শিরোনাম
◈ সৌদি আরব যাত্রায় রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ ◈ বিজয়ী ট্রাম্পকে কমলার ফোন ◈ সাকিব আল হাসানের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ ◈ খালেদা জিয়া নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে যে বার্তা দিলেন  ◈ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কঠিন হয়ে পড়তে পারে: মাইকেল কুগেলম্যানের মন্তব্য ◈ ভারসাম্যহীন ঋণ বিতরণে ঝুঁকিতে ১৩ ব্যাংকের আমানত ◈ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের পোষ্টার চায় না সাধারণ শিক্ষার্থীরা, প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ (ভিডিও) ◈ ড. ইউনূসের ৫৯ সেকেন্ডের এক হোয়াচসঅ্যাপ কলে দেশে আসেন আশিক ◈ চট্টগ্রামে হামলায় ইসকন সমর্থকরাই জড়িত বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ, ইসকনের অস্বীকার ◈ চট্টগ্রাম হাজারী গলিতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ৮০ জন আটক

প্রকাশিত : ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:৩৭ রাত
আপডেট : ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ০৪:০৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চট্টগ্রামে হামলায় ইসকন সমর্থকরাই জড়িত বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ, ইসকনের অস্বীকার

চট্টগ্রাম ব্যুরো : আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ বা ইসকন সমর্থকরা ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে চট্টগ্রাম মহানগরের হাজারী গলিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছিলে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)। তবে ওই ঘটনার সঙ্গে নিজেদের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছে ইসকন।

আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইন্সের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিএমপির উপকমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন।

হামলায় পুলিশের ৯ জন আহত হওয়ার তথ্য দিয়ে রইছ উদ্দিন বলেন, ‘ইসকনকে নিয়ে দেওয়া একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে ওসমান আলী নামে এক ব্যক্তিকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে- এমন তথ্য ৯৯৯-এ পেয়ে আমাদের কোতোয়ালি থানা পুলিশ রেসপন্স করে। তারা সেখানে গেলে অবরুদ্ধ ওসমান নামে ব্যক্তিকে উশৃঙ্খল জনতা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরিস্থিতির অবনতি হলে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ এবং সেনাসদস্যরাসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হয়। ছিনিয়ে নেওয়ায় বাধা দেওয়ায় উশৃঙ্খল জনতা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ইটপাটকেল ও এসিড নিক্ষেপ করলে আমাদের ৯ জন সদস্য আহত হয়। যারমধ্যে একজন এসিড দগ্ধ হয়েছেন।’

হামলার ঘটনায় ৫৮২ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে বিপুল সংখ্যক ব্যক্তিকে আটক করা হলেও যাচাই বাছাই করে আমরা ৮২ জনকে আটক দেখিয়েছি। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ইসকন সমর্থক। কয়েকজন মুসলিম থাকতে পারে। এটিও যাচাই-বাছাই চলছে।’

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সিএমপির এ উপকমিশনার বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তারা ‘‘জয় শ্রীরাম’’ বলে স্লোগান দিয়েছে। আর ফেসবুকে যে মিথ্যা প্রচার-প্রচারণা করা হয়েছে সবকিছু বিচার বিশ্লেষণ করে জানতে পেরেছি, ইসকন সমর্থকরাই জড়িত রয়েছে।’

ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা রয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে রইছ উদ্দিন বলেন, ‘আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। কোনো রাজনৈতিক মদদ রয়েছে কি না, সেটিও তদন্ত করা হচ্ছে। শান্ত নগরীকে যারা বিশৃঙ্খল করতে চায়, তাদের বিষয়ে আমাদের কার্যক্রম চলমান। সুতরাং এইরকম একটি অস্থিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে যেন নাশকতা বা লুটতরাজ করতে না পারে সেই কার্যক্রম আমাদের আগেও ছিল, এখনো রয়েছে।’

ইসকনকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া ওসমান আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে সিএমপির এ কর্মকর্তা বলেন, ‘ওসমান আলী বর্তমানে হেফাজতে আছেন। যদি এখানে কেউ ধর্মীয়ভাবে সংক্ষুব্ধ হয়েছে- এমন অভিযোগ ওসমান আলীর বিরুদ্ধে নিয়ে আসে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’

এদিকে হাজারী গলির ঘটনার বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইসকন। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে ইসকন বলেছে, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত এ ধরনের কোনো ঘটনার সাথে ইসকনের সম্পৃক্ততা নেই। পাশাপাশি বিভ্রান্তিমূলক তথ্য বন্ধ করারও দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে।

এ ধরনের ঘটনা রোধে আগে থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে বিবৃতিতেঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করার পাশাপাশি কোনো নিরীহ লোকজন যেন হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়েও অনুরোধ করা হয়।

উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে ইসকনকে নিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করেন হাজারী গলির মিয়া শপিং সেন্টারের মোল্লা স্টোর নামে দোকান মালিক ওসমান আলী। আর সেই পোস্টে ক্ষুব্ধ হয়ে কাল বিকেল ৪টার দিকে ইসকন সমর্থকরা ওই দোকানে হামলা চালায় ও ওসমানের ওপর আক্রমণ চালায়।

একপর্যায়ে তাকে অবরুদ্ধ করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এ সময় ইসকনের কয়েক শ সমর্থক পোস্টদাতা ওসমানকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করে। কিন্তু পুলিশ ওসমানকে উদ্ধার করে হেফাজতে নিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর চড়াও হয় বিক্ষুব্ধরা। এরপর তারা পুলিশ ও সেনাসদস্যদের ওপর ‘এসিড’ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

একপর্যায়ে হামলাকারী ইসকন সমর্থকরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। এরপরই জড়িতদের গ্রেপ্তারে রাত আনুমানিক ১১টা পর্যন্ত অভিযান চালায় যৌথবাহিনীর সদস্যরা।

হামলায় পুলিশের নয় সদস্য আহত হন। আহতরা হলেন সিএমপির কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার মো. মাহফুজুর রহমান, কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম, মো. বিপ্লব ব্যাপারী, আবু সায়েম সেজান, মো. সাইদ হাসান, ফয়েজ, নাহিম আশিকুর ও শাহাজাহান হোসেন শাওন। এদের মধ্যে ফয়েজ এসিডদগ্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়