হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর প্রতিনিধি : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে ঢাকার মিরপুরে পুলিশের গুলিতে আহত ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার লস্করদিয়া ইউনিয়নের কল্যাণপুটি গ্রামের তরিকুল ইসলাম সুজন (৩৫) নামে এক যুবককে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সুজন ও তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত হয়ে এ অভিযোগ দেন।
তরিকুল ইসলাম সুজন ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তার বাবার নাম আবু জাফর মোল্যা। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে গত ১৯ জুলাই ঢাকার মিরপুরের আলোক হাসপাতালের সামনে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। এরপর তাকে বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার পর বর্তমানে সাভারের সিআরপিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সুজনের উরুর স্থানে এখনো গুলি রয়ে গেছে। চিকিৎসকগণ তার গুলি বের করতে পারেনি এখনো।
সিআরপিতে চিকিৎসারত অবস্থায় গত শনিবার দু'দিনের জন্য ছুটি নিয়ে বাড়ি ফেরার পর রোববার সকালে তিনি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যেয়ে এ লিখিত অভিযোগ দেন।
সুজন বলেন, গত ১৭ অক্টোবর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম তার বাড়িতে যান। এসময় শামা ওবায়েদ সুজনের বাড়ির উঠানে একটি মিটিং করেন। ওই মিটিংয়ের একটি ভিডিও ফুটেজ তিনি ফেসবুকে পোস্ট করেন।
সুজন অভিযোগ করেন, ফেসবুকে ওই ভিডিও পোস্ট করার কিছুক্ষণ পরে পার্শ্ববর্তী সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাবলু তাকে মোবাইলে ফোন করে। লাবলু সুজনকে বলে, "তুই বড় নেতা হয়ে গেছিস। তোর কতো বড় সাহস তুই আমার নেত্রী সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর এলাকায় শামা ওবায়েদকে এনে মিটিং করছিস। যারা নগরকান্দা-সালথা থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়েছে তাদের সবাইকে চিহ্নিত করে কাঁঠাল গাছের সাথে ঝুলিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলবো।"
গত ১২ ডিসেম্বর সুজন তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে তাকে হুমকি দেয়ার বিষয়টি জানিয়ে একটি লাইভ ভিডিও পোস্ট করে।
ওই লাইভের পর ১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার নগরকান্দার বিনোকদিয়া বাজারে সুজনের বোনজামাই ফয়েজ শেখের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের অফিসে যেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাবলু তার বোন জামাইকে হুমকিধামকি দেয়। ইউপি চেয়ারম্যান লাবলু ফেসবুক থেকে সুজনকে ওই ভিডিও ডিলিট করার নির্দেশ দিয়ে তার বোনজামাই ফয়েজ শেখকেও একইভাবে হুমকি দিয়ে বলেন, ভিডিও ডিলিট না করলে সুজনকে এলাকায় প্রবেশ করতে দেবোনা। সুজনকে কাঁঠাল গাছের সাথে ঝুলিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলবো।
এব্যাপারে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামরুল ইসলাম মোল্যা অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এব্যাপারে পুলিশ সুপারের সাথে আলোচনা করে দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিষয়টি জানতে সালথার গট্টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাবলুর বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে বক্তব্য জানাও সম্ভব হয়নি।
আপনার মতামত লিখুন :