এএফএম মমতাজুর রহমান, আদমদীঘি (বগুড়) প্রতিনিধি : উত্তরাঞ্চলের শস্য ভান্ডার বলে খ্যাত বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় প্রায় দুসপ্তাহ আগে থেকেই আগাম জাতের আমন ধান কাটা শুরু করেছেন কৃষকরা। উপজেলায় এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার ধানের বিঘাপ্রতি ফলন বেশি এবং বাজারে ধানের দাম ভাল পাওয়ায় কৃষকরা বেশ খুশিতে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ঠরা জানায়।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা আগাম ধান কাটার পাশাপাশি রবিশস্য বোপনের প্রস্ততি নিচ্ছেন। যেমন- আলু, সরিষা, মশুড় ডাল, গম, মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি।
উপজেলার গোরগ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, দেড় বিঘা জমিতে আগাম ব্রি-৭ জাতের ধান চাষ করে ফলন পেয়েছি ৪০ মণ। এখন এ জমিতে আলু লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি। আদমদীঘি উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, একটি পৌরসভা ও ৬ টি ইউনিয়ন মিলে এবার ১৩হাজার ৩শ’ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানচাষ করা হয়েছে। এসব জমিতে ব্রি-৭, বিআর-৪৯, বিনা- ৭, সুমনা, স্বর্ণা, গুটি স্বর্ণা, আতব ও সুগন্ধি জাতের ধান রোপন করা হয়েছে।
উপেজলার কৃষকরা জানায়, এবার আমন ধান বিঘাপ্রতি এলাকা ভেদে ১৭ থেকে ১৯মন পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় প্রতি বিঘা জমিতে বীজ ও ধান রোপন থেকে শুরু করে সার, নিরানী, কীটনাশক কাটা ও মারাই পর্যন্ত বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে শ্রমিকসহ ৫হাজার টাকা। আর সদ্যকাটা ধান বাজারে বেচাকেনা চলছে মনপ্রতি প্রকার ভেদে ১হাজার ৫০ টাকা থেকে ১১শত ৬০ টাকা পর্যন্ত।
তবে শ্রমিক সংকটের কারনে অনেক কৃষকই সময় মত তাদের আগাম জাতের ধান কাটতে পারছেনা। প্রতি মৌসুমে রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, গাইবান্দাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে কৃষি শ্রমিক এই এলাকায় আসতো। সেই সব শ্রমিকরা এখনও এলাকায় না পৌঁছায় শ্রমিক সংকট হচ্ছে বলে কৃষকরা জানান। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিঠুচন্দ্র অধিকিারী জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ কৃষকদের সময় মত পরামর্শ দেয়ায় রোপা আমন ক্ষেতে সামান্য পোকার আক্রমন দেখা দিলেও ফসলের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। তাছাড়া আমন ক্ষেতের পোকা দমনে পাচিং পদ্ধতির কারনে ক্ষতিকর পোকার আক্রমন থেকে রোপা আমন ক্ষেত রক্ষায় এ পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকেরা ব্যাপক সুফল পেয়েছে। ফলে এবারও ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :