হুমায়ুন কবির, খোকসা (কুষ্টিয়া): [২] কুষ্টিয়া খোকসা উপজেলায় চলতিছর লক্ষ্যমাত্রা থেকেও ৫৫ হেক্টর জমিতে বেশি পরিমাণ পাট আবাদ করেছে কৃষকরা । উপজেলার ২ হাজার ২৫০ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে পাট বীজ বিতরণ করায় ৪ হাজার ১'শ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকেও ৫৫ হেক্টর জমি বেশি।
[৩] জলবায়ু পরিবর্তন ও আষাঢ় শ্রাবণ মাসে অনাবৃষ্টির কারণে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার পাট চাষীরা বিপাকে পড়েছে। খালে বিলে পানি না থাকায় কৃষকের পাট যেন গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরই মাঝে কৃষকরা ৪০ শতাংশ পাট মাঠ থেকে কর্তন করেছে বলে জানা গেছে।
[৪] কাঙ্খিত বৃষ্টি না হওয়ায় উপজেলার ৮ হাজার কৃষকরা জমি থেকে পাট কাটতে পারছে না। ফলে জমিতেই পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছরে আষাঢ় শ্রাবণ মাসে পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ায় জমি থেকে পাট কেটে কৃষকরা জমিতে আবার ধান আবাদ করে। এ বছর শ্রাবনের মাঝামাঝিতে বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকরা পাট চাষ করে বিপাকে পড়েছে। এ যেন কৃষকের উৎপাদিত পাঠ গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অধিকাংশ খাল, বিল, নদীনালা ও ডোবাতে পানি না থাকায় পাট চাষীদের পাট যেন এখন গলায় ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে।
[৫] এদিকে স্থানীয় কুমারখালী আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মামুনুর রহমান জানিয়েছেন, জুলাই মাসে ২৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯০ শতাংশ। সাধারণত আষাঢ় শ্রাবণ মাসে বর্ষা মৌসুম হাওয়ায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ দ্বিগুণ থেকে চারগুণ বৃদ্ধি হওয়ার কথা ছিল কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন ও সময় মতো পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় স্থানীয় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।
[৬] অপরদিকে কৃষক ষষ্ঠী চরণ বিশ্বাস ও শ্যামল কুমার বিশ্বাস বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় কারণে জমি থেকে পাট কাটতে পারছি না । এমনকি পাট কাটলেও জাগ দেওয়ার আর কোন জায়গা না থাকায় রাস্তার ধারে বা জমির কোলে ফেলে রেখে দিয়েছে ।
[৭] খোকসার বিশিষ্ট পাট ব্যবসায়ী অজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার পাটের মূল্য অনেক বেশি। এভাবে পাটের বাজার থাকলে কৃষকরা লাভবান হবেন। বর্তমানে বাজারে এক মণ পাট ২ হাজার ৬'শ থেকে ৩ হাজার ২'শ টাকা পর্যন্ত বেচাকেনা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে দেখা গেছে কাঙ্খিত বৃষ্টি ও পানি না থাকায় পাট (জাগ দেওয়া) পঁচানোর সমস্যায় পড়েছে কৃষকরা।
[৮] উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সবুজ কুমার সাহা বলেন, পাট চাষীদের জন্য পাট কাটা ও জাগ দেওয়া পচানো নির্ধারিত সময় আষাঢ় শ্রাবণ মাস। এ সময়ের মধ্যে বৃষ্টি না হলে কৃষকদের অনেকটাই শঙ্কাই পড়তে হয়। তবে এবার পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। আমাদের উপ কৃষি কর্মকর্তাগন কৃষকদের আধুনিক রিপন রেটিং পদ্ধতিতে পাটযাক ও পচানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। সম্পাদনা: এ আর শাকিল
প্রতিনিধি/এআরএস
আপনার মতামত লিখুন :