অনুজ দেব বাপু, চট্টগ্রাম : বাজারে পণ্য সরবরাহে কোন কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে দেওয়া হবে না বলে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে সার্বিক বাজার পরিস্থিতি, টিসিবির পণ্য বিতরণের সার্বিক কার্যক্রম ও দ্রব্যমূল্য বিষয়ে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কঠোর বার্তা দেন।
উপদেষ্টা বলেন, চাহিদা ও যোগানে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে হবে। উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমরা বাণিজ্য বেশিসংখ্যক মানুষের সংযোগ বাড়াতে চাই। এর মাধ্যমে বাজারে সরবারহ বাড়বে। গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর কাছে বাজার জিম্মি থাকবে না এবং সরবারাহে কোন কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে দেওয়া হবে না।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সনাতন লেনদেনের কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। স্বচ্ছতা আনতে হবে লেনদেনে। কাউকে অপরাধী হিসেবে পরিচিত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। পাইকারি থেকে খুচরা সব পর্যায়ে ক্রয়-বিক্রয় রশিদ সংরক্ষণ করতে হবে। কোনও অস্বচ্ছতা রেখে বাজার অস্থিতিশীল করতে দেওয়া হবে না। আমাদের কাছে তথ্য আসছে- খাতুনগঞ্জে ডিও ও এসও বিক্রি হচ্ছে। বাণিজ্য এখন ভার্চুয়ালি হচ্ছে, পণ্য সরবরাহ হচ্ছে না। শুধু ডিও বিক্রি করে লাভবান হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যবসায়ীদের এটা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম উদ্দিন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আলীম আখতার খান, টিসিবি চেয়ারম্যান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. মোস্তফা ইকবাল, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আহসান হাবীব পলাশ এবং ছাত্র প্রতিনিধি জোবায়েরুল আলম বারী বক্তব্য রাখেন। সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের জেলা প্রশাসক, জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন বলেন, পেঁয়াজের দাম কমেছে। আশা করি আলুর দামও কমবে। যতদিন বাজারে পুরোপুরি স্বস্তি আসবে না আমরা বসে থাকব না।
তিনি আরও বলেন, আমরা এক কোটি পরিবারকে সাশ্রয়ী দামে টিসিবির পণ্য বিক্রির ও ভোক্তা অধিকার অধিদফতরের কার্যক্রমকে আরও ফাংশনালি করতে চাই। বাজার আগে থেকে পজিটিভ স্থানে আছে। টিসিবির প্রতিটি ট্রাকে আগে ৩৫০ জনকে কম দামে পণ্য বিক্রি করা হত। সেটাকে আমরা ৪০০ জন করার বিষয়ে আলোচনা করছি। আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে বলে বিভিন্ন আমদানি করা পণ্যের শুল্ক কমিয়েছি। বাণিজ্যক কাজে সবার সহযোগিতা দরকার।
ডিও (ডেলিভারি অর্ডার) প্রথার বাতিল সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিওর সময় নির্দিষ্ট করার জন্য আমরা আলোচনা করেছি। লেনদেনের ক্ষেত্রে যা যা সমস্যা হচ্ছে সে ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। সরবরাহে যাতে কৃত্রিম বিলম্ব তৈরি না হয় সেদিকে আমাদের সবার নজর রাখা উচিত। অনৈতিক কোনো প্রেশার যাতে ব্যবসায়ীদের ওপর না আসে সে দায় দায়িত্ব আমাদের।
আপনার মতামত লিখুন :