এম আর আমিন, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি জেলার চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ভাঙন থেকে জনবসতি, ফসলি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বনজ সম্পদ রক্ষার জন্য খাগড়াছড়ি শহর ও তৎসংলগ্ন অবকাঠামো ভাঙন হতে সংরক্ষণ প্রকল্প দ্রুত গতিতে বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
নদীর দুই পাড়জুড়ে পুরোদমে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। ভাঙনকবলিত চেঙ্গী ও মাইনি নদীর পাড় এখন ধীরে ধীরে দৃষ্টিনন্দন পর্যটন এলাকায় পরিণত হচ্ছে।ভাঙন ঠেকাতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করায় স্বস্তি ফিরছে দুই পাড়ের মানুষের মধ্যে।
খাগড়াছড়ি চেঙ্গী নদীর পার ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। নদী তীরের মানুষের রক্ষা হবে বসতবাড়ি, ফসলি জমি, বাগান ও সড়ক।
সদর উপজেলার রাজবাড়ি, যুবরাজ কাবারীপাড়া, পল্টনজয়পাড়া, চেঙ্গী ব্রীজ, গঞ্জপাড়া, রাজ্যমনিপাড়া, কালাডেবাপাড়া, দক্ষিণ গোলাবাড়ি, বটতলী, ফুটবিল, কমলছড়ি, এছাড়া দীঘিনালা উপজেলার মাইনী, হাসেনপুর, পানছড়া, তারাবুনিয়া, বাবুছড়া ও মেরুন ইউনিয়নে কয়েক লাখ মানুষের নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে।
এক সময় বৃষ্টি হইলে আতংকিত উঠতো খাগড়াছড়ি চেঙ্গি ও মাইনি নদীরের পাড়বাসিরা। পাহাড়ি ঢলে ও নদী ভাঙন ভয়ে থাকতো। এর মধ্যেই নদীর ভাংগনে ঘরবাড়ির হারিয়েছে বহুপরিবার।
খাগড়াছড়ি চেঙ্গি ও মাইনি নদীর তীররক্ষার ব্লক স্হপনায় বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। এলাকাবাসীরা জানান,ব্লক বসনো হইলে নদীর পাড় আর ভাঙবে না। আমাদের ভিটাবাড়ি ও ফসলি জমি রক্ষা পাবে।এতে খাগড়াছড়ি ত্রিশটি গ্রামের কয়েক লাখ মানুষের ঘরবাড়ি রক্ষা পাবে।
৫৮৬ কোটি টাকার এ প্রকল্পে ১৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০.৮১৫ কিলোমিটার নদীর তীর প্রতিরক্ষায় ব্লক তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পে চেঙ্গী নদী ৩৪.৫৫ কিলোমিটার এবং মাইনি নদী ২৩.৬০ কিলোমিটার ড্রেজিংও রয়েছে। গত বছরের ১৬ অক্টোবর খাগড়াছড়ির সাথে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, এ প্রকল্পের আওতায় তীর প্রতিরক্ষা প্যাকেজ ৩৫টি, ড্রেজিং ৫টি, চর অপসারণ ২টি, মেইনটেনেন্স ড্রেজিং ২টি এবং বনায়ন রয়েছে ১টি। সর্বমোট ৪৫টি প্যাকেজে কাজ রয়েছে। তীর প্রতিরক্ষা প্যাকেজের মধ্যে খাগড়াছড়ি সদর, দীঘিনালা, পানছড়ি, গুইমারায় উপজেলায় কাজ চলছে।প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি :প্রতিরক্ষা কাজ= ৩৫% চেংগী ড্রেজিং= ১৩% মাইনী ড্রেজিং = ২৫%।
কাজের গুনগত মানের বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান বলেন, প্রকল্পের গুণগত মান নিয়মিত টাস্কফোর্স কর্তৃক মনিটর করা হয় এবং বুয়েট টেস্টের মাধ্যমে গুণগত মান নিশিচ করা হয়।আশা করছি গুণগত মান বজায় রেখেই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পওর (২) প্রকৌশলী ডা. তানজির সাইফ আহমেদ বলেন,এই নদীতে পানির ধারণ ক্ষমতা নেই। পাহাড়ি ঢলে প্রচুর পানি আসে। নদীর তীরের সব গ্রাম প্লাবিত হয়। এখানে কখনোই নদী খনন হয়নি। তাছাড়া প্রতি বছর নদীতে প্রচুর পলি জমে। নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ায় নিয়মিত বন্যা হচ্ছে।কয়েকটি লোকশনে আমরা নদীর তীররক্ষা কাজ করছি প্রায ১০ কিলোমিটার কাজের ৩৫% শেষ হয়েছে।নদীর তীরে পুরোদমে আমাদের কর্মযজ্ঞ চলছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই আমরা কাজ সম্পন্ন করতে পারবো।
আপনার মতামত লিখুন :