জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরে পারিবারিক কলহের জেরে ফাতেমা বেগম নামের এক গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগে স্বামী ও ভাসুরকে আটক করেছে পুলিশ। এর নিহত ফাতেমা বেগমকে হত্যার অভিযোগে পরিবারের সদস্যরা নিহতের স্বামী রাজু (২৫) ও ভাসুর বাবলুকে (২৭) বেঁধে রাখে। পরে পুলিশ তাদের দুজনকে আটক করেছে।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদনগর গ্রামের নিহত ফাতেমার বাবার বাড়ি থেকে অভিযুক্ত দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। এর আগে ভোরে ওই গ্রামের একটি পুকুরে ফাতেমার মরদেহ ভাসতে দেখা যায়।
জানা গেছে ফাতেমা অভিযুক্ত রাজু রাজু পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক। তার আরও এক স্ত্রী রয়েছে। ফাতেমা তার প্রথম স্ত্রী। ফাতেমার স্বজনদের অভিযোগ, যৌতুকে জন্য নির্যাতন করে ফাতেমাকে হত্যা করা হয়ছে। এর আগেও তাকে নির্যাতন করা হতো।
নিহতের বড় বোন রাবেয়া আক্তার বলেন, বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার বোনকে জ্বালাতন করতো, যৌতুক চাইতো। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে জমি বিক্রি করে তাকে বিদেশ পাঠানো হয়। এক মাসের মাথায় বিদেশ থেকে চলে এসে আমার বোনকে আবার নির্যাতন শুরু করে।
বড় ভাই মো. আবদুল্লাহ বলেন, প্রায় ১৫ দিন থেকে আমার বোন ও তার স্বামী আমাদের বাড়িতে ছিল। সোমবার ভোরে ঘরের পাশের একটি পুকুরে আমার বোনের মরদেহ পাওয়া যায়। ঘরে তারা দুইজন ও তাদের মেয়ে ছিল। আমার বোনকে তার স্বামীই হত্যা করে মরদেহ পুকুরে ফেলে দেয়। তার গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমরা টাকা দিয়ে রাজুকে বিদেশ পাঠিয়েছিলাম। এরপরও আমার বোনকে শান্তিতে রাখেনি। কয়েক মাস আগে রাজু অন্যত্র বিয়ে করে। এ নিয়ে তাদের সংসারে অশান্তি আরও বেড়ে গিয়েছিল।
স্থানীয় নারী ইউপি সদস্য তাজ নাহার বেগম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল যাই। ফাতেমাকে হত্যার অভিযোগে তার স্বামী রাজুকে বাড়ির লোকজন গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। অভিযুক্ত রাজু নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, রাতে আমরা একসাথে ঘুমিয়েছিলাম। ভোররাতে পুকুরে গোসল করতে গিয়ে ফাতেমা আর ঘরে আসেনি। কে বা কারা তাকে মেরেছে, আমি জানি না।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কায়সার হামিদ বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইজনকে থানায় নেওয়া হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর হয়। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :