জাফর ইকবাল, খুলনা: [২] পুলিশের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় দুইটি মামলা হয়েছে। বুধবার (৩১ জুলাই) রাতে পুলিশ বাদী হয়ে খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা দুটি দায়ের করে।
[৩] পুলিশের দায়ের করা প্রতিটি মামলায় ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ১১ জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
[৪] এর মধ্যে নগরীর সদর থানার মামলার বাদি এস আই হাসানুর রহমান। মামলায় ৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয় ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় আগের দিন আটক ৬ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার কারাগারে পাঠানো।
[৫] সংঘর্ষের সময় গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার এস আই সুমন মন্ডল বাদি হয়ে ওই থানায় আরেকটি মামলা করেন। এই মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ২০০ জনকে আসামি করা হয়।
[৬] মামলার এজাহার তৈরিতে হওয়ায় সোনাডাঙ্গা থানায় আটক ৫ শিক্ষার্থীকে ১৮ জুলাই দায়ের করা আরেকটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
[৭] স্থানীয়রা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালন করতে বুধবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সড়কে জড়ো হতে শুরু করেন। তারা নগরীর রয়েল মোড়, সাত রাস্তা মোড়, ময়লাপোতা মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। এ সময় খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধে গেলে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় সেখান থেকে পুলিশ কয়েকজনকে আটক করে।
[৮] পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা রয়েল মোড় এলাকায় এলে পুলিশ তাদেরকে চারদিক থেকে ঘিরে রাখে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সাত রাস্তার মোড়ে থাকা পুলিশের দুটি গাড়ি পিছু হটলেও দুপুর সোয়া ২টার দিকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষ শুরুর পর পুলিশ ব্যাপক কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এদিন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত নগরীর ময়লাপোতা মোড়, শেরে বাংলা রোড, সাতরাস্তা মোড়, শান্তিধাম মোড়, দোলখোলা মোড়, রয়েল মোড়, মডার্ন ফার্নিচার মোড়, মৌলভীপাড়া মোড় ও টুটপাড়া মোড়ে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থী আহত হয় বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
[৯] পুলিশ জানায়, বুধবার নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে ৯০ থেকে ৯৫ জন আন্দোলনকারীকে আটক করা হয়েছিল। যাচাই-বাছাই শেষে রাতে শিক্ষার্থীদের তাদের অভিভাবক ও শিক্ষকদের জিম্মায় মুক্তি দেওয়া হয়। ১১ জনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
[১০] খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সরদার রাকিবুল ইসলাম জানান, আটক শিক্ষার্থীদেরকে রাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ঢুকে অন্য যারা বিশৃঙ্খলা করেছে তাদেরকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। সম্পাদনা: এ আর শাকিল
প্রতিনিধি/এআরএস
আপনার মতামত লিখুন :