জেলা প্রতিনিধি,কুমিল্লা : গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের ৩ মাস পর কুমিল্লা সদর আসনের সাবেক এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিনের আরেকটি ছবি ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ছবিটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে।
ইব্রাহিম সোহেল নামের একটি ফেসবুক পেইজে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ছবিটি পোস্ট করা হয়। সেখানে লেখা হয় -‘আল্লাহ ছাড় দেয়, কিন্তু ছেড়ে দেয় না। কুমিল্লার সাবেক সম্রাট আজ আসামি।’ ফেসবুকে ছবিটি পোস্ট দেওয়ার পর কমেন্টে অনেকেই নেতিবাচক মন্তব্যও করছেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান সাবেক এমপি বাহার। পরে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের কলকাতায় মেয়ে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের অপসারিত মেয়র তাহসিন বাহার সূচনাকে নিয়ে তিনি (বাহার) আশ্রয় নেন। ভারতে পালানোর কিছুদিন পর বাহার ও সূচনার পৃথক দুটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
সরকার পতনের ৩ মাস পর গতকাল থেকে আরও একটি নতুন ছবি ভাইরাল হচ্ছে। একটি মাধ্যমে সমকালের হাতে আসা ছবিতে দেখা যায়, গায়ে সাদা শার্ট, বুক পকেটে চশমা। মাথায় কালো ক্যাপ পরিহিত বাহার কারো কাঁধে হাত রাখার ভঙ্গিতে বসে আছেন। তার মুখে ধবধবে ছোট করে রাখা সাদা দাড়ি। আত্মগোপনে যাওয়ার পর সাবেক এমপি বাহারের দাড়ির রঙও পাল্টে গেছে। আগে সবসময় বাহারের মুখে লাল দাড়ি শোভা পেলেও আত্মগোপনে যাওয়ার পর থেকে দাড়ি আর লাল কালার করছেন না।
এদিকে সরকার পতনের পর নগরীর মুন্সেফবাড়ি এলাকায় বাহারের নিজ বাড়ি ও ব্যক্তিগত কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়। বাসা থেকে লুট করা হয় তার লাইসেন্স করা অস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ অর্থ ও স্বর্ণালংকার। বাহারের সেই বাড়িতে এখন সুনসান নীরবতা। সেখানে একজন নিরাপত্তা প্রহরী ছাড়া আর কেউ থাকেন না।
পুলিশ সূত্র জানায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পৃথক মিছিল ও সমাবেশে গুলি ও হামলা চালিয়ে হতাহতের ঘটনায় বাহার ও তার মেয়ে সূচনাসহ দলীয় নেতাকর্মীরে বিরুদ্ধে এরই মধ্যে ডিএমপি, জেলার সদর দক্ষিণ ও কোতয়ালী মডেল থানায় ডজনাধিক মামলা হয়েছে।
বাহার কুমিল্লা সদর আসনে ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে টানা চারবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়াও তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের দুইবারের সভাপতি। দীর্ঘ এ সময় তার বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি, হামলা, স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার এবং সরকারি দপ্তরের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। বিদেশেও করেছেন বিপুল অর্থ পাচার। এসব অভিযোগে বাহার ও তার মেয়ে সূচনার ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। গত ২৬ সেপ্টেম্বর সব ব্যাংকে এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে বিএফআইইউ।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ভারতে আত্মগোপনে থাকা বাহার ও তার মেয়ে সূচনার হোয়াটসআপে যোগাযোগ করেও তাদের সাড়া মেলেনি। সূত্র : সমকাল
আপনার মতামত লিখুন :