এম, এ কুদ্দুস, বিরল (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দেখতে দেখতে কেটে গেছে বিজয়ের ৫৩ বছর। তার পরেও স্বজন হারনোর ব্যথা এখনো তাড়া করে নিয়ে বেড়াচ্ছে দক্ষিণ বহলা গ্রামের বাসিন্দাদের। ৭১-এর ১৩ ডিসেম্বর, এই দিনটির কথা মনে হলে এখনোও বহলাসহ আশ-পাশ গ্রামের লোকজনদের শরীর শিউরে উঠে।
দিনাজপুরের বিরল উপজেলার প্রায় জেলা শহর লাগোয়া কাঞ্চন রেল ব্রীজের দক্ষিণে বিজোড়া ইউপি’র দক্ষিণ বহলা গ্রাম। ৭১-এর ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যার সময় পুরো পাড়াটাই ঘিরে ফেলে পাক বাহিনীর সদস্যরা। তারা প্রস্তাব দেয় সে গ্রামে খাঁনদের ক্যাম্প স্থাপন করার। এ সময় গ্রামের সাধারণ মানুষেরা বাঁধা দিলে পাকসেনারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। মাগরিবের নামাজ শেষ করে পাক বাহিনীর সদস্যরা ওই গ্রামের পুরুষ মানুষদের সারিবব্ধ ভাবে দাড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে গণহত্যা চালিয়ে চলে যায়।
এতে চিরতরে নিভে যায় ওই গ্রামের ৩৯ জন সাধারণ মানুষের জীবন প্রদীপ। বাঁচার আকুতি জানিয়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নাম ধরে ডাকতে ডাকতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে তারা। রক্তাক্ত লাশের স্তুপ পড়ে থাকে সেখানে। টানা ৩ দিন পর অর্থাৎ ১৬ ডিসেম্বর বিকালে পোঁচন ধরা লাশ গুলিকে একটি গণকবরে একই সাথে ৩৩ জনকে সমাহিত স্থানীয়রা।
তাঁরা হলেনঃ সাহের উদ্দিন, খমির উদ্দিন, ওহাব আলী, মছলে উদ্দিন, সফিউদ্দিন, আব্দুস সাত্তার, আব্দুর রহমান, ভুতা মোহাম্মদ, কালু মোহাম্মদ, জাহের উদ্দিন, আখি মোহাম্মদ, টাকরু, তসির উদ্দিন, নুরু মোহাম্মদ, সামির উদ্দিন,আব্দুল লতিফ, ছপি উদ্দিন, রবিতুল্যাহ, আকবর আলী, আমিন আলী, মুন্সি আঃ জব্বার, ইসাহাক আলী, মহসীন আলী (চেন্দেরু), জয়নাল আবেদীন, বারেক তুল্যা, রহিম উদ্দিন, গোলাম মোস্তফা (গলো), আঃ করিম আলী, সোহরাব আলী, মোস্তাফা (মনু), ওমর আলী, মুজিতুল্যাহ, আছির উদ্দিন। বাকি ৬ জনঃ ফজলু, খেতু বোড়াল, খলিল উদ্দিন, জাহের মোহাম্মদ, রহিমুদ্দিন, আঃ মালেকের লাশ পারিবারিকভাবে প্রথকভাবে দাফন করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :