দেশে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণকারী শীর্ষ চাল ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৬ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে শহরের মজমপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
কুষ্টিয়া ও রাজশাহীর তিনটি চেক ডিসঅনার মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিহাবুর রহমান।
কুষ্টিয়া মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর পুঠিয়া এলাকার ইনাম ফিড মিলের মালিক আতিকুর রহমানের সঙ্গে চাল ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদের ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল। পাবনার ঈশ্বরদীতে রশিদ ওয়েল মিলস নামে আব্দুর রশিদের একটি তেলের কারখানা আছে। রশিদের মিল থেকে ফিড মিলের কাঁচামাল কেনার জন্য চেকের মাধ্যমে এক কোটি ৩৩ লাখ ৬৪ হাজার ৮৬৭ টাকা অগ্রিম দেন আতিকুর। টাকা নেওয়ার পর দেড় বছর ধরে আটকে রেখে মালামাল ও টাকা কোনোটি দিচ্ছিলেন না রশিদ।
২০২৩ সালের ১৩ আগস্ট রাজশাহীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আব্দুর রশিদ ও তার প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মেহেদী হাসানকে আসামি করে মামলা করা হয়। সেই মামলায় আদালত সমন জারির পর আব্দুর রশিদ হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
পুলিশ জানায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সাইফুল ইসলাম চেক ডিসঅনার মামলায় আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। আদালতের আদেশের কপি কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের হাতে পৌঁছানোর পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে গত সেপ্টেম্বর মাসে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানার আদালত দুই মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। ওই দুই মামলাতে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। সব মিলিয়ে তিন মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
ওসি শিহাবুর রহমান বলেন, ‘আব্দুর রশিদ ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ছিলেন। তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা আত্মগোপনে ছিলেন। শনিবার সন্ধ্যার একটু আগেই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মজমপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাতেই তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।’
প্রসঙ্গত, আব্দুর রশিদ দেশের অন্যতম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগরের রশিদ অ্যাগ্রো ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেডের মালিক। ঋণখেলাপির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংকের দায়ের করা মামলা চলমান রয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করার অভিযোগ রয়েছে। তার ইশারায় দেশে চালের দাম ওঠানামা করতো। তিনি বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সভাপতির পদে আছেন।
আপনার মতামত লিখুন :