হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ফুলবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মহিউদ্দীনের যৌন হয়রানির সংবাদ সংগ্রহকালে স্থানীয় চার সাংবাদিককে লাঞ্চিত করার অভিযোগে মো. সাদ্দাম হোসেন (৩৪) নামে এক বিএনপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে ফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া সাদ্দাম ফুলবাড়িয়া আবুল কালাম মাতুব্বরের ছেলে। তিনি অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ও বল্লভদী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দীনের ঘনিষ্ঠ সহযোগি হিসেবে পরিচিত।
ফুলবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, গত রবিবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে বিদ্যালয়ের সিঁড়ির উপর থেকে রাকিব শেখ নামে এক শিক্ষার্থীর সাথে এক ছাত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরেন শিক্ষকরা। পরে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দীনের জিম্মায় রাখা হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দীন তার কক্ষে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে ওই ছাত্রীর শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। একপর্যায় সহ্য করতে না পেরে ওই ছাত্রী প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে চিৎকার দিয়ে বেরিয়ে যায়।
এই ঘটনার পর সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবিতে বিদ্যালয়ের মাঠে মানববন্ধন করে অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী। একই সময় যৌন হয়রানির ঘটনাটি থামাচাপা দিতে ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবারকে নিয়ে বিদ্যালয়ের কক্ষে শালিসের আয়োজন করেন প্রধান শিক্ষক প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দীন ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
খবর পেয়ে মানববন্ধন ও শালিসের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে প্রধান শিক্ষক ও বিএনপি নেতা মহিউদ্দীনের নির্দেশে সাদ্দাম সোহেনসহ কয়েকজন দুস্কৃতকারী মাইটিভির স্থানীয় প্রতিনিধি শফিকুর রহমান জনি, মানবজমিনের লিয়াকত আলী, সংবাদের আজিজ ফকির ও কালবেলার আরিফুজ্জামান হিমনকে লাঞ্চিত করেন। এ সময় ছিনিয়ে নেন তাদের ক্যামেরা ও বুম। পরে ওই চার সাংবাদিককে একটি রুমের মধ্যে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিকদের উদ্ধার করি আমরা। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে মানবজমিনের স্থানীয় প্রতিনিধি লিয়াকত আলী বাদী ৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা হওয়ার পর বুধবার দুপুরে আসামী সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :