বিজয় দিবস উদ্যাপন ঘিরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বিএনপির অন্তত ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ও চত্বরের বাইরে এ সংঘর্ষ হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যধাপক মো. রেজাউল করিম ও সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় তাদেরকে একে অপরের বিরুদ্ধে কটাক্ষমূলক বক্তব্য দিতে দেখা গেছে।
এদিকে মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়। বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী, সকাল ৯টায় আজহারুল ইসলাম মান্নান তার কর্মী সমর্থক নিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যধাপক মো. রেজাউল করিম তার কর্মী-সমর্থক নিয়ে বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে এসে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে চলে যাওয়ার সময় সেখানে পূর্ব থেকে অবস্থানরত আজহারুল ইসলাম মান্নানের লোকজন বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পরেন। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন থানা পুলিশের উপস্থিতিতে লাঠি-সোঠা নিয়ে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পরেন।
সংঘর্ষে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুর এ ইয়াসিন নোবেল, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, মামুন, আব্দুল আলী, সোলায়মান, কবির হোসেন, মাসুদ মিয়া, রিফাত, রতনসহ উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হন। আহতদের সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত নুর এ ইয়াসিন নোবেল বলেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক মো. রেজাউল করিমের নেতৃত্বে আমরা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে চলে যাওয়ার সময় আজহারুল ইসলাম মান্নানের লোকজন স্লোগান দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়।
অপর আহত কর্মী মামুন জানান, তারা মান্নান বলে স্লোগান দেওয়ায় তাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রশাসন আমাদেরকে সময় বেঁধে দিয়েছেন। নির্দিষ্ট সময়ে শহীদ মিনারে শান্তিপূর্ণভাবে ফুল দিয়ে চলে আসার সময় অতর্কিতভাবে হামলা চালায় আমার নেতাকর্মীর ওপর। যা খুবই দুঃখজনক।’
সোনারগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান একইভাবে পাল্টা অভিযোগ করেন।
সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, বিএনপির দুপক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সামনে দাঁড়িয়ে থেকে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি। এমন কিছুটা হৈ হুল্লোড় না হলে বাংলাদেশে রাজনীতি আছে, এটা বুঝবেন কেমনে?’
সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা রহমান জানান, উপজেলা পরিষদ চত্বরে কোনো ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। যে ঘটনা ঘটেছে তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এ বিষয়ে কোনো পক্ষই অভিযোগ দেননি।
আপনার মতামত লিখুন :