তৌহিদুর রহমান নিটল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: প্রায় ৩ মাস বন্ধ থাকার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার-লেন মহাসড়কের অবশিষ্ট নির্মাণ কাজ আবারও শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এফকন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ফিরতে শুরু করেছেন। চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে মহাসড়কটির বেহাল অংশের সংস্কার কাজ শুরু হয়। এছাড়া, মহাসড়কের ঘাটুরা এলাকায় সেতুর নির্মাণ কাজও চলমান রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত প্রায় ৫১ কিলোমিটার মহাসড়ক চার-লেনে উন্নীতকরণের জন্য ২০১৭ সালে একনেকে একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয় বিগত সরকার। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাজেট ধরা হয় ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা। তবে, করোনা মহামারিসহ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে প্রকল্পের কাজ দেরি হয়। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৫৫ শতাংশ।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নিরাপত্তাজনিত কারণে গত ৫ আগস্টের পর কয়েক ধাপে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী ভারতে চলে যান। এতে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া, দীর্ঘদিন প্রকল্পের অধীনে থাকায় মহাসড়কটিতে নিয়মিত সংস্কার কাজ হয়নি। কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল বিশ্বরোড মোড় থেকে সদর উপজেলার ধরখার পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থানের সড়কের বিভিন্ন অংশে কোথাও বড় গর্ত, কোথাও পিচ উঠে গেছে, আবার কোথাও দেবে গেছে। পিচের ঢালাই ও ইট না থাকায় মাটি দেবে ভারী যান চলাচলের সময় আটকে যায়, মাঝেমধ্যে উল্টেও যায়। প্রায়ই লেগে থাকে যানজট। শুষ্ক মৌসুমে সড়কে ওড়ে ধুলা। ভোগান্তি ও দুর্ভোগের মধ্যে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয়।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের প্রথম প্যাকেজে আশুগঞ্জ গোলচত্বর ও সরাইল বিশ্বরোড মোড়ের ৪৫০ মিটার ও দ্বিতীয় প্যাকেজের সরাইল বিশ্বরোড মোড় থেকে ধরখার পর্যন্ত পৌনে চার কিলোমিটার মিলিয়ে সড়কের সোয়া চার কিলোমিটার সড়কের অবস্থা বেশি খারাপ। গত ২৭ সেপ্টেম্বর আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন মহাসড়ক পরিদর্শন করেন সড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও সওজ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী। দীর্ঘ আলোচনার পর গত অক্টোরের শেষ সপ্তাহ থেকে প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভারত থেকে ফিরতে শুরু করেন। সম্প্রতি বেহাল অংশের সংস্কারকাজ শুরু হয়।
আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. শামীম আহমেদ বলেন, ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রকল্প এলাকায় ফিরেছেন। প্রাথমিকভাবে রাস্তার সংস্কার ও সদর উপজেলার ঘাটুরা এলাকায় সেতুর রড বাঁধাইয়ের কাজ শুরু করা হয়েছে। পরে ঘাটুরা সেতু এলাকায় ঢালাই দেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :