রিংকু রায় : [২] নেত্রকোণার খালিয়াজুরী মেন্দিপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুরে এক ফিশারিতে পানি প্রবেশ করাতে সোমবার রাতের আঁধারে একটি বাঁধ কেটে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ইজারাদারের বিরুদ্ধে। এতে বিভিন্ন হাওরে পানি প্রবেশ অব্যাহত থাকায় মদন, ইটনা ও খালিয়াজুরীর মেন্দিপুর ইউনিয়নের ৭টি গ্রামের জমির ফসল তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
[৩] এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ওবায়দুল হক বাদী হয়ে খালিয়াজুরী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
[৪] উপজেলা প্রশাসন, পাউবো সহ স্থানীয় কৃষকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ওই বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে। জানা গেছে, উপজেলার মেন্দিপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামে নন্দের পেটনার বাঁধ। হাওরের ফসল রক্ষায় এই বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) অধীন। এই বাঁধটি কয়েকবছর আগে পুনঃনির্মাণ ও সংস্কার করা হয়েছে। বাঁধ এলাকার পাশে পেটনা ফিশারির ইজারা নেয়া সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লোকমান হেকিম ও তার লোকজন সোমবার রাতে ২০ফুট বাঁধটি কেটে দেয়। এ খবর পেয়ে এলাকার কৃষক ও জনতা ঘটনাস্থালে গিয়ে ওই সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদককে ধাওয়া করে এবং তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি বাঁধে ফেলে দেয়।
[৫] মেন্দিপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুরের কৃষক খোকন মিয়া, গোলাপ মিয়া ও সুজন সহ অনেকেই অভিযোগ করে জানান, নন্দের পেটনার বাঁধ এলাকায় পেটনা ফিশারির জন্য বাঁধটি সোমবার রাতে মেন্দিপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লোকমান হেকিম কেটে দেয়। তারা আরো জানান, এটি পুরনো ধনু নদের পাশের বিল। নদের পানি আসার কথা না। স্রোত কম। কিন্তু মাছ শিকারের জন্য ভেঙে দেয়ায় মদন পর্যন্ত টানের জমিগুলো ডুবে যেতে পারে। প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে কোন রকমে ভেঙে যাওয়া বাঁধ আটকে রাখা হয়েছিল, আর এখন নিজেরা কেটে দিয়ে কৃষকদের ফসল ডুবিয়ে দেয়ার পায়তাঁরা করছে। এই ধরনের অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন এলাকার কৃষকরা। বাঁধ কেটে দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পাউবোর জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী এমএল সৈকত।
[৬] তিনি জানান, এটি নন্দের পেটনার বাঁধ। গত বছরের পুরনো। এটি ভাঙার কোন কারণ ছিলো না। এটি পুরনো ধনুর নদের পাশে বাঁধ। এটিকে ফিশারির জন্য লীজ নেয়া ইজারাদাররা ভেঙে ফেলেছে। বাঁধ মেরামতে পাউবোর কর্মচারী ও শ্রমিকদেরকে কাজে লাগিয়েছি। এ প্রসঙ্গে ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লোকমান হেকিমের সাথে কথা বলতে চাইলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
[৭] খালিয়াজুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এএইচএম আরিফুল ইসলাম জানান, কেটে দেয়া বাঁধ সবার সহযোগিতায় বাঁধ মেরামত করা হয়েছে। ইজারাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইতিমধ্যে পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। খালিয়াজুরী থানার ওসি মজিবুর রহমান জানান, বাঁধ কাটার বিষয়ে অভিযোগকারী থানায় এসেছেন। অভিযোগ করার পরে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সম্পাদনা : জেরিন
আপনার মতামত লিখুন :