নুরনবী সরকার, লালমনিরহাট: জেলার হাতীবান্ধায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে পাঁচদিন ধরে অনশনে বসেছেন এক কলেজছাত্রী। খবর পেয়ে প্রেমিক আলমগীর হোসেন বাড়ি থেকে পালিয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলা সানিয়াজান ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের চর ঠ্যাংঝাড়া গ্রামে। প্রেমিক আলমগীর হোসেন (২২) ওই এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুরে ওই কলেজ ছাত্রী রেশমি আক্তার বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে বিষয়টি নিয়ে কয়েকদিন ধরে মীমাংসার চেষ্টায় ব্যর্থ হলে আমি হাতীবান্ধা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে হাতীবান্ধা সরকারি আলিমুদ্দিন ডিগ্রি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় দেখা হয় একই কলেজের আলমগীরের সাথে। এরপর শুরু হয় প্রেমের সম্পর্ক। প্রেমের এক পর্যায়ে রংপুর পার্কের মোড় এলাকায় পড়াশোনা সুবাদে দুজনেই থাকতে শুরু করেন। প্রেমিক আলমগীর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রেশমিকে রংপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
একপর্যায়ে প্রেমিক আলমগীর হোসেন কয়েক দিন ধরে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়ায় রেশমি আক্তার প্রেমিক আলমগীরের বাড়িতে গত ২৪ জুলাই গিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন। আলমগীরের পরিবারের লোকজন রেশমীকে মারধর করে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় এবং দুইজনের বিশেষ ছবি ও ভিডিও ডিলিট করে দেন। এরপর থেকে প্রেমিক আলমগীর হোসেন পলাতক রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে কয়েকবার বৈঠক করলেও তা ব্যর্থ হয়। পরে হাতীবান্ধা থানা পুলিশ প্রেমিকা রেশমিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
প্রেমিকা রেশমি আক্তার বলেন, আলমগীরে সাথে আমার পাঁচ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক। আমি তার বাড়িতে এসেছি তাকেই বিয়ে করব আর যদি বের হতে হয় তাহলে আমার লাশ বের হবে। আলমগীর আমাকে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে রংপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে আমার সাথে দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। তাকে বিয়ে করার চাপ দিলে সে গা ঢাকা দেয়।
এক পর্যায়ে আমি নিরুপায় হয়ে গত ২৪ জুলাই বিয়ের দাবীতে তার বাড়িতে উঠি। তার পরিবারের লোকজন আমাকে মারধর করেছে আমার ফোন কেড়ে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছবি ডিলিট করে দিয়েছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি।
এ ঘটনায় প্রেমিক আলমগীর হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সানিজান ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মানিক মিয়া বলেন, মেয়েটির ছেলের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন করলে বিষয়টি নিয়ে সমাধান চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই।
এ বিষয়ে সানিয়াজান ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসেম তালুকদার বলেন, এ ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে সমাধানের চেষ্টা চলছে।
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার ৫ দিন পরে আমরা ওই কলেজ ছাত্রীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। ওই কলেজ ছাত্রীর অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
প্রতিনিধি/একে