শিরোনাম
◈ মাঠের রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়, অনলাইনেই সংগঠিত হতে চাচ্ছে আওয়ামী লীগ ◈ রাশিয়ায় কাজের প্রলোভনে নিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠানো হচ্ছে বাংলাদেশিদের (ভিডিও) ◈ মেঘনা নদীর নৌ সীমানায় ডাকাতদলের গোলাগুলি, নিহত ২ ◈ অন্তর্বর্তী সরকারের আসন্ন দিনগুলোয় চ্যালেঞ্জ আরো বাড়বে ◈ আবারও বাড়লো ডলারের দাম ◈ বাংলাদেশসহ তিন দেশে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধ করতে যাচ্ছে সুইজারল্যান্ড ◈ ওসিকে পেটানোর হুমকি, সন্ত্রাসী সাজ্জাদকে ধরিয়ে দিলেই পুরস্কার ◈ বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মুসলিম দেশ কোনটি? জেনে নিন এমন ১০টি দেশ সম্পর্কে ◈ দেখা গেছে শাবান মাসের চাঁদ, আরব আমিরাতে রোজা হবে ৩০টি ◈ ‘যে ৪ শর্তে ফিরতে পারবে আ.লীগ’

প্রকাশিত : ২৮ জুলাই, ২০২৪, ০৭:০৩ বিকাল
আপডেট : ১২ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৫:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভাইকে আনতে গিয়ে গুলিতে চিকিৎসকের মৃত্যু, উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে বিপাকে অসুস্থ মা

আজিজুল ইসলাম, রায়পুরা (নরসিংদী): [২] কোটাসংস্কার আন্দোলন চলাকালে মাদরাসা পড়ুয়া ভাইকে আনতে গিয়ে ঢাকার আজমপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে গত ১৯ জুলাই নিহত হন রায়পুরার বাসিন্দা চিকিৎসক সজিব সরকার (৩০)। ওইদিন রাতেই উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে স্বজনরা নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে। পরদিন তাঁর মরদেহ নিজ এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। ঘটনার সপ্তাহ পেরোলেও থামেনি স্বজনদের শোক-আহাজারি। উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন সজিবের মৃত্যুতে এখন অথৈ সাগরে ভাসছে পুরো পরিবার।

[৩] নিহত সজিব নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের মেঝেরকান্দি গ্রামের মো হালিম সরকারের ছেলে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজের ল্যাকচারার ছিলেন। বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের সেবা দিতেন। তিন ভাই এক বোনের মাঝে সবার বড় ছিলেন সজিব।  

[৪] রোববার নরসিংদীর ভেলানগরে ভাড়া বাসায় গিয়ে দেখা যায়, ছেলেকে হারিয়ে মা ঝর্ণা বেগম (৫৬) এখন অসুস্থ হয়ে অক্সিজেন নিচ্ছে। ছেলের স্মৃতিচারণ করে বিলাপ করে বারবার মুরছা যাচ্ছেন।

[৫] সজিবের বোন সুমাইয়া সরকার বলেন, গত ১৯ জুলাই দুপুরে ঢাকার উত্তরার রাজলক্ষ্মী দারুলউলুম মাদরাসায় পড়ুয়া ছোট ভাই আব্দুল্লাহকে আনতে নরসিংদীর বাসা থেকে বের হন। তুমুল আন্দোলনের সময় আজিমপুরে বাস থামে। বিকেল ৫-৬ মধ্যে আজমপুর বাস থেকে নেমে রাজলক্ষ্মী যাওয়ার উদ্দেশ্যে রাস্তার পাশ ধরে হাঁটতে থাকে। এ সময় পুলিশের ছুঁড়া গুলিতে নিহত হন। সন্ধ্যা ৭ টায় ভাইয়ের বন্ধুর মাধ্যমে খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিয়ে আসি। জানতে পারি বিকেলে আজমপুরের রাস্তা থেকে কয়েকজন লোক গুলিবিদ্ধ ভাইকে হাসপাতালে আনে। 

[৬] নিহতের ভাই আব্দুল্লাহ বলেন, এর আগের সপ্তাহে ভাই মাদরাসায় আসে। ওই সময় তার সাথে সর্বশেষ দেখা হয় এবং বলে ১৯ তারিখ বৃহস্পতিবার মাদরাসা ছুটি হলে এসে আমাকে নিয়ে যাবে। ওই দিন বিকেলে তিন বার ভাইকে ফোন দিয়ে না পেয়ে ব্যাগ নিয়ে ভাইয়ের অপেক্ষায় বসে থাকি। রাত নয়টায় হাসপাতালে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই। 

[৭] চিকিৎসকের বাবা হালিম সরকার বলেন, ছেলেকে খুব কষ্ট করে ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত পড়াশোনা করাই। ২০২০ সালে টঙ্গীর বেসরকারি তাইরুন্নেছা মেমোরিয়াল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসক হন। তাকে চিকিৎসক বানাতে গিয়ে দিতে হয়েছে সর্বত্র, ঋণে জর্জরিত। ইদানীং সে ঋণগ্রস্ত পরিবারের হাল ধরেন। তার উপার্জনে অসুস্থ মা'র চিকিৎসা ও ভাই বোনের পড়াশোনা এবং সংসার চলতো এবং দেয়া হতো ঋণ। সকলে তাকে ঘিরে কতইনা স্বপ্ন বুনেছিলাম। তার কি অপরাধ ছিল যে সে গুলিতে নিহত হলো। কার কাছে চাইব বিচার? কে করবে বিচার, কে দিবে ক্ষতিপূরণ? যা সহায় সম্বল কামাই ছিলো সব ছেলে ডাক্তার বানাতে ব্যায় করেছি। ছেলে আমার ছায়া ছিলো, এখন আমার সব শেষ। আমি আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। ছেলে খুব ধার্মিক ছিলেন। খুব কষ্ট করে ছেলেকে চিকিৎসক দেশের সেবক বানিয়েছি। রাষ্ট্র আমাকে দিল মরদেহ। ছেলেকে তো আর ফিরে পাবোনা, রাষ্ট্র যদি তদন্ত করে ছেলে হত্যার বিচারটা করে, তাইলেই তার আত্মা ও আমরা শান্তি পাবো।' সম্পাদনা: এ আর শাকিল
 
প্রতিনিধি/এআরএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়