ভারতের শ্রীভূমির (করিমগঞ্জ) সীমান্তে সনাতনী ঐক্য মঞ্চ নামের একটি সংগঠনের বাধার মুখে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা আমদানি করা পণ্য দেশে নিয়ে আসতে পারছেন না। আজ সোমবার সকালে কিছু কমলা সিলেটের জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশন দিয়ে বাংলাদেশে এলেও পরে আন্দোলনকারী সংগঠনটির বাধার মুখে আর কোনো পণ্য আসেনি।
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেটের জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার অসিত কুমার আচার্য্য রাত আটটার দিকে প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, জকিগঞ্জ স্টেশন দিয়ে কেবল ভারত থেকে মালামাল আমদানি করা হয়। কোনো পণ্য রপ্তানি হয় না। আজ সকালের দিকে কিছু কমলা বাংলাদেশে এসেছে। পরে ওই পাশের (করিমগঞ্জ) একটি পক্ষের বাধার মুখে আর কোনো পণ্য বাংলাদেশে আসেনি।
ভারতের শিলচরের দুজন সাংবাদিকের সঙ্গে প্রথম আলোর প্রতিবেদকের কথা হয়। তাঁরা জানান, কয়েক দিন ধরেই বাংলাদেশ ইস্যুতে শিলচরে অস্থিরতা চলছে। সনাতনী ঐক্য মঞ্চ নামের একটি সংগঠন বাংলাদেশে হিন্দুদের নির্যাতন করা হচ্ছে অভিযোগ এনে নানা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন শুরু করে। একই ধারাবাহিকতায় সোমবার দুপুরে সংগঠনটির কিছু নেতা-কর্মী করিমগঞ্জ শুল্ক স্টেশন এলাকায় বিক্ষোভ করে।
এ সময় আন্দোলনকারীদের বাধার মুখে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের এলসি করা মালামালের গাড়ি ভারতের শ্রীভূমি (করিমগঞ্জ) শুল্ক স্টেশন থেকে ফেরত গেছে। এতে সীমান্তের বাংলাদেশ অংশে থাকা সিলেটের জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশন দিয়ে কোনো পণ্য দুপুরের পর থেকে সিলেটে আসেনি। বিক্ষোভ চলাকালে আন্দোলনকারীরা বাংলাদেশি পণ্য বয়কটের ঘোষণাও দেন।
এদিকে আজ সোমবার বেলা তিনটায় জকিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সামাজিক-সম্প্রীতিবিষয়ক এক সভা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফসানা তাসলিমের সভাপতিত্বে ওই সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, ধর্মীয় নেতা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকারি কর্মকর্তাসহ নানা শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে রাত সোয়া আটটার দিকে ইউএনও আফসানা তাসলিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই পাশে (ভারত অংশের করিমগঞ্জ) কিছুটা অস্থিরতা থাকায় সভায় আমরা বিজিবিকে (বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড) পরামর্শ দিয়েছি টহল বাড়ানোর জন্য আর সতর্ক থাকার জন্য।’
এদিকে ভারতের গণমাধ্যমকর্মী, সীমান্ত এলাকার মানুষ এবং কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা শুল্ক স্টেশনের ওপারে ভারত অংশের শ্রীভূমির (করিমগঞ্জ) সুতারকান্দি শুল্ক স্টেশন এলাকায় সনাতনী ঐক্য মঞ্চ ‘বাংলাদেশ চলো’ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। এ সময় আন্দোলনকারীরা আসাম পুলিশ ও বিএসএফের ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ সীমান্তে ঢোকার চেষ্টা চালায়। পরে অবশ্য পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ সময় আন্দোলনকারীরা সুতারকান্দি দিয়ে বাংলাদেশ থেকে আমদানি-রপ্তানি বন্ধের দাবিও জানান।
এরপর থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানি সীমিত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন শেওলা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন।উৎস: প্রথম আলো।
আপনার মতামত লিখুন :