রেকর্ডে শোনা যায়, ‘তাঁতিলীগের ওই নেতাকে যুবদলের নেতা বলছেন- ‘তোর নাম কাটাইতে কী লাগবে-তুই বুঝিস? আমি এত কথা কইবার চাই না, বিশ হাজার টাকা ইমার্জেন্সি আমার বিকাশ নম্বর আছে এখানে পাঠায় দে। তাড়াতাড়ি পাঠাবি। এখন সবার নাম এন্ট্রি হচ্ছে তাই আমি বাহিরে এসেছি। এ সময় আমি বলছি এটা আমার ছোট ভাই, আমি এটা যা বুঝার বুঝবোনে। তোরা থানায় কাজ করছোস তোরা আমাদের থেকে তিন ধাপ বেশি জানস। তোদের ওপর পুলিশ এখন অনেক ক্ষ্যাপা। কালা শামিম, বুইট্টা রাজু, কেচরা রুবেল সবার নাম লিস্ট। ওগুলো দরকার নাই, তুই আমার ছোট ভাই যদি মানস আরকি।’
মামলা থেকে নাম কাটাতে তাঁতিলীগের এক নেতার কাছ থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে যুবদলের এক নেতার বিরুদ্ধে। চাঁদা দাবির বিষয়টির একটি অডিও রেকর্ডও এরই মধ্যে ফাঁস হয়েছে। গাজীপুর মহানগরের গাছা থানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় টাকার বিষয়ে তাঁতিলীগের ওই নেতা যুবদলের নেতাকে বলেন, ‘আমি বাসায় কথা বলে আপনাকে জানাচ্ছি। আমি আরেকটা মামলা নিয়ে আরেক জায়গা টাকা-পয়সা দিছি।’ এদিকে এই কথা শুনে যুবদলের নেতা বলেন, ‘আমি বুঝতে পারি না কোনটা করতে চাস তুই। আমি শুধু তোর জন্য বাহিরে বের হইছি। তাহলে এডা বাদ দে। এই মামলায় কেউ যদি ধরা খায় ৩ বছরের আগে বের হতে পারবে না।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাঁদা দাবি করা ব্যক্তির নাম রুবেল সরকার। তিনি গাছা থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও গাজীপুর মহানগর যুবদলের সদস্য। আর যার কাছে মোবাইল ফোনে চাঁদা চাওয়া হচ্ছিল তার নাম রানা মিয়া। তিনি ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড তাঁতিলীগ নেতা।
রানা মিয়া জানান, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) রুমে বসে তার কাছে চাঁদা চাওয়া হয়। চাঁদা না দিলে হত্যা মামলা হবে বলেও হুমকি দেন। এ ছাড়া যেদিন চাঁদা দাবি করা হয়, সেদিনই তার নামে গাছা থানায় হত্যা মামলা হয়। মামলায় তিনি ২৮ নম্বর আসামি।
স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রুবেল সরকার এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছেন। মোটরসাইকেল মহড়া, পোশাক কারখানার ঝুট ব্যবসা, ডিস ব্যবসা দখলের চেষ্টাসহ সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখানো এমনকি মসজিদ দখল করার হুমকি দেয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এতে স্থানীয় শাহী মসজিদের মুসল্লিরা এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
এদিকে অভিযোগ সম্পর্কে রুবেল সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি রানা মিয়া রিং দেইনি। রানাই আমাকে রিং দিয়েছে। এ ছাড়া অডিও রেকর্ডে চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট শোনা গেলেও সেটি সত্য নয় বলে দাবি করেন রুবেল। তিনি বলেন, স্থানীয় একটি পক্ষ যারা আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা তারাই আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে।
এ বিষয়ে মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক সাজেদুল ইসলাম জানান, তিনি রেকর্ডটি শুনেছেন এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেও জানিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কিছু জানায়নি।
এ ছাড়া মসজিদ কমিটির এক সদস্য জানান, রুবেল সরকার দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। তার বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা না নিলে আইনের হাতে তুলে দেয়া হবে। উৎস: চ্যানেল ২৪
আপনার মতামত লিখুন :