি।’
তবে ঢাকার একজন ইসলামি চিন্তাবিদ জানিয়েছেন, ‘অনুষ্ঠানের ওই ভিডিওতে কোরআনের দুটি আয়াত বলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি কতল আরেকটি জিহাদ সংক্রান্ত। তবে সশস্ত্র গার্ডের মতো দাঁড়িয়ে এভাবে মাদ্রাসার অনুষ্ঠান করা ঠিক হয়নি। এতে মাদ্রাসা এবং আলেমদের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে। ইতিমধ্যে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে। বিষয়টি অভিনয়ের জন্য হলেও এভাবে করা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি।’
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘ভিডিওটি ফেসবুকে দেখেছি। মাদ্রাসার ছাত্রদের একটি প্রতিযোগিতার অংশ এটি। তারা ডামি অস্ত্র ব্যবহার করে অভিনয় করেছেন।’
আপনার মতামত লিখুন :