শিরোনাম
◈ কুষ্টিয়ায় পদ্মার ভাঙনে জাতীয় গ্রিডের টাওয়ার নদীতে বিলীন ◈ ভারতে থাকার মেয়াদ শেষ হচ্ছে, কোন আইনের বলে ভারতে থাকবেন শেখ হাসিনা? ◈ (২০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার ◈ স্থিতিশীল ডলারের দর, ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও ◈ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘গ্যারান্টিতে’ নগদ টাকার সংকট কাটছে যে ৫ ব্যাংকের ◈ হত্যাকাণ্ড নিয়ে অপপ্রচার চলছে, জাবিতে কোন কমিটিই নেই : ছাত্রদল ◈ গণপিটুনিতে মৃত্যু: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখপ্রকাশ, বৈষম্যবিরোধীদের নিন্দা, ফেসবুকে নানা সমালোচনা ◈ ভারতের গোলা যাচ্ছে ইউক্রেনে, ক্ষুব্ধ রাশিয়া ◈ সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সুনামগঞ্জে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার গ্রেফতার ◈ মব জাস্টিস শুধু সহিংসতা ও অন্যায় সৃষ্টি করে: সমন্বয়ক হাসনাত

প্রকাশিত : ০৩ মে, ২০২২, ০১:২৯ রাত
আপডেট : ০৩ মে, ২০২২, ০১:২৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অ্যাম্বুলেন্স চালককে পেটালেন চিকিৎসক, দিলেন গুমের হুমকি

নিউজ ডেস্ক: এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সর্বমহল থেকে ধিক্কার জানানো হচ্ছে। গত বুধবার (২৭ এপ্রিল) এক নারী চিকিৎসকের সঙ্গে স্বপনের তর্কাতর্কির ঘটনার সূত্র ধরে পরদিন বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে স্বপনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন ডা. রবিন। কিন্তু ওইদিনই কর্তৃপক্ষ ঘটনার মীমাংসা করে দিয়েছে জানিয়ে হাত জোড় করে স্বপন ক্ষমা চাওয়ার পরও তাকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন ওই চিকিৎসক।  সময় টিভি

এতে জরুরি বিভাগের স্বেচ্ছাসেবক ও স্টাফদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার পর ডা. রবিনের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন তারা। তবে এ ঘটনা জানার পর বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে বলে দাবি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, চিকিৎসকের হাতে কর্মচারী লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় ওঠে ডাক্তারের বিরুদ্ধে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত বুধবার সকালে এক রোগীর স্থানান্তর নিয়ে জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসকের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয় অ্যাম্বুলেন্স চালক স্বপনের। তাৎক্ষণিক বিষয়টি আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে (আরএমও) জানালে ওইদিন সকালেই হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আরএমও’র উপস্থিতিতে চালক স্বপন ক্ষমা চাইলে বিষয়টি সমাধান হয়।

এর পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে চালক স্বপন জরুরি বিভাগে গেলে সে সময় চিকিৎসক ওয়াহেদ মাহমুদ রবিন বলেন, বড় কিছু হয়ে গিয়েছিস? ডাক্তারের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছিস কেন বল।

এ সময় স্বপন বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে বলে জানিয়ে ডা. রবিনের কাছেও হাতজোড় করে ক্ষমা চান। ওই ঘটনায় ক্ষমা চেয়ে সেখান থেকে চলে যেতে চাইলে চালক স্বপনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন তিনি।  এসময় তিনি বলেন, ‘তোকে মেরে থানায় ১০ লাখ টাকা দেব, আমার কিচ্ছু হবে না। ১০ লাখ টাকা খরচ করে তোকে গুম করে দেব।’

এ কথার প্রতিবাদ করলে উভয়ের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। পরে রোগীদের সামনেই ধাক্কা দিয়ে চেয়ার তুলে মারতে গেলে হাত দিয়ে ঠেকান স্বপন। পরে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে জরুরি বিভাগ থেকে বের করে দেওয়া হয় তাকে।


হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেছে দেখা যায়, কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়াহেদ মাহমুদ রবিন চেয়ার থেকে উঠেই স্বপনকে সজোরে ধাক্কা দেন। এরপর সামনে থাকা কাঠের চেয়ার তুলে মাথায় মারতে গেলে অ্যাম্বুলেন্স চালক স্বপন হাত দিয়ে ঠেকিয়ে ফেলেন। এ সময় অপর এক স্টাফ ঠেকাতে গেলে তাকেও ধাক্কা দেন ডা. রবিন। এরপর রুম থেকে বের হয়ে গেলে সিঁড়ির সামনে আবারও শার্টের কলার ধরে মারধর করেন তিনি। পরে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে হাসপাতালের নতুন ভবন থেকে স্বপনকে বের করে দেন ডা. রবিন।

অ্যাম্বুলেন্স চালক স্বপন বলেন, ‘গত (২৭ এপ্রিল) বুধবার এক রোগীর রেফার করা নিয়ে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত অপর এক নারী চিকিৎসকের সঙ্গে আমার একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল। পরে তা সমাধান করে দেয় কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার ব্যক্তিগত কারণে জরুরি বিভাগে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রবিন ওই ঘটনা কেন ঘটালাম আমাকে জিজ্ঞাসা করেন। বিষয়টি সমাধান হয়েছে জানিয়ে তার কাছেও হাতজোড় ক্ষমা চাই এবং চলে আসতে যাই। কিন্তু তিনি আমাকে গালিগালাজ করতে থাকেন। এ সময় তিনি বলেন, ১০ লাখ টাকা দিয়ে তোকে গুম করে দেব। এতে আমি প্রতিবাদ করলে আমাকে চেয়ার তুলে মারতে যান। আমি হাত দিয়ে না ঠেকালে আমার মাথা ফেটে যেত। পরে ধাক্কা দিয়ে জরুরি বিভাগ থেকে বের করে দেয়। বিষয়টি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আতাউর রহমানের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি।

এ বিষয়ে ডা. ওয়াহেদ মাহমুদ রবিন বলেন, স্বপন বদ ও ডাক্তারদের গালিগালাজ করে। ডাক্তারদের সঙ্গে এর আগেও সমস্যা করেছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক শহিদুল ইসলাম সাকো বলেন, ঘটনার সময় আমি জরুরি বিভাগে উপস্থিত ছিলাম। স্বপনের কোনো অন্যায় খুঁজে পাইনি। ৩০ বছরের চাকরি জীবনে চিকিৎসকের কাছ থেকে এমন আচরণ দেখিনি। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

বিএমএ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি ডা. মার্টিন হিরক চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। ডা. রবিনের মারপিট ও হুমকির বিষয়টি সম্পূর্ণ বেআইনি। কেউ আইন হাতে তুলে নিতে পারে না। সংগঠন কোনোভাবেই সমর্থন করে না। কোনো ডাক্তার এ ধরনের আচরণ করুক, এটা আমরা চাই না আর সমর্থন করি না। অফিস চলাকালীন এ ঘটনা ঘটেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তখন দেখা হবে। সংগঠনের পক্ষ থেকে তত্ত্বাবধায়ককে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আতাউর রহমান বলেন, অ্যাম্বুলেন্স চালক স্বপন একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। ঈদের ছুটি শেষে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। অভিযোগ প্রমাণ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি দুঃখজনক। জরুরি বিভাগে এমন কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না। গত ২৮ এপ্রিল অ্যাম্বুলেন্স চালক স্বপন একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়