শিরোনাম
◈ প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে ইমরুলের বিদায়, জানিয়ে গেলেন সরে দাঁড়ানোর বোধশক্তি কথা ◈ সমন্বয়ক হাসনাতকে নিয়ে শিল্পী মাকসুদের পোস্ট, ব্যাপক সমালোচনা ◈ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে কাউন্সিল নিয়ে বিএনপির দুগ্রুপের সংর্ঘষ, আহত ৪০ ◈ আওয়ামী লীগ নেতাদের পক্ষে যে কারণে শুনানি করলেন না অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী ◈ ১, ২ ও ৫ টাকার কয়েন নিয়ে নতুন নির্দেশনা ◈ রিপাবলিক বাংলার কনটেন্ট নিষিদ্ধ ও ব্লকের নির্দেশনা চেয়ে রিট ◈ ব্যাংকের টাকা গেলো কোথায়? তাদের টার্গেট ছিলো আমাকে হত্যা করা : শেখ হাসিনার নতুন অডিও কল রেকর্ড ◈ পুলিশ ভেরিফিকেশনে 'রাজনৈতিক পরিচয়' তুলে দেওয়ার সুপারিশ ◈ ট্রাইব্যুনাল থেকে বেরিয়ে দুহাত তুলে দোয়া চাইলেন পলক (ভিডিও) ◈ বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের রাজনীতিকরণ

প্রকাশিত : ১৮ নভেম্বর, ২০২৪, ১১:৪০ দুপুর
আপডেট : ১৮ নভেম্বর, ২০২৪, ০৭:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সনাতনীদের নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ, ১৩ দফা বাস্তবায়নের দাবি

অনুজ দেব বাপু, চট্টগ্রাম : হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট একীভূত হয়ে ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’ নামে আত্মপ্রকাশ করেছে। সংগঠনটি হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের ৮ দফা দাবি দ্রুত পূরণের পাশাপাশি হাজারী গলির ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনসহ আরও পাঁচটি দাবি জানিয়েছে।

রবিবার (১৭ নভেম্বর) বিকালে চট্টগ্রামের প্রবর্তকের ইসকন শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ ও সমসাময়িক বিষয়ে কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেন,  ‘বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোটের ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে এবং সনাতনী স¤প্রদায়ের অধিকার আদায়ে দীর্ঘদিন ধরে সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের ক্রিয়াশীল সকল সংগঠনের ঐক্যবদ্ধ মোর্চা বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে। আগামীতে এ দুটি সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের ব্যানারে আন্দোলন সংগ্রাম করবে।’

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী সংবাদ সম্মেলনে হাজারী গলির ঘটনায় জোর করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। এছাড়া অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, হাজারি গলিতে সেদিন যদি দুষ্কৃতিকারী হামলা করে থাকে তাহলে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানাই। গভীর রাতে বিদ্যুত ও ইন্টারনেট বন্ধ করে, সিসি ক্যামেরা ভেঙ্গে ঘুমন্ত সনাতনীদের ওপর হামলায় আমরা উদ্বিগ্ন। শুধুমাত্র ধর্মীয় বিদ্বেষ ও সনাতনীদের চলমান আন্দোলনকে নসাৎ করতে এ মামলাকে হাতিয়ার হিসেবে নিরীহ সনাতনীদের হয়রানি করা হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ভার্বমূতি ক্ষুণœ করতে বিশেষ কোনো গোষ্ঠী অপতৎপরতায় লিপ্ত।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ব্যতীত কারও বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করা যায় না। বিশেষ মহল সরকারকে বিব্রত করার অসৎ উদ্দেশ্যে মিথ্যা ভিত্তিহীন মামলা করে। সনাতনীদের আন্দোলনকে নস্যাৎ এবং নেতৃবৃন্দকে হয়রানি করতে মামলা হয়। মামলা প্রত্যাহারের জন্য সারাদেশের পাশাপাশি বিদেশেও শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন হয়েছে।
চিন্ময় ব্রহ্মচারী আরও বলেন, আমাদের আন্দোলন সরকার কিংবা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নয়। আমাদের চলমান আন্দোলন সনাতনীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফলে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মানবিক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধে ও দাবি বাস্তবায়নে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসবে।

সম্মেলনে উত্থাপিত নতুন পাঁচ দাবি হলো- ৫ নভেম্বর হাজারী গলির ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন, একই ঘটনায় আটক ও নির্মম নির্যাতনের শিকার নিরীহ সনাতনীদের মুক্তি দিয়ে যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, আটক সনাতনীদের ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বিভিন্ন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধ করা, সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে গভীর রাতে নিরীহ সনাতনীদের উপর অন্যায়ভাবে নির্যাতন করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতি উৎসাহী সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা, সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের যৌক্তিক আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী সাধু-সন্ত ও সংগঠকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার।

এছাড়া সম্মেলনে আগের সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য ‘দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল’ গঠনসহ ৮ দফা দাবিও তুলে ধরা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- দোষীদের দ্রুততম সময়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান, ক্ষতিগ্রস্তদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা, অনতিবিলম্বে ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’ প্রণয়ন, ‘সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয়’ গঠন, জাতীয় সংসদে সংখ্যানুপাতিক হারে আসন বরাদ্দ, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীত করার পাশাপাশি বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকেও ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা, ‘দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন’ প্রণয়ন, ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন’ যথাযথ বাস্তবায়ন, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংখ্যালঘুদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ ও প্রতিটি হোস্টেলে প্রার্থনা কক্ষ বরাদ্দ, ‘সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড’ আধুনিকায়ন এবং শারদীয় দুর্গাপূজায় ৫ দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা দেওয়া।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়