শিরোনাম
◈ বাংলাদেশের সঙ্গে এলএনজি সরবরাহ চুক্তি নবায়ন করবে কাতার ◈ বিভিন্ন জায়গায় ঝটিকা মিছিল, গ্রেফতার ১০ ◈ আওয়ামীপন্থি সেই ৬১ আইনজীবীর হাইকোর্টে জামিন ◈ কুয়েট ভিসির অপসারণের দাবিতে দেড় ঘণ্টা অবরোধের পর কর্মসূচি ঘোষণা করে শাহবাগ ছাড়ল শিক্ষার্থীরা (ভিডিও) ◈ মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের সংস্কার হচ্ছে, ভাঙচুর নয় ◈ পারভেজ হত্যা: ‘দুই বান্ধবীকে’ খুঁজছে পুলিশ ◈ ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল: এবার নতুন তথ্য দিলেন ভারতের সাবেক বাণিজ্য কর্মকর্তা ◈ সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা এডিসি নাজমুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ◈ এএইচএফ কাপ হ‌কি‌তে থাইল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনা‌লে বাংলাদেশ ◈ দোহায় বাংলাদেশের চার নারী ক্রীড়াবিদকে অ‌তি‌থি‌দের স‌ঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন ড. ইউনূস

প্রকাশিত : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৬:৫৩ বিকাল
আপডেট : ০১ মার্চ, ২০২৫, ০৯:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

হরিরামপুরে চতুর্থ শ্রেণীর দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে

শুভংকর পোদ্দার, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ২৬নং মানিকনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ জাকারিয়া খানের বিরুদ্ধে চতুর্থ শ্রেণীর দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থীর পরিবার।

রবিবার (২৯) সেপ্টেম্বর যৌন হয়রানির বিষয়ে জাকারিয়া খানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে এই লিখিত অভিযোগ করেন দুই শিক্ষার্থীর পরিবার। এর আগে মঙ্গলবার ২৪ (সেপ্টেম্বর) এই ঘটনা ঘটে। পরে বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ে একটা সমাধানের জন্য বসলেও এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়ে বিচার সম্পূর্ণ না করে, অভিযুক্তকে নিয়ে চলে যান বিচারকেরা।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মোহাম্মদ জাকারিয়া খান চতুর্থ শ্রেণীর দুই ছাত্রীকে ঐ বিদ্যালয়ে এবং তার বাড়িতে টিউশনের সময়ে প্রায়ই ওই ছাত্রীদের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। একাধিকবার এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করে। গত কয়েকদিন আগে ওই ছাত্রীদের সাথে অশালীন আচরণ করলে, তারা বাড়িতে এসে কান্নাকাটি করে পরিবারেকে বিষয়টি জানায়।

এছাড়া জাকারিয়া খান কয়েক বছর আগেও এমন একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে ছয় মাসের জন্য চরাঞ্চলে ডেপুটেশনে চলে যায় এবং টাকা পয়সা ও রাজনৈতিক শক্তি ব্যবহার করে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়। বর্তমানে সে পুনরায় পূর্বের রুপে ফিরে এসেছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয়। তাই জাকারিয়া খানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার নিরাপদ পরিবেশ ফিরিয়ে দিতে অনুরোধ করা হয় অভিযোগে।


সরেজমিনে গেলে রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর)  দুপুরে ওই দুই শিক্ষার্থী জানান, মঙ্গলবার (২৪) সেপ্টেম্বর প্রাইভেট শেষে বাকি শিক্ষার্থীদের ছুটি দিলেও আমাদের কে আটকে রাখেন জাকারিয়া স্যার। বাকি শিক্ষার্থীরা চলে গেলে বলে, "তোমরা শুক্রবার প্রাইভেটের দুই ঘন্টা আগে ৮টার সময় আসবা। এসে ব্যাগ ও জুতা সহ ঘরে প্রবেশ করে ঘর খিল দিবা। এরপর কোরআন শরিফ ছুয়ে প্রতিজ্ঞা করবা, আমাদের তিনজনের সাথে যা ঘটবে পৃথিবী উলটে গেলেও তা কারো কাছে কিছু বলা যাবে না। আমার তা তোমার, তোমার তা আমার। আমি ওর সাথে যখন কিছু করবো তখন তুমি চোখ বন্ধ করবা। আর তোমার সাথে কিছু করলে ও চোখ বন্ধ করবে।" পরে এগুলো বলে আমাদের মাজায় ও স্পর্শকাতর স্থানে হাতে হাত দেয় এবং শুক্রবার ভালো করে পরিষ্কার হয়ে যেতে বলেন। এছাড়া আসার সময় আমাদের দু'জনকে ১০ টাকা করে খেতে দেন তিনি।

দুই ছাত্রীর পরিবার বলেন, তিনি এ ঘটনা নিয়ে ঘটনার দিন মঙ্গলবার রাতে বিএনপির রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে। আমাদের ফোন দিয়ে বিষয়টি নিয়ে পারিবারিক ভাবে বসে সমাধানের কথা বলেন। পরে শুক্রবার সকালে বিষয়টি নিয়ে বসলেও, উপস্থিত ক্ষুব্ধ জনগণের চাপে বিচারকেরা কোন সমাধান না দিয়ে চলে যান।

তাই বিষয়টি নিয়ে কোন সমাধান না হওয়ায় আমরা লিখিত অভিযোগ করি। আমাদের দাবি তাকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক, নইলে আমাদের সন্তানেরা আর ওই বিদ্যালয়ে যেতে পারবেনা।

এক ছাত্রীর মা বলেন স্যার এইরকম অনেকবারই করছে, আমার মেয়ের সাথেও করছে। অন্য মেয়েদের সাথেও করা পারে। আমরা তাই তার সুষ্ঠু বিচার চাই, যাতে অন্য কোন মেয়ের সাথে যেনো এমনটা আর না হয়।মুঠোফোনে অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ জাকারিয়া খান বলেন, বিষয়টি মিথ্যা ও বানোয়াট। এগুলোর কোন ভিত্তি নাই। তারপর যেহেতু অভিযোগ এসেছে, আমি বিষয়টি নিয়ে বসে একটা সমাধানের চেষ্টা করবো।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার রহমানকে বারবার কল দিলেও মিটিংয়ে থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।

তবে মুঠোফোনে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সেলিনা আখতার বলেন, গতকালই আমি তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত করা হবে, তদন্তে ঘটনাটি যদি প্রকৃতই হয়। অবশ্যই এর শক্ত পানিশমেন্ট দেয়া হবে। শুধু নরমাল বদলিতেই আমরা ক্ষান্ত থাকবো না। তবে আপাতত একটা স্কুলে সরিয়ে দিয়ে। তারপর তদন্তে যদি প্রমাণিত হয় তখন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়