মোঃ আসাদুল্লাহ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার মল্লিকপুরে দু’ গ্রুপের দ্বন্দ্বে দু’ কিশোর ছুরিকাঘাতে নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। জোড়াখুনের এই ঘটনাটি নাচোলের মল্লিকপুর গ্রামের পেয়ারা বাগানের শ্রমিক সালাম ও শাহীনের দ্বন্দ্বের জেরে সংঘটিত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বুধবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিং-এ চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ জানান, প্রায় ১২ থেকে ১৩ দিন আগে মল্লিকপুরের একটি পেয়ারা বাগানে পলেথিন বাঁধার কাজ করার সময় তুচ্ছ ঘটনাকে ঘিরে স্থানীয় শ্রমিক সর্দার সালাম ও শ্রমিক শহীনের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ দ্বন্দ্বের জের ধরে মঙ্গলবার রাত ১১ টার দিকে মল্লিকপুর গরু হাটে শহীদ জিয়া সংঘ আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে আসা সালাম ও তার লোকজনের উপর অনুষ্ঠান শেষে সংলগ্ন মাছ বিক্রির ঘরে শাহীন ও তার লোকজন ধারালো অস্ত্রসহ হামলা চালায়। এতে ছয়জন গুরুত্বর আহত হয়। স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথে মাসুদ ও রায়হান মারা যায়। মারাত্মকভাবে আহত খলসি গ্রামের জালালের ছেলে সুমন (১৮) কে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহত বাকি ৩ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ জানান, ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। মঙ্গলবার রাতে বিভিন্নস্থানে যৌথ অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডে জড়িত মল্লিকপুর গ্রামের বাহার আলী মন্ডলের ছেলে আজিজুল হক (৫২) ও এজাবুলের ছেলে তাসিম (৩২) কে গ্রেফতার করে। হত্যাকান্ডে জড়িত ৭/৮ জনকে গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে, জোড়াখুনের এই চাঞ্চল্যকর ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানান বক্তব্য ঘুরে ফিরছে। নিহত মাসুদ রানাকে নাচোল উপজেলা ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্ট শাখার সভাপতি বলে পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে। তবে ছাত্রলীগ অফিসিয়ালি কোন তথ্য জানায়নি। এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য নেয়ার জন্য জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে সেলফোনে যোগাযোগ করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
তবে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ বলেন, ‘ রাজনৈতিক যে বিষয়টি এসেছে। আমরা এ ধরণের কোন কিছু পাইনি। জয় বাংলা শ্লোগান লেখা বা জয় বাংলা শ্লোগান দেয়ার কারণে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে তা নয়’।
নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :