হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর প্রতিনিধি : জাতীয় নির্বাচনের সাথে একইদিনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের কথা ভাবছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। আমাদের চিন্তা রয়েছে যে, একইদিনে ইউনিয়ন পরিষদ আর জাতীয় নির্বাচন হবে। তাহলে বুথ দখল করা আর সহজ হবে না। তখন মেম্বার প্রার্থীরা ওয়ার্ড ভিত্তিক পাহাড়া দিবে। তাহলে সেন্ট্রালি আর কেউ বুথ দখল করতে পারবে না। এ বিষয়গুলো আমরা সুপারিশ করব।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে একথা তুলে ধরেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। এর আগে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্যগণের সাথে মতবিনিময় করেন কমিশন প্রধান।
মতবিনিময় সভায় নির্বাচন পদ্ধতি, প্রশাসনিক ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থায় সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অংশগ্রহণকারীদের মতামত গ্রহণ করেন সংস্কার কমিশন। পরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন সংস্কার কমিশন প্রধান।
সংস্কার কমিশন প্রধান গণতন্ত্রের চর্চা প্রসঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনী ব্যবস্থায় এবং কাঠামো পরিবর্তনের কথা তুলে কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের চিন্তা আছে, ইউনিয়ন পরিষদে এখন যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হয় তাতে পলিটিক্যাল ইমপ্রেস (রাজনৈতিক প্রভাব) বেশি থাকে। আর এটা যদি আমরা মাল্টিপল ওয়ার্ডে করে দেই, মেম্বাররা চেয়ারম্যানকে ঠিক করবে। এটা আমার ব্যক্তিগত চিন্তা এবং আমার কমিটির সকলের সাথে কথা বলেছি। তারাও এ বিষয়ের সাথে মত দিয়েছেন। এটা যদি আমরা করে দেই তাহলে ওখান থেকেই গণতন্ত্রের চর্চা শুরু হবে। কেউ আর কেন্দ্র দখল করে বসে থাকতে পারবে না। তখন মেম্বার যারা হবে তারা ভোট করে আরেকজনকে চেয়ারম্যান নির্বাচন করবেন। এ রকম সুযোগ সৃষ্টি করার চিন্তা রয়েছে।’
সাধারণ মানুষের যোগাযোগের জন্য সপ্তাহে একদিন জেলা প্রশাসকদের সময় বেধে দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেদিন জেলা প্রশাসকরা অন্যকোনো কাজ করবে না। শুধু সাধারণ মানুষের কথা শুনবেন।
জনপ্রশাসনে লোকবল কমিয়ে আনার সুপারিশ করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রশাসনে অনেক লোক নিয়োগ করা হয়। এত লোক সরকারের দরকার নেই। আরো অনেক কম লোক দিয়ে সরকার চলতে পারে। এটা বন্ধ করার ব্যাপারে সুপারিশ করা হবে। কিন্তু পুলিশের সংখ্যা বেশি দরকার, কারন আইনশৃঙ্খলা অনেক কঠিন হয়ে পড়ছে। সেখানে পুলিশের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
ফরিদপুরকে বিভাগ করার চিন্তা ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়ে আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, ‘ফরিদপুর বিভাগ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু তা করা হয়নি। কারণ আগের সরকার প্রধানের ইচ্ছা ছিল গোপালগঞ্জকে বিভাগ করা। সেটাতো সম্ভব না। আমরা ঠিক করেছি ফরিদপুরকেই আলাদাভাবে বিভাগ ঘোষণা করবো।’
এ সময় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান, ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্যা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও জেলা প্রশাসনের বিভিন্নস্তরের কর্মকর্তাবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :