শিরোনাম
◈ সাত কলেজ ইস্যু: ঢাবি শিক্ষার্থীদের কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি ◈ যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয় ◈ নতুন রেকর্ড: দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ২ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা ◈ আগামী দুই বছর অর্থনীতিতে তিন ধরনের ঝুঁকি, ব্যবসায় ১৭ ধরনের বাধা: সিপিডি ◈ রোবট কুকুর ‘স্পট’ পাহাড়া দিচ্ছে ট্রাম্পের বাড়ি, স্পটের প্রতিটি পায়ে পথচারীদের জন্য সতর্কবার্তা রয়েছে ◈ ‘নেইমারকে চাই না, এই ক্লাবতো কোনো হাসপাতালের চিকিৎসা বিভাগ নয়’ ◈ দেশে নিষিদ্ধ হচ্ছে সিঙ্গেল ব্যান্ডের রাউটার আমদানি ও উৎপাদন ◈ নবীজির নির্মিত প্রথম মসজিদে এ বছর প্রায় ২ কোটি মুসল্লির নামাজ আদায় ◈ সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে  সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা  ◈ ঢাকায় স্ত্রীকে নিয়ে রিকশা চালালেন পাকিস্তানের হাইকমিশনার

প্রকাশিত : ১৭ নভেম্বর, ২০২৪, ০২:৫৯ দুপুর
আপডেট : ১৭ নভেম্বর, ২০২৪, ০৫:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ফেনীর ছাগলনাইয়ায় চুরি-ডাকাতিতে অতিষ্ট মানুষ, প্রতিবাদে মশাল মিছিল

এম. এমরান পাটোয়ারী, ফেনী প্রতিনিধি : ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলায় চুরি ডাকাতি বেড়ে যাওয়ায় নি সাধারণ মানুষের মনে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। নিজেদের শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে দিশেহারা গ্রামের সাধারণ মানুষ। প্রায় প্রতিদিন কোথাও না কোথাও চুরি ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। এদিকে চুরি ডাকাতি বেড়ে যাওয়ায় প্রতিবাদে বিক্ষোভ মশাল মিছিল করেছে সচেতন এলাকাবাসী। শনিবার সন্ধ্যায় ছাগলনাইয়া-মুহুরীগঞ্জ সড়কের হাজারী পুকুর স্ট্যান্ডে মশাল হাতে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। বিক্ষোভ মশাল মিছিল এ নিয়ে তারা প্রধান সড়ক হয়ে করৈয়া বাজার প্রদক্ষিণ করে। এসময় তারা চোর-ডাকাত ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে থাকেন।

বিভিন্ন সূত্রের তথ্যমতে, গত এক মাসে অন্তত ১৫টি বাসাবাড়িতে চুরি-ডাকাতি হয়েছে। এরমধ্যে গরু চুরি বেশি হয়েছে। আশংকাজনক হারে চুরি-ডাকাতি বেড়ে - যাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা ছাগলনাইয়ায় চুরি-ডাকাতি রোধে পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে ক্ষোভ রয়েছে। এসব পুলিশের নিষ্ক্রীয়তা ও দায়িত্বে অবহেলাকে দায়ী করেন অনেকে। তবে পুলিশের দাবি, তারা এলাকায় নিয়মিত টহল দিচ্ছেন।

জানা গেছে, ১৫ নভেম্বর ভোররাতে উপজেলার উত্তর কুহুমা গ্রামে হানা দেয় চোরের দল। তারা বক্সিহাজি পাড়া ব্রিজ সংলগ্ন নুরুল হক খন্দকার বাড়ীর আমান উল্যাহর গোয়াল ঘর থেকে চারটি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। ১৪ নভেম্বর রাত ২টার দিকে দক্ষিণ বল্লভপুর গ্রামের আসলাম মাস্টার বাড়ির উঠান থেকে সিএনাজ চালিত অটোরিকশা চার করেছে দুর্বৃত্তরা। গাড়ির মালিক আবদুল করিম জানান, এ গাড়ি চালিয়ে তিনি সংসার চালাতেন। গাড়ির ঋণের কিস্তি এখনও শেষ হয়নি। তিনি এখন দিশেহারা। ১০ নভেম্বর মধ্যরাতে উপজেলার ঘোপাল ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মোল্লা বাড়ীতে হানা দেয় চোরের দল। তারা দরিদ্র কৃষক আবদুল কাইয়ুম, জমির আহমেদ ও সাজেদা আক্তারের গোয়াল ঘর থেকে পাঁচটি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। পরিবারের শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন এই তিন পরিবার।

একইদিন রাতে ছাগলনাইয়া পৌরসভার বনানী পাড়ার শামীম ম্যানশনে ঘটে চুরির ঘটনা। ভাড়াটিয়া মো: মহিন তার স্ত্রী ও সন্তানদের চেতনানাশক খাইয়ে স্বর্ণ, নগদ টাকা, ফ্রিজ, চেয়ার টেবিলসহ আসবাবপত্র চুরি করে নিয়ে যায় চোরের দল। ৮ নভেম্বর ভোরে উত্তর মন্দিয়া পুকুরে সেচ দেয়া অবস্থায় চুরি হয়ে যায় সেচ পাম্প। ৫ নভেম্বর রাতে দক্ষিণ দৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪ নভেম্বর করৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং একইদিন রাতে সিংহনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চুরির ঘটনা ঘটে। চোরের দল বিদ্যালয়ের টিউবওয়েল, সিলিং ফ্যান, গ্যাস সিলিন্ডার, রাউটার চুরি করে নিয়ে যায়। 

১ নভেম্বর রাতে দক্ষিণ মন্দিয়া পূর্ব পাড়া বশর ডিলার বাড়ীতেও ঘটে চুরির ঘটনা। চোরের দল কৃষক মো: শাহজাহানের গোয়াল ঘর থেকে চারটি গাভীসহ ছয়টি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। কৃষক শাহজাহান জানান, পাঁচ লাখ টাকা ঋণের বোঝা তার মাথায়। এরমধ্যে তার পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস গাভীগুলো চুরি হলো। স্থানীয় কাউছার জানান, এক সপ্তাহে দক্ষিণ মন্দিয়া গ্রাম থেকে ১৭টি গরু চুরি হয়েছে। অথচ পুলিশ একটি গরুও উদ্ধার করতে পারেনি। 

একইদিন রাতে পৌরসভার পশ্চিম ছাগলনাইয়া ওয়ার্ডের প্রবাসী শাকিলের বাসায় ডাকাতি হয়। ডাকাতরা অস্ত্র ঠেকিয়ে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে আট ভরি স্বর্ণ ও ৫০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। ১৯ অক্টোবর রাতে পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড দক্ষিণ সতর আমিন মাস্টার বাড়ীতে গরু চুরির ঘটনা ঘটে। এ বাড়ির অসহায় বয়োবৃদ্ধ মো: মোস্তফার গোয়াল ঘর থেকে ৩ টি গরু চুরি করেছে দুর্বৃত্তরা। এ দিন দিনদুপুরে পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড দক্ষিণ সতর নদীরকূল ওবায়দুল হক ভূঁঞার ঘর থেকে ৫০ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্র। ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, এসব চুরি ডাকাতির বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাননি তারা। রাতে পুলিশের টহল না থাকায় প্রতি রাতেই চুরি-ডাকাতি হচ্ছে। 

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ছাগলনাইয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুল আউয়াল চৌধুরী বলেন, ছাগলনাইয়ার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পুলিশ এখনও নিষ্ক্রীয়। তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। তিনি বলেন, তার বাড়ির এলাকায় এখন রাত জেগে পাহারা দেন গ্রামবাসী। নিজেদের জানমাল রক্ষার্থে প্রত্যেকে যার যার এলাকায় রাত জেগে পাহারা দেওয়ার পরামর্শ দেন।

ছাগলনাইয়া থানার ওসি মো: নজরুল ইসলাম বলেন, চুরি ডাকাতি ঠেকাতে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। রাত ১২ টার পর পৌরসভা এবং ১১ টার পর গ্রামাঞ্চলের দোকানপাট বন্ধ রাখতে সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে। অপরাধ দমনে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়