রাশিদ রিয়াজ: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এটা আবু সাঈদের বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশে কোনো ভেদাভেদ নেই। আমরা সবাই আবু সাঈদ। আবু সাঈদের মা সবার মা। এখানে যারা আছে (আবু সাঈদের পরিবার) তাদের রক্ষা করতে হবে। তার মা আছে, বোন আছে, তাদের রক্ষা করতে হবে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের বাড়িতে গিয়েছেন ড. ইউনূস। সেখানে তিনি আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের পর কথা বলেন তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে।
এ সময় এসব কথা বলেন তিনি। শনিবার (১০ আগস্ট) সকালে হেলিকপ্টারযোগে পীরগঞ্জের জাফরপাড়া বাবনপুর গ্রামে যান তিনি।
এদিকে শুক্রবার থেকেই ড. ইউনূসের আগমন ঘিরে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে ওই এলাকায়। সেনাবাহিনীর সদস্যসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্য সদস্যরা সেখানে অবস্থান করছেন। তবে পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়নি।
কবর জিয়ারত ও আবু সাঈদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা শেষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন তিনি। এরপর রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত রোগীদের দেখতে যাবেন ড. ইউনূস।
শনিবার (১০ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পৌঁছান তিনি। তার সঙ্গে রয়েছেন উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়কও গেছেন।
গত ১৬ জুলাই রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) এই শিক্ষার্থী গুলি করে হত্যা করা হয়। তার মৃত্যুতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়, যার ফলে ৫ আগস্ট ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে।
গত ৮ আগস্ট ঢাকায় পৌঁছানোর পর প্রথম বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে স্মরণ করে বলেন, ‘তিনি বাংলাদেশের সবার হৃদয়ে থাকবেন চিরকাল।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘এই সময়ে আবু সাঈদের কথা মনে পড়ছে, যে আবু সাঈদের ছবি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মনে গেঁথে আছে।
এটা কেউ ভুলতে পারবে না। কী অবিশ্বাস্য একটা সাহসী যুবক বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে এবং তারপর থেকে আর কোনো যুবক, কোনো যুবতী হার মানেনি।’ বিমানবন্দরে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলার সময় আবেগে কণ্ঠরোধ হয়ে আসছিল তার।