শিরোনাম
◈ ডাকাতের গুলিতে মাদারীপুরে আহত ৮, গণপিটুনিতে ২ ডাকাত নিহত ◈ ঝগড়ার পর হোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে যা বললেন জেলেনস্কি ◈ গোপনে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশি রাজনীতিবিদের সম্পদের সাম্রাজ্য: ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন ◈ রোজায় দিনে হোটেল বন্ধ রাখতে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জামায়াত আমিরের ◈ যে কারণে পদত্যাগ করলেন শিল্পকলা মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ! (ভিডিও) ◈ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে স্কাইপ ◈ ইংল্যান্ড দলের অধিনায়কত্ব ছাড়লেন জস বাটলার ◈ ভোটে সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত গণতন্ত্র ঝুঁকিমুক্ত নয়: তারেক রহমান (ভিডিও) ◈ বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে মাঝ আকাশে অক্সিজেন স্বল্পতা, জরুরি অবতরণ ◈ বৃষ্টিতে খেলা পরিত্যক্ত, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত : ২১ আগস্ট, ২০২৪, ০৪:২৮ দুপুর
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৩:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কুমিল্লায় বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে গোমতী নদীর পানি, ভোগান্তিতে মানুষ : বিরাজ করছে আতঙ্ক (ভিডিও)

শাহাজাদা এমরান,কুমিল্লা।। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে ক্রমেই বাড়ছে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি। আর এই অব্যাহত বর্ষণে নদীতে বৃদ্ধি পাওয়া এ পানি ইতোমধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা থেকে বুড়িচং উপজেলার কাইতরা প্রায় ১০টি স্পস্ট বিপদজনক পর্যায়ে রয়েছে। স্থানীয় লোকজন স্বেচ্ছাসেবীর ভুমিকা নিয়ে নিজেরাই বিপদজনক পয়েন্টে বালুর বস্তা ফেলে ও বিভিন্ন ভাবে বাধ রক্ষা করার চেষ্টা করছে। এতে এক দিকে যেমন চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে অপর দিকে ভোগান্তিতে পড়েছে কুমিল্লার গোমতির চরাঞ্চলের মানুষেরা।

বুধবার (২১ আগষ্ট) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গিয়েছে, নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে, কুমিল্লা নগরীর ভাটপাড়া এলাকাসহ আশেপাশের নদীর চরের বাসিন্দাদের বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গিয়েছে।

এদিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকেই নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রাবাহিত হতে থাকে। এসময় নদীর বাঁধ ঝূঁকির মুখে পড়ায় পর্যবেক্ষণে বের হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাগণ। এসময় তারা কামাড়খাড়া ও বাবুবাজার এলাকাবাসীর কাছে বাঁধে ফাঁটলের খবর পেলে সেখানে ফাঁটল রোধে বালুর বস্তা সরবরাহ করে বলে জানায় স্থানীয়রা। নদীর পাড়ের মানুষজনকে আতংকিত না হয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। নদীর চরাঞ্চলের মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন।

এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পানি বেড়ে যাওয়ায় ডুম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়া হয়েছে। ফেনী ও কুমিল্লাতে পানি প্রবল আকারে বাড়ার কারণ হিসেবে এটাকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা।

তবে, পানি বেড়ে যাওয়ায় উৎকণ্ঠার মাঝে রয়েছেন নদীর চরাঞ্চলের কৃষকরাও। ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় চর ডুবে যাওয়ায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নিচু এলাকার বাড়িঘরে প্রবেশ করছে পানি। বিভিন্ন জায়গায় গোমতীর আইলে ফাটল দেখা দিচ্ছে। এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অঘটন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ।

পানি আইলের কাছাকাছি উঠে আসায় চর ভূমিতে চাষাবাদ করা নানান শাক সবজি ও অন্যান্য ফসল এখন পানির নিচে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে এসব ফসল আর রক্ষা করা যাবে না বলে আশঙ্কা করছেন চরের কৃষকরা।

এসব কৃষকরা নদীর চরে চাষাবাদ করেই মূলত জীবিকা নির্বাহ করেন। গোমতীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় তারা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে অনেক কৃষকের লাউ, ঢেঁড়স, ঝিঙ্গা, মূলা, লাল শাক, পানিতে ডুবে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা নদীর চরের কাছে দাঁড়িয়ে হা-হুতাশ করছেন। কেবল চরের ফসল নয়, চর এলাকায় বসবাস করা অনেকের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করায় মালামাল সরাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন লোকজন।

দুর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের কৃষক আবদুল জলিল আক্ষেপ করে বলেন, কত আশা নিয়ে কয়েক রকমের সবজি চাষ করছিলাম এবার, সব পানির নিচে চলে গেছে। আল্লাহ জানে, আমার কি হবে। দেনা শোধ করবো কিভাবে।

এই বিষয়ে, পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালীউজ্জামান বলেন, কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমা হচ্ছে ১১.৭৫ মিটার। ইতিমধ্যেই তা ১২ মিটারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ৩০ বছরে এমন পানি হয় নি।  পানি উন্নয়ন বোর্ডের একাধিক টিম বাঁধ পর্যবেক্ষণে আছে। আমরা গোমতী পাড়ের মানুষজনকে বলেছি, তারা কোথাও কোন বাঁধে ফাঁটল বা ঝুঁকি দেখেলে যেন পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সাথে সাথে জানায়। তাছাড়া, স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগীতা করতে বলেছি।

ত্রিপুরাতে বাঁধ খুলে দেওয়া প্রসঙ্গে ওয়ালিউজ্জামান বলেন, বাঁধ খুলে দিলেও ভারতের কর্তৃপক্ষ কখনো সেটা পূর্বে জানিয়ে দেয় না। তারা তাদের এলাকায় মাইকিং করছে, সেটা আমরা বিভিন্ন ভিডিওতে দেখেছি। সোশ্যাল মিডিয়ায় জানতে পেরেছি বাঁধ খুলে দিয়েছে। তবে, অফিশিয়ালভাবে নিশ্চিত নই।

এই বিষয়ে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমেন শর্মা বলেন, গোমতী নদীর পানি উত্তর পাশে পালপাড়া অংশে বাঁধ থেকে গড়ে ৩ দশমিক ৫ থেকে চার দশমিক ফুট নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গোমদী নদীর দক্ষিণ অংশে অর্থাৎ শহরের পাশে বাঁধ থেকে গড়ে ৬ থেকে ৭ ফুট নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আর, বিগত ৬ ঘন্টায় প্রায় ১২ থেকে ১৫ ইঞ্চি পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই, সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। আমরাও, চরাঞ্চলের মানুষদেরকে সতর্ক স্থানে সরাতে পদক্ষেপ নিচ্ছি। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়