শিরোনাম
◈ যৌথবাহিনীর অভিযানে মোহাম্মদপুরে গ্রেফতার ৪৫ ◈ সাবেক ডিএমপি কমিশনারকে বিমানবন্দরে আটকে দিলো ইমিগ্রেশন পুলিশ ◈ ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে সবার ওপরে ছিল কক্সবাজার ◈ দেশের জন্য যুদ্ধ না করেও জালিয়াতি : বাতিল হচ্ছে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ ◈ ‘কৃষি ট্রেন’ আয় ৩৬০ টাকা, খরচ ৯ লাখ টাকা ◈ এবার ইসরাইলের বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন হিজবুল্লাহর! ◈ সুষ্ঠু নির্বাচনে শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকারই ‘যথেষ্ট নয়’ ◈ ক্রিকেট বোর্ড শান্তকেই অধিনায়ক হিসেবে রাখতে চায় ◈ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-০ গোলে হারালো বার্সেলোনা ◈ পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের পিচ কৌশলের সমালোচনা করলেন শোয়েব আখতার

প্রকাশিত : ২৭ অক্টোবর, ২০২৪, ১০:৩৬ দুপুর
আপডেট : ২৭ অক্টোবর, ২০২৪, ০১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কাপ্তাই হ্রদে ৮০ প্রজাতির মাছ, বছরে আসছে কোটি টাকার রাজস্ব

ডেস্ক রিপোর্ট : ষাটের দশকে রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে কর্ণফুলী নদীর গতিপথে বাঁধ দিয়ে যেই সুবিশাল জলাশয় অর্থাৎ কৃত্রিম হ্রদ তৈরি হয়েছে, কালের পরিক্রমায় সেটিই এখন অফুরন্ত মাছের ভাণ্ডার নামে খ্যাত। এ হ্রদে ভরা মৌসুমে পর্যাপ্ত পানি থাকায় মিলছে দেশি-বিদেশি অন্তত ৭০ থেকে ৮০ প্রজাতির ছোট-বড় মাছ।

বিগত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কাপ্তাইসহ ৬টি অবতরণ কেন্দ্রে মোট ৭ হাজার ৬৩৭ মেট্রিক টন মাছ পাওয়া যায়, এতে ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে  মোট শুল্ক আদায় হয়েছে ১৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

জানা যায়, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এশিয়ার বৃহত্তম কাপ্তাই কৃত্রিম হ্রদের উৎপাদনশীলতা, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য চাষের প্রযুক্তি উদ্ভাবনসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ৮০’র দশক থেকে গবেষণা করে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। এ হ্রদে ৮০ প্রজাতির মিঠা পানির মাছ রয়েছে। এর মধ্যে ৭০ প্রজাতির মাছ হচ্ছে দেশি, আর বাকি ১০টি বিদেশি প্রজাতির।

গত দেড় দশকে কাপ্তাই হ্রদে ৬ প্রজাতির মাছ বেড়েছে। দুই বছর আগে এক গবেষণায় কাপ্তাই হ্রদে প্রায় ৮০ প্রজাতির মাছের অস্তিত্ব মিলেছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে বর্তমানে ৪২টি প্রজাতির মাছ এ হ্রদ থেকে বাণিজ্যিকভাবে আহরণ- পরিবহন ও দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হচ্ছে।

বিএফডিসি সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৫-৬৬ অর্থ বছরে মাত্র ১২০৬.৬৩ মেট্রিক টন মৎস্য উৎপাদনের মাধ্যমে রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদের বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু হয়।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৪-১৫ সালে ৮৬৪৪ মেট্রিক টন মাছ আহরণের বিপরীতে রাজস্ব আয় হয়েছে ৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। পরের বছর অর্থাৎ ২০১৫-১৬ সালে ৯৫৮৯ মেট্রিক টন মাছ আহরণের বিপরীতে রাজস্ব আয় হয়েছে ১০ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এ ছাড়া ২০১৬-১৭ সালে ৯৯৭৪ মেট্রিক টন মাছ আহরণের বিপরীতে রাজস্ব আয় হয়েছে ১২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ খাতে আয় ছিল ১৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। মৎস্য আহরণ হয় রেকর্ড ১০ হাজার ৫৮৭ মেট্রিক টন। ২০১৮-১৯ এ আয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ কোটি ৬০ লাখ টাকায়। এভাবে পালাক্রমে বেড়েই চলছে মৎস্য আহরণ ও রাজস্ব আয়ের রেকর্ড; যা বিগত বছরগুলোর তুলনায় কাপ্তাই হ্রদে সর্বোচ্চ আয়।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন রাঙামাটির ব্যবস্থাপক কমান্ডার আশরাফুল আলম ভূঁইয়া জানান, বিগত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাঙামাটির অধীনে কাপ্তাইসহ ৬টি অবতরণ কেন্দ্রে মোট ৭ হাজার ৬৩৭ মেট্রিক টন মাছ পাওয়া যায়, এতে ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে অবতরণ করা মাছ থেকে মোট শুল্ক আদায় হয়েছে ১৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

তিনি সময় সংবাদকে জানান, বিগত দিনে মাছের প্রজনন ও বংশবিস্তারে মৎস্য শিকার বন্ধ থাকাকালীন সময়ে নিজস্ব হ্যাচারিতে উৎপাদিত ৫৬ টন রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছের পোনা কাপ্তাই হ্রদে অবমুক্ত করা হয়েছে। এ পোনাগুলো উৎপাদনে করপোরেশনের খরচ হয়েছে এক কোটি টাকা।
 
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কাপ্তাই হ্রদ এক বছরের জন্য সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসককে ৫৫ লাখ টাকা ইজারা প্রদান করে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে ১৫ বছরে বিলুপ্ত হয়েছে সিলন, দেশি সরপুঁটি, ঘাউরা, বাগাড়, মোহিনী বাটা ও পাঙাশ মাছ।  বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির মধ্যে রয়েছে মহাশোল, মধু পাবদা, পোয়া, ফাইস্যা, গুলশা ও ঘনিয়া মাছ। ক্রম-হ্রাসমান প্রজাতির মধ্যে রয়েছে রুই, কাতল, মৃগেল, বাঁচা, পাবদা ও চিতল প্রভৃতি প্রজাতির মাছ। তবে এমন উৎপাদন অব্যাহত রাখলে প্রতিবছর হ্রদে সব ধরনের মাছের বংশবৃদ্ধির জন্য মে থেকে তিন-চার মাস মাছ ধরা, বাজারজাতকরণ ও পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকে প্রশাসনের।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এ সময় হ্রদে মাছ ধরা জেলেদের ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তার ব্যবস্থা এবং নিষেধাজ্ঞার সময়ে মোবাইল কোর্টের পাশাপাশি নৌ-পুলিশ মনিটরিং চালায়।

সুত্র : সময় টিভি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়