শিরোনাম
◈ ঢাকার সঙ্গে যেসব ‘শর্তে’ সম্পর্ক চাইছে দিল্লি ◈ ৩১ হাজার বাংলাদেশির মালয়েশিয়া থেকে ফিরতে নিবন্ধন ◈ বড়পুকুরিয়া খনির ১৪১৪ ফেইস থেকে  ৪.৮১ লক্ষ টন কয়লা উত্তোলন হয়েছে ◈ দেশে ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ সম্ভব হবে না : ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ◈ ১২৭দিন পর ১৩ বন্দিকে নিয়ে সচল করা হলো শেরপুর জেলা কারাগার ◈ তথ্য উপদেষ্টা নাহিদের বক্তব্য নিয়ে ধোঁয়াশা, জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রত্যাহার ◈ চার ফিফটিতে বাংলাদেশের রেকর্ডগড়া সংগ্রহ ◈ দেশের রিজার্ভ বেড়ে ১৯ বিলিয়নের ঘরে ◈ ভারতীয় কোস্টগার্ডের হাতে আটক বাংলাদেশি নাবিকদের ফেরানো হবে: পররাষ্ট্র সচিব ◈ ঢাকার সঙ্গে গাজীপুরবাসীর যোগাযোগ আরও সহজ করতে চালু হচ্ছে ৪ জোড়া কমিউটার ট্রেন

প্রকাশিত : ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৬:০২ বিকাল
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০১:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যেভাবে পাক বাহিনী থেকে মুক্ত হয়েছিলো বগুড়ার আদমদীঘি

আবু মুত্তালিব মতি, আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি : আজ ১২ ডিসেম্বর। বগুড়ার আদমদীঘি থানা পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধে দীর্ঘ ৯মাস বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মুহুর্মুহু গেরিলা আক্রমনে পাক হানাদার বাহিনী পালিয়ে যাওয়ায় ১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়ের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আদমদীঘি থানা সদরকে পাক-হানাদার মুক্ত ঘোষনা করেন।

কিন্ত ১২ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত দিবসটি পালনে আলাদা কর্মসুচী গ্রহন করার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধারা দাবী জানিয়ে আসলেও স্থানীয় ভাবে তা পালন না করায় অসন্তোষ বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

আদমদীঘি থানা এলাকায় পাক হানাদার বাহিনী এবং এ দেশীয় দোসর রাজাকারদের পাশাপাশি বিহারীদের (অবাঙ্গালী) অত্যাচার ছিল অবর্ণনীয়। ১৯৭১ সালের এপ্রিলের শুরু থেকেই বিভিন্ন গ্রামে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, মানুষ হত্যাসহ ধর্ষনের ঘটনাও ঘটিয়েছিল বিহারী ও পাক হানাদাররা। সান্তাহার রেলওয়ে জংশন শহরে ৯মাস কোন বাঙ্গালীকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। বাঙ্গালী দেখা মাত্রই চালানো হতো নির্মম নির্যাতন। প্রত্যেক বিহারীই ছিল অস্ত্রধারী।

মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার মরহুম এল,কে আবুল হোসেন, ফজলুল হক, আজিজার রহমান নান্টু, মেজর আব্দুল হাকিম, মুনছুর রহমান, নাজির হোসেন, আব্বাস আলীসহ অন্যান্য যুদ্ধকালিন কমান্ডারদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদারদের সাথে আদমদীঘির কুসুম্বী গ্রাম, রেল স্টেশান, নশরতপুর, মথুরাপুর গাদোঘাট রেলওয়ে ব্রীজ, সান্তাহার রেলওয়ে জংশন শহর রানীনগনসহ গুরুত্বপূর্ন স্থানে গেরিলা ও সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এতে বেশ কিছু পাকসেনা ও রাজাকার নিহত হয়। 

শুরু থেকে রক্তদহ বিল, বোদলা, পালসা, বিহিগ্রাম, বিষœপুর, গণিপুর, কদমা, বেজার, থলবড়বরিয়া গ্রাম ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদ মুক্ত এলাকা। মুক্তিযোদ্ধাদের চারিদিকের আক্রমনে পাক হানাদার বাহিনী পর্যুদস্ত হয়ে ১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর সকাল থেকেই আদমদীঘি থানা সদর থেকে সান্তাহার রেলওয়ে জংশন শহরে পালিয়ে একত্রিত হয়। অবশেষে ওইদিন দুপুরে আদমদীঘি থানা সদরে বিজয়ের পতাকা উড়িয়ে আদমদীঘি থানা সদরকে হানাদার মুক্ত ঘোষনা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। 

এর দুইদিন পর ১৪ ডিসেম্বর সান্তাহারে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমন তীব্রতার কারনে সান্তাহার রেলওয়ে জংশন শহরে টিকতে না পেরে পাক-হানাদার বাহিনী নওগাঁ অভিমুখে পালিয়ে যাওয়ায় সান্তাহার জংশন শহর মুক্ত হয় ১৪ ডিসেম্বর। মহান স্বাধীনতার পুর্ব মুহুর্তে পাকসেনারা আদমদীঘির শ^শানঘাটিতে চারজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে শারীরিক নির্যাতনের পর প্রকাশ্যে গুলি করে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। দীর্ঘ ৯ মাসের যুদ্ধে এই উপজেলায় সেনা সদস্যসহ ২৫জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। বীর মুক্তিযোদ্ধা কাবিল উদ্দিন, তহির উদ্দিন, ফজলুল হক, আলিমুদ্দিন, আবেদ আলীসহ অনেকের দাবী ১২ ডিসেম্বর আদমদীঘি সদর হানাদান মুক্ত দিবসটি যথাযথ ভাবে পালন করে আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের এই সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা প্রায়োজন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়