সোহাগ হাসান জয়, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে বিয়ারা গ্রামের গার্মেসকর্মী অন্তরা খাতুন (২৭) নামের এক মেয়ের প্রেমের টানে এক চীনা নাগরিক বাংলাদেশে। বর্তমানে চীনা নাগরিক তার শশুরবাড়ীতে অবস্থান করছে। বিয়ে করেছেন অন্তরা খাতুনকে। অন্তরা গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গার্মেন্টসের বায়ারের কাজে বন্ধুদের সঙ্গে চীন থেকে বাংলাদেশের গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকার একটি পোশাক কারখানায় আসেন চেংনাং নামে চীনা এক যুবক। কাজের সুবাদে কাজিপুরের অন্তরা নামে এক তরুণীর সঙ্গে দেখা হয়। এরপর দু-জনের মধ্যে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে দুই পরিবারের সম্মতিক্রমে গত (২২ নভেম্বর) নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে চীনা যুবক ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর প্রেমিকা অন্তরাকে বিয়ে করেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর চীনা নাগরিক চেংনাং এর নাম রাখা হয়েছে সালমান স্বাধীন। বর্তমানে দুজন কাজিপুরের পৌর এলাকার বিয়ারা গ্রামে অন্তরার বাবা আব্দুর রশিদের বাড়িতে বসবাস করছেন। ভিসা প্রসেসিং শেষে স্বামী-স্ত্রী দুজনে চীনের হুনান শহরে চলে যাবেন। দুইদিন আগে নব-দম্পতি গ্রামে আসলে অন্তরার স্বজনসহ দূর-দূরান্তের মানুষ এসে বিদেশি জামাইকে এক নজর দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় জমাচ্ছেন।
অন্তরা খাতুন বলেন, গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করা অবস্থায় চীন থেকে কিছু বিদেশি বায়ারের সঙ্গে চেংনাং কারখানায় আসেন। তখন তাকে দেখে চেংনাংয়ের ভালো লাগে। এরপর দুজনের ফেসবুকে কথাবার্তা এবং মন দেওয়া-নেয়া হয়। তিন মাস প্রেমের পর পরিবারের সম্মতিতে দুজনে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি।
তিনি আরো বলেন, গত ৫ মাস আগে তার পূর্বের স্বামীর সঙ্গে তার ডিভোর্স হয়েছে। ৯ বছর বয়সী একটি মেয়েও রয়েছে তার। তবে এসব বিষয় খুব সহজভাবেই সালমান স্বাধীন ওরফে চেংনাং মেনে নিয়েছেন।
চীনের হুনান শহরের যুবক চেং নাং বলেন, অন্তরাকে প্রথম দেখে আমার ভীষণ ভালো লাগে। একপর্যায়ে অন্তরার ফেসবুক আইডিতে মেসেজ পাঠাই। সেই থেকে আমাদের সম্পর্কের শুরু। এরপর প্রেম এবং বিয়ে। অন্তরার অতীত নিয়ে আমার কোনো ভাবনা নেই। এখন দু-জন সারাজীবন একসঙ্গে থাকব এটাই আমাদের পরিকল্পনা। এরমধ্যে ভিসার আবেদন করেছি। ভিসা পেলেই দু-জন চীনে চলে যাবে।
অন্তরার বাবা আব্দুর রশিদ জানান, প্রথমে একটু চিন্তা হয়েছিল। ভিনদেশি একজনের সঙ্গে আমাদের মেয়ে কিভাবে সংসার করবে। তবে ধীরে ধীরে একে অপরকে জানতে ও বুঝতে শিখেছে। তাদের মধ্যে একটি সুন্দর বন্ধনের সৃষ্টি হয়েছে। সেজন্য আমরাও তাকে মেয়ের জামাতা হিসেবে মেনে নিয়েছি। অভিভাবক হিসেবে আমরা খুশি। দোয়া করি তারা যেন সারাজীবন সুখে থাকে।
আপনার মতামত লিখুন :