‘গুজব ছড়ানো অনেক সহজ। কিন্তু যাদের ব্যাপারে ছড়ানো হচ্ছে তাদের জীবনের ওপর দিয়ে কী যাচ্ছে, তা জড়িতরা বুঝতে পারছে না। গুজব ছড়ানোর আগে নিজের ভাই-বোন-পরিবারের কথা চিন্তা করুন।’
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ এমন মন্তব্য করেছেন।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ‘শহীদ পরিবারের পাশে বাংলাদেশ’ কর্মসূচির আওতায় চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
স্নিগ্ধ বলেন, যারা আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন, তারা তাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন। কেউ তাদের কবর জিয়ারত করতে গিয়েছে কি না কিংবা করতে যাচ্ছে কি না, এ কারণে তার আত্মত্যাগ কোনো অংশে কম হতে পারে না। তারা তাদের জীবন দিয়েছেন, এর থেকে বড় আত্মত্যাগ হতে পারে না। তাদের সম্মান সর্বোচ্চ থাকবে।
তিনি বলেন, ‘যারা গুজব রটাচ্ছে তাদের বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকার ও দায়িত্বে থাকাদের কাছে আমার আহ্বান থাকবে। আমার ভাই শহীদ হয়েছে, এটার জন্য যদি তার লাশের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করতে হয়, তাহলে সেটা আমার ভাইয়ের রক্তের সঙ্গে অসম্মান করা ছাড়া কিছুই হবে না। আমি বলব, যেসব মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, তাদের ত্যাগের মূল্য যদি না দিতে পারেন তাহলে দয়া করে তাদের নিয়ে কথা বলবেন না।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম, বরিশালের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলাউল হাসান।
মুগ্ধ ও স্নিগ্ধকে নিয়ে অপপ্রচার
রাজধানীর উত্তরা এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর মৃত্যু নিয়ে আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে। সেখানে তারা দাবি করে, মুগ্ধ মারা যাননি। মুগ্ধ নামে কেউ নাকি ছিলেনই না। এমনকি মুগ্ধ-স্নিগ্ধ দুই ভাই নয়, মুগ্ধই স্নিগ্ধ, মানুষ একজনই।
যদিও ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠানগুলো জানাচ্ছে, মুগ্ধ ও স্নিগ্ধ আলাদা ব্যক্তি। তারা যমজ ভাই।
মুগ্ধের মৃত্যুর সত্যতা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে ‘সাপোর্টার্স অব বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’ নামের একটি গ্রুপের পোস্টে লেখা হয়, ‘মুগ্ধর ডেডবডির ছবি কেউ দেখে নাই, মুগ্ধর পোস্টমর্টেম রিপোর্ট, জানাজা, কবর কই?’
তবে ফ্যাক্ট চেকিং বা তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া রিউমার স্ক্যানার বাংলাদেশ নিশ্চিত করেছে, মুগ্ধ ও স্নিগ্ধ আলাদা দুই ব্যক্তি। তারা দুজন যমজ ভাই।
এদিকে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া দাবিগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। জানানো হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুগ্ধকে নিয়ে ছড়িয়ে পড়া এই দাবিটি সঠিক নয়। উৎস: কালের কণ্ঠ।
আপনার মতামত লিখুন :