শিরোনাম
◈ কুষ্টিয়ায় পদ্মার ভাঙনে জাতীয় গ্রিডের টাওয়ার নদীতে বিলীন ◈ ভারতে থাকার মেয়াদ শেষ হচ্ছে, কোন আইনের বলে ভারতে থাকবেন শেখ হাসিনা? ◈ (২০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার ◈ স্থিতিশীল ডলারের দর, ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও ◈ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘গ্যারান্টিতে’ নগদ টাকার সংকট কাটছে যে ৫ ব্যাংকের ◈ হত্যাকাণ্ড নিয়ে অপপ্রচার চলছে, জাবিতে কোন কমিটিই নেই : ছাত্রদল ◈ গণপিটুনিতে মৃত্যু: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখপ্রকাশ, বৈষম্যবিরোধীদের নিন্দা, ফেসবুকে নানা সমালোচনা ◈ ভারতের গোলা যাচ্ছে ইউক্রেনে, ক্ষুব্ধ রাশিয়া ◈ সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সুনামগঞ্জে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার গ্রেফতার ◈ মব জাস্টিস শুধু সহিংসতা ও অন্যায় সৃষ্টি করে: সমন্বয়ক হাসনাত

প্রকাশিত : ২৬ এপ্রিল, ২০২২, ০৭:০৫ বিকাল
আপডেট : ২৬ এপ্রিল, ২০২২, ০৭:০৫ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জামিনে বের করার প্রতিশ্রুতি ভাঙ্গায় স্ত্রীকে হত্যা 

রুবেল মজুমদার : [২] কুমিল্লার আর্দশ সদর উপজেলার কালিরবাজার ইউনিয়নের গৃহবধু ফারজানা হত্যাকাণ্ডে ঘটনায় ঘাতক স্বামী মো:ইকবালকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। 

[৩] গ্রেফতারকৃত আসামি হলেন জেলার আদর্শ সদর উপজেলার অলিপুর গ্রামের আঃ হাকিমের  পুত্র  মো ইকবার হোসেন(৩৮)।

[৪] মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সকালে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১ জানায়,চাঞ্চল্য গৃহবধু ফারজানা হত্যাকাণ্ডে ঘটনায় আসামীদের গ্রেফতার করতে র‌্যাবসহ পুলিশের সহ কয়েকটি গোয়েন্দা দল মাঠে নামে।

[৫] সোমবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাতে র‌্যাবের একটি অভিযানে মামলার প্রধান আসামীসহ কে আটক করে।এছাড়া একইদিন মামলার ২, ৩  ৬ নং  আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়।

[৬] র‌্যাব-১১ এর  কোম্পানী অধিনায়ক মেজর মোহাম্মাদ সাকিব হোসেন জানায় ঘাতক ইকবার পেশায় একজন অটোচালক, বিভিন্ন গাড়ির বেটারী এবং গাড়ি চুরিসহ বিভিন্ন ধরণের চুরি করেতো। তার নামে একাধিক মামলাসহ রয়েছে।সে তার স্ত্রী ফারজানাকে নিয়ে কুমিল্লা শহরে ভাড়া বাসা থাকতেন।

[৭] ২০১০ সালের একটি চুরির ঘটনার দুইমাস পূর্বে ওয়ারেন্ট জারি হাওয়ার জামিনে বের হওয়ার জন্য পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে   ৫ হাজার টাকা জমিয়ে স্ত্রী ফারজানাকে রেখে যান এবং বলেন আামি গ্রেফতার হলে তুমি আমাকে বের করবে ।পরে ইকবালকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

[৮] কিন্ত স্বামী জেলে থাকায় ভাড়া বাসায় শিশু সন্তানকে কষ্ট থাকায় স্বামী ইকবালের রেখে যাওয়া ৫ হাজার টাকা দিয়ে ট্রাক ভাড়া করে ভাড়া বাসার সমস্ত মালামাল নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে যায় । জেলখানাতে গিয়ে ফারজানা তার স্বামী ইকবালকে ভাড়া বাসা ছেড়ে তার বাপের বাড়িতে চলে যাওয়ার ঘটনাটি বলতেই ইকবাল স্ত্রী ফারজানার ও্রপর চড়াও হয় ফারজানা দ্রুত ছাড়ানো ব্যবস্থা করবে বলে আশ্বাস দিয়ে চলে আসে ফারজানা।

[৯] পরবর্তীতে চলিত মাসের প্রথম সপ্তাহে জেল থেকে জামিন পেয়ে তার বোন কলির কাছে যায় এবং বোনের কাছে রেখে যাওয়া মোবাইল ফোন নিয়ে শশুর বাড়িতে যায়। শশুর বাড়িতে যাওয়ার পরে স্ত্রী কেন তাকে জামিন না করিয়ে বাসার মালামাল নিয়ে শশুর বাড়িতে চলে আসছে সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ফারজানা তার  তো  জুয়াড়ী ও চোরের সাথে সংসার করবেনা মর্মে তাকে  ডিবোর্স দেয়ার কথা বল্লে এই নিয়ে ইকবালের সাথে কথাকাটাকাটি ও বাকবিতন্ডা শুরু হয়।

[১০] ঝগড়ার জেরধরে ইকবাল শশুরবাড়ি থেকে চলে আসে । তার স্ত্রী যেহেতু তার সাথে থাকবেনা সেহেতু সে তাকে দুনিয়াতেই রাখবেনা। এরই মধ্যে সে চিন্তা করতে থাকে ফারজানা যদি তার বাপের বাড়িতে থাকে তাহলে ইকবাল তার স্ত্রীকে হত্যা করতে পারবেনা তাই ইকবাল ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে ফারজানার কাছে নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চায় এবং তাকে বিভিন্নভাবে প্রলােভন দেখিয়ে তার প্রতি আকৃষ্ট করতে থাকে। 

[১১] ঘটনার দিন ২৩ এপ্রিল সে তার স্ত্রী ফারজানাকে ফোন করে বলে সে জেলে যাওয়ার পূর্বে তার বোনের কলির কাছে তিন হাজার টাকা রেখে গিয়েছিলো  যা কলি তাকে দিবেনা কেননা ইকবালকে টাকা দিলে সে জুয়া খেলে টাকাগুলো নষ্ট করে ফেলবে বিধায় এই টাকা তার স্ত্রী ফারজানার নিকট দিবে। ইকবাল ঐ টাকা নিয়ে তার একমাত্র শিশু সন্তান ফারহানা আক্তার ইভা(০৭)'কে ঈদের শপিং করে দিবে বললে ফারজানা আসতে রাজি হয়। পরবর্তীতে ইকবাল ফারজানাকে আনতে শশুর বাড়ি আলেখারচরে যায় এবং ফারজানাকে নিয়ে শশুর বাড়ি থেকে আনার সময় নিয়মিত যাতায়তের রাস্তা ব্যবহার না করে ইকবাল পূর্ব পরিকল্পিত জনশূন্য অপর রাস্তা দিয়ে নিয়ে আসতে থাকে। পরিকল্পনা মােতাবেক ইকবালের পূর্ব পরিকাল্পিত স্থান যেখানে ফারজানাকে হত্যা করার জন্য পূর্বেই ইকবাল ইট রেখে গিয়েছিলো সেই স্থানে আসা মাত্রই রাত ২টায় ইকবাল তাকে পিছন থেকে ইট দিয়ে মাথায় সজোরে আঘাত করে।

 [১২] ইকবালের ইটের আঘাতে ফারজানা মাটিতে পড়েযায় এবং কান্নাকাটি শুরু করলে সে ফারজানার ব্যবহৃত ওড়না দিয়ে মুখ বেধে ফেলে । থাকা গামছা দিয়ে তার হাত বেধে ফেলে।এরপর একই ইট দিয়ে মাথায় একাধিকবার আঘাত করে। ইকবালযখন স্থান ত্যাগ  করে তখনও তার স্ত্রী জীবিত ছিল তবে রক্তক্ষরণ দেখে ইকবাল নিশ্চিত ছিল তার স্ত্রী খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মারা যাবে তাই লােকজন চলে আসার ভয়ে সে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে ২৪ এপ্রিল বিষয়টি জানাযানি হলে ইকবাল রাজধানী ঢাকায় আত্মগােপনে চলে যায়।পরে র‌্যাব ইকবালকে ঢাকা থেকে আটক করে।

[১৩] উল্লেখ্য গত ২৪ এপ্রিল জেলার কোতয়ালী থানার কালিরবাজার ইউনিয়নের মস্তফাপুর (কাছার) এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে গৃহবধু মােসাঃ ফারজানা বেগম(২৯) হাত মুখ বাধা অবস্থায় রক্তাক্ত লাশ  উদ্ধার করে পুলিশ । এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর পিতা মো.জাহাঙ্গীর হোসেন বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় ৭জন বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ে করেন ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়