শিরোনাম
◈ অক্সফোর্ড কলেজে শতাব্দীর রীতি: দাস নারীর খুলিতে তৈরি পাত্রে পরিবেশন হতো পানীয়! ◈ বেসরকারি খাতে ঋণের চাহিদা কম: বাণিজ্যিক ব্যাংকের ওপর সরকারের নির্ভরতা বেড়েছে ◈ বাংলাদেশের সঙ্গে এলএনজি সরবরাহ চুক্তি নবায়ন করবে কাতার ◈ বিভিন্ন জায়গায় ঝটিকা মিছিল, গ্রেফতার ১০ ◈ আওয়ামীপন্থি সেই ৬১ আইনজীবীর হাইকোর্টে জামিন ◈ কুয়েট ভিসির অপসারণের দাবিতে দেড় ঘণ্টা অবরোধের পর কর্মসূচি ঘোষণা করে শাহবাগ ছাড়ল শিক্ষার্থীরা (ভিডিও) ◈ মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের সংস্কার হচ্ছে, ভাঙচুর নয় ◈ পারভেজ হত্যা: ‘দুই বান্ধবীকে’ খুঁজছে পুলিশ ◈ ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল: এবার নতুন তথ্য দিলেন ভারতের সাবেক বাণিজ্য কর্মকর্তা ◈ সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা এডিসি নাজমুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

প্রকাশিত : ০২ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:১২ দুপুর
আপডেট : ০৬ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রায়ে জিতলেও কী চট্টগ্রামের মেয়র পদে বসতে পারবেন বিএনপি নেতা শাহাদাত?

২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী মেয়র নির্বাচিত হন। এতে রেজাউল করিম চৌধুরী ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট এবং তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শাহাদাত হোসেন ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট পান বলে উল্লেখ করা হয়।  সূত্র : বিবিসি বাংলা

একই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি চসিকের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে চট্টগ্রামের প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক খাইরুল আমিনের আদালতে মামলা করেন বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত।

মঙ্গলবার মামলার রায়ে শাহাদাত হোসেনকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা করেছেন আদালত।  রায়ে আরও বলা হয়েছে, রায় ঘোষণার ১০ দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করতে হবে। 

শাহাদাতের আইনজীবী আরশাদ হোসেন আসাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘চসিক নির্বাচনের ফলাফল বাতিলের বিষয়ে দায়ের করা মামলায় আদালত সব প্রমাণ ও সাক্ষী যাচাই করে ডা. শাহাদাতকে মেয়র ঘোষণা করেন। ’

শাহাদাত হোসেন বলেন, মামলার পর সাড়ে তিন বছর ধরে লড়েছি। এতদিন পর আদালত যে রায় দিয়েছে সেটি একটি ঐতিহাসিক রায়। আমি আশা করবো দ্রুত যেন এই রায়টি বাস্তবায়ন করতে উদ্যোগ নেয় নির্বাচন কমিশন।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে নিম্ন আদালতের রায়ের পরই কি দায়িত্বে বসতে পারবেন এ বিএনপি নেতা?

জবাবে নির্বাচন কমিশন বলছে, রায়ের পূর্ণাঙ্গ আদেশ না দেখে এখনই তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।

ইসি সচিব শফিউল আজিম বিবিসি বাংলাকে বলেন, ইসির লিগ্যাল উইংয়ের সঙ্গে কথা বলেই আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এখন নির্বাচন কমিশন নেই। যে কারণে হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত দেওয়া যাবে না।

হোসেনকে যখন মেয়র ঘোষণা করে রায় দেওয়া হয়েছে তখন এ সিটি করপোরেশনসহ দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়রকে অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে সরকার।

নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণা করলেও এখনই তিনি চেয়ারে বসতে পারবেন কী না তার জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে।

সাবেক স্থানীয় সরকার সচিব আবু আলম শহীদ খান বলেন, ট্রাইব্যুনাল ভোটের প্রায় সাড়ে তিন বছর পর রায় দিয়েছে। এখন এ রায়ের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন যদি উচ্চ আদালতে আপিল করে তখন এ সিদ্ধান্ত তো আটকে যাবে। কবে নাগাদ পূর্নাঙ্গ রায় আসবে সেটা কেউ জানে না।

যে সব অভিযোগে মামলা হয়েছিল

আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

এ ভোটে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীকে বিজয়ী ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

এ ভোটে রেজাউল করিম চৌধুরী পেয়েছিল ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট, আর বিএনপি নেতা শাহাদাত হোসেন পেয়েছিল ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট।

ভোটের এক মাস পর ২৪ ফেব্রুয়ারি হোসেন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে ভোটের ফলাফল বাতিল চেয়ে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।

এ মামলায় তিনি নির্বাচনে ফল জালিয়াতি, ইভিএমে কারচুপি ও ভোটের হারের নানা অসঙ্গতির অভিযোগ দায়ের করেন।

মামলায় বিবাদি করা হয়েছিল রেজাউল করিম চৌধুরী, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিবসহ আরও বেশ কয়েকজনকে।

কিন্তু এতদিন ওই মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। গত ১৯ অগাস্ট পর্যন্ত এ পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিম চৌধুরী।

মেয়র হিসেবে কী শপথ নিতে পারবেন?

সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মেয়াদ পাঁচ বছর। নির্বাচন ও শপথ নেওয়ার পর এখন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়াদ আছে ১ বছর ৪ মাস।

মঙ্গলবার আদালত যে রায় দিয়েছে সেখানে বলেছে আগামী দশ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশ করতে হবে এই রায়ের আলোকে।

এ রায়ের পর নির্বাচন কমিশন সচিব আজিম বলেন, এটা বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনালের আদেশ। পুরো রায়টা আমরা হাতে পেলে বুঝতে পারব আমাদের লিগ্যাল বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেব। সেক্ষেত্রে উচ্চ আদালতে যাওয়া হবে কী না এখনই বলা যাচ্ছে না।

আইন অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য নির্বাচন কমিশনের হাতে সময় থাকে ৩০দিন। এ সময় পর্যন্ত ইসি কোন গেজেট প্রকাশ করতে পারবে না। কেননা আপিলের সময় পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনকে অপেক্ষা করতে হবে।

অন্যদিকে নির্বাচনের গেজেট প্রকাশ করতে নিয়ম অনুযায়ী ফুল কমিশনের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু বিগত কমিশন পদত্যাগ করায় এ নিয়ে নতুন করে জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সাবেক স্থানীয় সরকার সচিব আবু আলম শহীদ খান বলেন, একটি রায় আসলো সাড়ে তিন বছরে। এখন নির্বাচন কমিশন আপিল করার পর তার শুনানি শেষ হতে হতে যদি আরেকটি ভোট এসে গেলে তখন ওই রায় কোন কাজে লাগবে?

এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেক্ষেত্রে রায়ের পাশাপাশি তাতে পর্যালোচনা ও পূর্ণাঙ্গ আদেশ কী আছে সেটি দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছে ইসি সচিবালয়।

তবে শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ১০ দিনের মধ্যে গেজেট দিতে বলা হয়েছে। আমি চাইব ইসি যেন আদালতের আদেশ মেনেই পদক্ষেপ নেয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়