শিরোনাম
◈ ট্রাম্পের কট্টর সমালোচক থেকে ভাইস প্রেসিডেন্ট, কে এই জেডি ভ্যান্স? ◈ যাত্রী সেজে চালককে হত্যার পর অটোরিকশা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৩ ◈ সাবেক মন্ত্রী আমুর আইনজীবীকে মেরে বের করে দিলেন আইনজীবীরা (ভিডিও) ◈ মির্জা আব্বাসের বক্তব্যের কড়া জবাব দিয়ে যা বললেন হাসনাত আবদুল্লাহ (ভিডিও) ◈ শহীদ আবু সাঈদের দুই ভাই যা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টার কাছে  ◈ বাংলাদেশ ও ভারত সেনাপ্রধানদের ভার্চুয়াল বৈঠক ◈ আমরা বিশ্বের কাছে যাব না, বিশ্ব যেন আমাদের কাছে আসে: প্রধান উপদেষ্টা (ভিডিও) ◈ প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথমেই যে ৭ কাজ করবেন ট্রাম্প ◈ কেউ দায়িত্বে অবহেলা করলে আমাকে জানাবেন, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেব : চসিক মেয়র শাহাদাত ◈ তিন মাসে অন্তর্বর্তী সরকার যথেষ্ট কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছে : ফখরুল

প্রকাশিত : ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ০১:১৬ দুপুর
আপডেট : ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ০২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নার্সিং ইনস্টিটিউট দখলের অভিযোগ, শ্রমিক লীগ নেতা জেলহাজতে   

ইফতেখার আলম বিশাল : বিগত আ’লীগ সরকারের শাসনামলে রাজশাহীতে পদ্মা নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রকৃত মালিককে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক প্রতিষ্ঠানটি দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শ্রমিক লীগ নেতাসহ দুইজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শরিফুল ইসলাম থানায় মামলা করেছেন। ওই মামলার প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত দুই আসামি মাহাবুর রহমান ও শ্রমিক লীগ নেতা শরীফ আলী মুনমুন বর্তমানে জেলহাজতে আছেন।
 
মামলা সূত্রে জানা যায়, বাদী শরিফুল ইসলাম তার পরিচালনায় রাজশাহী নগরীর শালবাগান বিমানবন্দর রোডে ৪ তলা বিল্ডিং ভাড়া নিয়ে পদ্মা নার্সিং ইনস্টিটিউট নামে একটি প্রতিষ্ঠান শুরু করার পরিকল্পনা করেন। এরই প্রেক্ষিতে যাবতীয় ইক্যুইপমেন্ট সামগ্রী ক্রয় পূর্বক যথাযথ ল্যাব ও ক্লাসরুম সন্নিবেশিত করে প্রতিষ্ঠানের জনবল নিয়োগ করে বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিল কর্তৃক প্রণীত নিয়ম অনুসারে প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক একাউন্ট এবং দশ লাখ টাকার এফ.ডি.আর সম্পাদনও করেন তিনি।

মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম একটু স্থবির হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় আমেনা মেডিকেল এসিসটেণ্ট ট্রেনিং স্কুল তালাইমারী এর পরিচালক বিবাদী মাহাবুর রহমান বাদী শরিফুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করেন। তখন মাহাবুর রহমান তাকে মৌখিক প্রস্তাব দেন যে, তালাইমারীতে তার আমেনা ম্যাটস্ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। ওই ভবনেই যদি পদ্মা নার্সিং ইনস্টিটিউটটি পরিচালনা করা হয় তাহলে খরচ সংকুলান হবে। এ প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে শরিফুল ইসলাম সেখানে পদ্মা নার্সিং ইনস্টিটিউট স্থানান্তর  করেন। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ২০২০ সালের পহেলা জুন পদ্মা নার্সিং ইনস্টিটিউটের (স্বারক নম্বর ৫৯.০০.০০০০.১৪৩.০৬.০২.২০১৮-১৩০/১(৬)) অনুমোদন দেয়।

সে সময় লোভের বশবর্তী হয়ে মাহাবুর রহমান ও শরীফ আলী মুনমুন ইনস্টিটিউটি দখলের পায়তারা শুরু করেন। ওই দুই জন মালিকানা নিজেদের নামে নিতে ব্যাপক তোড়জোড় শুরু করেন এবং বাদি শরিফুল ইসলামকে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে ২০২১ সালের পহেলা মার্চ সকাল আনুমানিক ১০টা ৪০ মিনিটে শরিফুল ইসলামকে ফোন করে নগরীর জিরোপয়েন্টে জলিল বিশ্বাস মার্কেটে ডাকেন ওই দুইজন। শরিফুল ইসলাম সেখানে উপস্থিত হলে আসামি শরিফ আলী মুনমুন তাকে বলেন যে, তুমি বাইরের লোক। ১০ লাখ টাকা চাঁদা না দিলে তুমি প্রতিষ্ঠান চালাতে পারবে না। সে সময় তারা আরো ভয়ভীতি দেখিয়ে বলেন যে, চাঁদার টাকা না দিতে পারলে আমাদের নামে প্রতিষ্ঠান স্ট্যাম্পে লিখে দাও, আমরা প্রতিষ্ঠান চালাবো।

এসময় কয়েক ঘণ্টা তাকে আটকিয়ে রাখেন মাহাবুর রহমান ও তার লোকজন। পরে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্য দেখিয়ে তিনশত টাকার একটি স্ট্যাম্পে শরিফুল ইসলামকে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করে নেন। এরপর নার্সিং কাউন্সিল কর্তৃক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের নাম পরিবর্তন করে মালিক বনে যান। আর শরিফুল ইসলামকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তাকে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেয়া হয়।

শরিফুল ইসলাম বলেন, এতে তার প্রায় দুই কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি সাধিত হয় এবং মানসম্মান ক্ষুণ্ন হয়। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটসহ নানা কারণে তিনি এতদিন কোন আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেননি। এর সঙ্গে বিবাদীরা নানাভাবে লাগাতার হুমকি দিয়ে আসছিলেন তাকে। বর্তমানে পরিবেশ অনুকূলে হওয়ায় চলতি বছরের ২ সেপ্টেম্বর মামলাটি দায়ের করেন তিনি।

পরবর্তীতে মামলার প্রেক্ষিতে দুই অভিযুক্ত মাহাবুর রহমান ও শরীফ আলী মুনমুন আদালত থেকে আপসের শর্তে জামিন নেন। পরের ধার্য্য তারিখের আগেই আপোস করে নেয়ার কথা থাকলেও তারা তা করেননি। সর্বশেষ ২৭ অক্টোবর আবার আদালতে হাজির হলে অভিযুক্ত দুই জনকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন আদালত। শরিফুল ইসলাম আরো অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষ বিষয়টি নিয়ে তাকে বিপদে ফেলতে নানাভাবে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরমধ্যেই তার বিরুদ্ধে চলতি বছর ১৪ অক্টোবর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন মাহাবুর রহমান। শুধু তাই না, তার দায়ের করা মামলা উঠিয়ে নিতে তাকে নানাভাবে হুমকিও দেয়া হচ্ছে অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে। এ নিয়ে তিনি প্রাণনাশের আশঙ্কাতেও ভূগছেন বলে জানান। 
তবে অভিযুক্ত মাহাবুর রহমান ও শ্রমিক লীগ নেতা শরীফ আলী মুনমুন কারাগারে থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়