শিরোনাম
◈ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তায় হটলাইন ◈ কোন পথে সেভেন সিস্টার্স, ভারতের এত ভয় কেন? ◈ প্যাভিলিয়ন থেকে আজহারউদ্দিনের নাম সরানো: 'বিশ্বের কোনো ক্রিকেটারের সঙ্গে যেন এমন না ঘটে ◈ সাকিব আল হাসা‌নের বিরুদ্ধে দুদকের কমিটি গঠন ◈ বাংলা‌দে‌শের ১৯১ রান শোধ ক‌রে ৮২ রা‌নের লিড নি‌লো জিম্বাবু‌য়ে ◈ আমলযোগ্য অপরাধের ঘটনায় অবশ্যই মামলা নিতে হবে: ডিএমপি কমিশনার ◈ ৩৩ বছরে রাষ্ট্রপতি কতজনকে মাফ করেছেন জানতে চান আদালত ◈ ঢাকা-৫ আসনের সাবেক এমপি মনিরুল ইসলাম গ্রেপ্তার ◈ বিশেষ বিসিএসে দু’হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেবে সরকার ◈ আওয়ামী লীগ নেতার ছেলের বিয়েতে লন্ডনে একসঙ্গে সাবেক চার মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী!

প্রকাশিত : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৯:০৩ রাত
আপডেট : ২১ মার্চ, ২০২৫, ১১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কুষ্টিয়ায় এ বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড

ফয়সাল চৌধুরী, কুষ্টিয়া : গত ২৪ ঘণ্টায় বর্ষার টানা বর্ষণে কুষ্টিয়ায় জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টা থেকে আজ রবিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। শুক্রবার রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়ে শনিবার সারাদিন মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। এই নিউজ লেখা পর্যন্ত রবিবার দিনভর বৃষ্টি হচ্ছে । তবে কুমারখালী আবহাওয়া অফিস সূত্রমতে, সোমবার থেমে থেমে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হবে। মঙ্গলবার থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে।

এদিকে বৃষ্টিতে শহরের অধিকাংশ দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনেক বেলা পর্যন্ত বন্ধ থাকছে। বৃষ্টিতে যানবাহন চলাচলও কম।  বৃষ্টিতে মানুষের দৈনন্দিন কাজ-কর্মে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। টানা বর্ষণে কুষ্টিয়া শহরের বেশ কিছু জায়গায় স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে রিকশাচালক, দিনমজুর, অটোবাইকচালকসহ নিম্ন আয়ের মানুষ। সারাদিন আকাশ মেঘলা থাকছে। বৃষ্টিতে মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। আবার অতি প্রয়োজনে বৃষ্টির মধ্যেই ভিজে অনেকে দৈনন্দিন কাজ-কর্ম সারছেন।

সরেজমিনে রবিবার কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টিতে কুষ্টিয়া শহরের অধিকাংশ সড়কে হাঁটুপানি জমে গেছে। শহরের বড়বাজার, কোর্টপাড়া, কালিশংকরপুর, কাটাইখানা মোড়, র‌্যাব গলি, মাহাতাব উদ্দীন সড়ক, কলকাকলি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল, প্রধান ডাকঘর, আড়ুয়াপাড়া, কলেজ মোড়সহ হাউজিং এলাকার কিছু জায়গার সড়ক জলাবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়। অনেক বাসাবাড়ির নিচতলা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভেতরেও বৃষ্টি পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

এছাড়াও কুমারখালী, খোকসা, ভেড়ামারা, মিরপুর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে রাস্তাঘাটে হাঁটুপানির ও মাঠঘাটে কোমর পানি পর্যন্ত জলবদ্ধতা দেখা গেছে। 

কমলাপুর এলাকার বাসিন্দা রহিদুল ইসলাম বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে চরম ভোগান্তির মধ্যে আছেন। কিছু কিছু জায়গায় নালাগুলো বিভিন্ন প্লাস্টিকের বোতলসহ আবর্জনার কারণে পানি কম বের হচ্ছে। বাসাবাড়ির ভেতর নোংরা পানি ঢুকে পড়েছে। এমনকি নালার ময়লা-আবর্জনা বৃষ্টির পানির সঙ্গে সড়কে উঠে আসছে।

কোর্টপাড়া এলাকার বাসিন্দা পলাশ খন্দকার বলেন, অল্প বৃষ্টিতেই সড়কে পানি জমে যায়। হেঁটে চলাচল করা যায় না। এ ছাড়া বৃষ্টি হলেই রিকশা ও অটোরিকশার চালকেরা ভাড়া বাড়িয়ে দেন। ২০ টাকার ভাড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা নেন।

কুমারখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্যমতে, ২০২০ সালের ২১ মে সর্বোচ্চ ১৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। ২০২১ সালে বৃষ্টি হয়েছিল ৫৪ মিলিমিটার ও ২০২২ সালে সর্বোচ্চ ৬৭ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে। ২০২৩ সালে ৫ই অক্টোবর সর্বোচ্চ ১১৬ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে।

এ সময় কথা হয় সিদ্দিক নামে এক রিকশা চালকের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতিদিন রিকশা চালিয়ে আমার মোটামুটি আয় হতো। কিন্তু বৃষ্টির কারণে লোকজন কম থাকায় তেমন যাত্রী পাচ্ছি না। তবে এখন একটু বেশি ভাড়া নিতে হচ্ছে। বৃষ্টিতে ভিজে খুব শীত করছে। মনে হয় জ্বর আসবে। 

কুষ্টিয়ার মিউনিসিপাল বাজার করতে আসা মো. আসলাম হোসেন নামের এক চাকরিজীবীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, সপ্তাহে ৬ দিন অফিস করতে হয়। বাজারঘাটসহ প্রয়োজনীয় কাজ অফিস টাইমের আগেই করতে হয়। সারাদিন বৃষ্টি বেশি থাকায় থাকায় বাজারে আসতে পারেনি। দুপুরে একটু বৃষ্টি কম হলে বাজারে আসি কিন্তু পরে বৃষ্টির মাত্রা বেড়ে গেলে ভিজেই বাজার করতে হয়েছে। আমার মতো আরও যারা বাজার করতে এসেছেন, তারাও একই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।

মিরপুর উপজেলার ধুবইল  এলাকার কৃষক রাশিদুল জানান, মাঠে এখন কোমর সমান পানি, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে পুকুরের মাছও ভেসে গেছে। এ সময় অর্থনৈতিকভাবে কৃষকরা খুব ঝুঁকিতে আছে। 

 কুষ্টিয়া শহরের স্থানীয়রা জানান, পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে হালকা অথবা বেশি যেকোনো ধরনের বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।

কুষ্টিয়ার কুমারখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন আর রশিদ জানান, ১৪ সেপ্টেম্বর শনিবার বেলা ১২টা  থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর রবিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত ১১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটি কুষ্টিয়ায় এ বছরের  সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে । সোমবার থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে মঙ্গলবার থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে।

কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলেন, এ বছর ৮৮ হাজার ৯শ' ২৫ হেক্টর জমিতে‌ আমন ধান চাষ হয়েছে। গত কয়েকদিনে যা বৃষ্টিপাত হয়েছে যা আমন ধানের চাষের জন্য যথেষ্ট। বৃষ্টিপাতে আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে এখন পর্যন্ত এমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়