শিরোনাম
◈ বড় হারে অনিশ্চয়তায় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্বপ্ন  ◈ জ্বালানির চাহিদা মেটাতে নতুন বিনিয়োগ খুঁচছে সরকার  ◈ ঢাকায় ফিরলেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীরা ◈ প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দিল নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ◈ ইজিবাইকসহ অপহরণকৃত চালককে উদ্ধার করেছে নৌবাহিনী ◈ হামজা চৌধুরী‌কে দেখে সামিত শোম বললেন, আমি বাংলা‌দে‌শের হ‌য়ে খেল‌তে আগ্রহী, পাসপোর্ট করছি ◈ রোববার প্রথম টে‌স্টে বাংলা‌দেশ ও জিম্বাবু‌য়ে মু‌খোমু‌খি, না‌হিদ রানা‌কে ভয় পা‌চ্ছে সফরকারীরা  ◈ ইংল্যান্ড প্রিমিয়ার লি‌গে খেল‌বেন সাব্বির রহমান, রওনা হ‌বেন ২ মে ◈ ভারতের সঙ্গে ‘যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায়’ ডুবছে তাদেরই অর্থনীতি! ঢাকাকে বার্তা দিল নয়াদিল্লি: আনন্দবাজারের প্রতিবেদন ◈ ট্রাম্প-শি জিনপিং-মোদি এসে বাংলাদেশে কিছু করে দিয়ে যাবেন না: মির্জা ফখরুল (ভিডিও)

প্রকাশিত : ০১ আগস্ট, ২০২৪, ০৫:৫১ বিকাল
আপডেট : ০৩ এপ্রিল, ২০২৫, ০৫:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত মারুফের বাবা 

ছেলে হত্যার বিচার চাই!

নিহত মারুফ হোসেনের মা ময়না খাতুন ও ছোট বোন মাইসা

হুমায়ুন কবির, খোকসা: ঢাকায় কোটা আন্দোলনে সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে গুলিতে নিহত মারুফ হোসেন (২০) কুষ্টিয়ার খোকসা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের থানা পাড়ার শরিফ হোসেনের একমাত্র ছেলে। সে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক্যাল কলেজের ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার সায়েন্সের শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। 

ইর্ন্টানি ও চাকরির সন্ধানে ২০ দিন আগে রাজধানী ঢাকায় বন্ধুদের সাথে বনশ্রী এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে ওঠেন। ১৯ জুলাই দুপুরে সেই বাসার সামনে মারুফ গুলিবিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরদিন সকালে গ্রামের বাড়ি খোকসার থানা পাড়ায় মরদেহ আনা হলে শোকের মাতম শুরু হয়। ময়নাতদন্ত ছাড়াই কেন্দ্রীয় পৌর ঈদগাহে জানাযা শেষে পৌর কবরস্থানে মারুফকে দাফন করা হয়। 

একমাত্র ছেলের মৃত্যু সংবাদ আসার পর একবারই চিৎকার করে কেঁদে উঠেছিলেন মা ময়না খাতুন। এরপর বুকে পাথর চাপা দিয়েছেন। কোন প্রশ্নের জবাব দেন না। কেই কথা বললে শুধু ফ্যালফ্যালিয়ে তাকিয়ে থাকে। নিহত ছেলের কক্ষে তালা দিয়ে চাবিটা নিজের কাছে রেখেছেন। ইচ্ছে হলে ওই রুমে গিয়ে টেবিলের পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকেন। ছেলের ব্যবহারের বাইসাইকেলটি চেয়ে চেয়ে দেখেন। 

মায়ের সাথে ভাইয়ের হাতের স্পর্শ খুঁজে পাবার চেষ্টা করে একমাত্র ছোট বোন চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মাইসা। নিহতের বাবা মা ও ছোট বোনটি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কাঁচা মালের আড়তের শ্রমিক ও ফুটপাতের খন্ডকালীন সময়ে পেয়ারা বিক্রেতা শরিফ উদ্দিন কাজে যান না। শরীরও খারাপ। হার্টের সমস্যা। প্রতিদিন অনেক টাকার ওষুধ লাগে।

নিহত মারুফের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, দুই কক্ষের চার চালা টিনের ঘরের বারান্দায় মা ময়না খাতুনকে ঘিরে প্রতিবেশী মহিলারা বসে আছেন। তারা নানা কথা বলে তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কারও কথায় সাড়া দেন না ময়না খাতুন। নির্বাক তিনি শুধু শুনছেন।

ভাই হারা চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী মাইসা জানায়, সন্ধ্যা নামলেই ভাইয়ের কথা বেশি মনে পরে। ঢাকায় যাওয়ার পর প্রতিদিন সন্ধার পর ভাই মাকে ফোন দিত। আর একটু পড়া আছে। শেষ হলেই চাকরি পাবে। আমাকে অনেক পুতুল ও জামা কিনে দেবে। ভাইয়ের এইসব কথা খুব মনে পরে।

সরেজমিনে গিয়ে নিহত মারুফের বাবা শরিফ উদ্দিন বলেন, ১৯ জুলাই সকাল ১১টার দিকে ছেলের সাথে শেষবার কথা হয়। তখনও তাদের মেসে খাবার হয়নি। বিকাল ৫টার পর ছেলের সহপাঠি তাকে ফোন দিয়ে মারুফের মৃত্যুর খবর জানায়। 

তিনি আরও জানান, টাকার অভাবে সংসার আর চলছে না। আমার শরীরও খারাপ। আমার ছেলেকে যখন হারিয়েছি তখন আমি সরকারের কাছে কি চাইব। আমার চাওয়া পাওয়ার আর কিছুই নেই। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই। 

এদিকে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বিকেলে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক এহতেশাম রেজা নিহত মারুফের বাবা শরিফ হোসেনের হাতে ২৫ হাজার টাকার চেক তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- খোকসা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইরুফা সুলতানা।

প্রতিনিধি/একে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়